IND vs ZIM: হারারেতে সিরিজের চতুর্থ টি-২০তে আজ মুখোমুখি ভারত ও জিম্বাবুয়ে (IND vs ZIM)। গত ৬ জুলাই প্রথম ম্যাচটিতে জিতে এগিয়ে গিয়েছিলো শেভ্রনরা। পিছিয়ে পড়েও এরপর দারুণভাবে ঘুরে দাঁড়ায় টিম ইন্ডিয়া (Team India)। ৭ ও ১০ তারিখের দুটি ম্যাচে টানা জয় ছিনিয়ে নিয়ে এগিয়ে যায় ২-১ ফলে। আজকের চতুর্থ ম্যাচটি তাই গুরুত্বপূর্ণ দুই শিবিরের কাছেই। যদি আজ ভারত জিততে পারে তাহলে ৩-১ এগিয়ে গিয়ে সিরিজ মুঠোবন্দী করে নিতে পারবে তারা। আর ঘরের মাঠে ‘অনভিজ্ঞ’ টিম ইন্ডিয়ার বিরুদ্ধে সিরিজ জয়ের স্বাদ পেতে হলে আজ জয় ছাড়া উপায় নেই জিম্বাবুয়ের। সিকান্দার রাজা’র (Sikandar Raza) দলও তাই সর্বস্ব পণ করেই ঝাঁপিয়েছে মাঠে। দুই দলের দ্বৈরথে আজও টসভাগ্য সুপ্রসন্ন হয় ভারতেরই। টানা চতুর্থ ম্যাচে টস জিতলেন অধিনায়ক শুভমান গিল (Shubman Gill)।
এর আগের ম্যাচগুলিতে প্রথম ব্যাটিং করা দল ছিনিয়ে নিয়েছিলো জয়। আজ টস জেতার পরেও ঝুঁকিপূর্ণ রাস্তায় হাঁটে ভারত। প্রথমে বোলিং-এর সিদ্ধান্ত নেয় তারা। ওয়েসলে মাধেবেরে (Wessley Madhevere) ও তাদিওয়ানাশে মারুমানির (Tadinawanashe Marumani) ওপেনিং জুটি ভরসা যুগিয়েছিলো শেভ্রনদের। প্রথম উইকেট তুলতে ভারতকে অপেক্ষা করতে হয় নবম ওভার অবধি। ব্রায়ান বেনেট আজ রান না পেলেও জিম্বাবুয়ে লড়াই জারি রাখে অধিনায়ক সিকান্দার রাজা’র (Sikandar Raza) ব্যাটে। অর্ধশতরান হাতছাড়া করলেও লাল-হলুদ জার্সিধারীদের লড়াইয়ের ভিত প্রস্তুত করে দেন পাক বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার। লোয়ার অর্ডার বিশেষ কার্যকরী হতে না পারলেও ২০ ওভারে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ১৫২ রান স্কোরবোর্ডে তুললো জিম্বাবুয়ে।
Read More: “এদের দ্বারা হবে না…” জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে ফিল্ডিং ব্যর্থতার পপির সমাজ মাধ্যমে ট্রোলের শিকার টিম ইন্ডিয়া !!
