IND vs NZ: ওয়েলিংটনে বৃষ্টিতে ম্যাচ ভেস্তে যাওয়ার পর মাউন্ট মাঙ্গানুইয়াতে এসেছিলো জয়। সিরিজের তৃতীয় টি-২০ ম্যাচ খেলতে ভারত এসেছিলো নেপিয়ারে। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে যন্ত্রণার হার ভুলতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ জেতা অত্যন্ত জরুরী ভারতীয় দলের কাছে। রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের মত সিনিয়রদের অবর্তমানে অগ্নিপরীক্ষা অস্থায়ী অধিনায়ক হার্দিক পান্ডিয়ার কাছেও। একদম তরুণ’কে সাথে নিয়ে মাঠে নামতে হয়েছিলো তাঁকে। গত ম্যাচে সূর্যকুমার যাদবের দুর্দান্ত শতরান আর দীপক হুডা’র দুরন্ত বোলিং-এ ভর দিয়ে ম্যাচ পকেটে পুরে নিয়েছিলো ভারতীয় দল। অন্যদিনে নিজেদের ঘরে মাঠে পিছিয়ে পড়েছে নিউজিল্যান্ড। শারীরিক কারণে ছিটকে গিয়েছিলেনন তাদের অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। সিরিজে হার বাঁচাতে মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়েছিলেন ডেভন কনওয়ে, টিম সাউদী’রা। নেপিয়ারে হাড্ডাহাড্ডি ম্যাচে আগে টসে জিতে ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কিউই দলের আজকের অধিনায়ক টিম সাউদী। ডেভন কনওয়ে এবং গ্লেন ফিলিপসের জোড়া অর্ধশতকের দাপটে ১৬০ রান করে কিউই’রা। জবাবে ভারত যখন ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৭৫, তখন নামে বৃষ্টি। ডাকওয়ার্থ ল্যুইস নিয়মে পার স্কোর হওয়ার কথা ছিলো ৭৫, আর ভারত কিনা ছিলো ৭৫ এই। আজকের ম্যাচ টাই ঘোষিত হওয়ায় সিরিজ ঢুকলো ভারতের পকেটে।
নেপিয়ারে রাজ সিরাজের,সঙ্গ দিলেন অর্শদীপ-
জসপ্রীত বুমরাহ চোটের কারণে বাইরে বেশ কিছু দিন। নিউজিল্যান্ড সফরে নেই মহম্মদ শামি’ও। তবু তাঁদের অভাব বুঝতে দিলেন না ভারতের রতুণ ফাস্ট বোলার’রা। আজ অভিজ্ঞ ভুবনেশ্বর কুমারের(Bhuvneshwar