ওপেনিং জুটিতে উঠলো ৬৩ রান-
ভারতের জন্য বড় রানের লক্ষ্য স্থির করার পরিকল্পনা নিয়েই মাঠে নেমেছিলো জিম্বাবুয়ে। তুষার-খলিলদের বিরুদ্ধে গুটিয়ে না থেকে আক্রমণাত্মক রণনীতি গ্রহণ করতে দেখা গেলো দুই ওপেনার ওয়েসলি মাধেবেরে (Wessley Madhevere) ও তাদিনাওয়াশে মারুমানি’কে। প্রথম ওভারে আসে একটি বাউন্ডারি। দ্বিতীয় ওভারে তুষার দেশপাণ্ডের বিরুদ্ধে একাধিকবার বড় শট মারতে দেখা যায় ব্যাটারদের। আবেশ খান ছিলেন না আজ। ভারতের পেস আক্রমণের বিরুদ্ধে সাবলীল’ই দেখাচ্ছিলো দুই ওপেনারকে। ৭ বা ৮-এর কাছাকাছি রান রেট বজায় রেখেছিলেন তাঁরা। অবশেষে ভাঙন ধরান অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma)। দ্বিতীয় টি-২০তে শতরান করেছিলেন পাঞ্জাবের বাম হাতি ব্যাটার। আজ স্পিন বোলিং-এ উইকেট তুলে নিলেন তিনি। ৩২ করে আউট হন মারুমানি।
৬৩ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে গিয়েছিলো জিম্বাবুয়ে। এর কিছুক্ষণের মধ্যেই দ্বিতীয় উইকেট আসে শিবম দুবের (Shivam Dube) হাত ধরে। ব্যক্তিগত ২৫ রানের মাথায় রিঙ্কু সিং-এর (Rinku Singh) হাতে ক্যাচ দিয়ে বসেন ওয়েসলি মাধেবেরে (Wessley Madhevere)। চলতি ভারত বনাম জিম্বাবুয়ে (IND vs ZIM) সিরিজে শেভ্রনদের সবচেয়ে ধারাবাহিক ব্যাটার নিঃসন্দেহে মাধেবেরে। তিনি ফিরতে জোর ধাক্কা খেয়েছিলো হোম টিম। আজ রান পান নি তরুণ প্রতিভা ব্রায়ান বেনেট’ও (Brian Benett)। তিন নম্বরে নেমে বছর ২০’র অলরাউন্ডার আউট হলেন ৯ রান করেই। ব্যাকফুটে চলে যাওয়া দলের দায়িত্ব এবার নিজের কাঁধে তুলে নেন অধিনায়ক সিকান্দার রাজা।
অধিনায়কোচিত ইনিংস রাজা’র-
৬৭ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারিয়েছিলো জিম্বাবুয়ে। এরপর ইনিংসকে টেনে নিয়ে গেলেন সিকান্দার রাজা’ই (Sikandar Raza)। ৩৮ বছর বয়সেও তিনিই যে শেভ্রনদের এক নম্বর ক্রিকেটার তা প্রমাণ করে দিলেন পাক বংশোদ্ভূত অলরাউন্ডার। অপর প্রান্তে যখন একের পর এক উইকেট পড়ছে, তখনও আক্রমণ থেকে সরে আসেন নি অধিনায়ক। দলের স্কোরবোর্ডকে যতটা সম্ভব এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছেন নিরন্তর। নেমেছিলেন ৪ নম্বরে ব্যাট করতে। ভারতীয় বোলিং-এর বিরুদ্ধে ঢাল হয়ে দাঁড়াতে দেখা গেলো তাঁকে। ১৯তম ওভারের তৃতীয় ডেলিভারিতে যখন কভারে শুভমান গিলের (Shubman Gill) হাতে ধরা পড়েন তিনি, তখন তাঁর নামের পাশে ৪৬ রান। ২৮ বলের ইনিংস তিনি সাজিয়েছেন ২টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে। অভিষেক টি-২০তে প্রতিপক্ষ অধিনায়ককে ফেরান তুষার দেশপাণ্ডে।
জিম্বাবুয়ের লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিং দুর্দশা প্রকট হলো আজও। জোনাথন ক্যাম্পবেল (Jonathan Campbell) করেন ৩। ডিওন মায়ার্সের সংগ্রহ ১২। গত ম্যাচে রান পেলেও আজ উইকেটরক্ষক ক্লাইভ মাডান্ডে করেন মাত্র ৭। ফরাজ আক্রম নট-আউট থাকেন ৪ রান করে। টিম ইন্ডিয়ার (Team India) হয়ে আজ সফলতম বোলার খলিল আহমেদ। ৪ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৩২ রান খরচ করে তিনি তুলে নিয়েছেন ২টি উইকেট। তুষার দেশপাণ্ডে (Tushar Deshpande), ওয়াশিংটন সুন্দর, অভিষেক শর্মা ও শিবম দুবে পেয়েছেন ১টি করে উইকেট। ৪ ওভারে মাত্র ২২ রান খরচ করলেও উইকেটশূন্য থাকতে হয়েছে রবি বিষ্ণোই’কে। ১৫৩’র লক্ষ্য খাতায়-কলমে বিশাল কিছু নয়। তবে সিরিজ হাতের মুঠোয় করতে হলে প্রথম টি-২০ থেকে শিক্ষা নিয়ে ব্যাটিং করতে হবে ভারতকে।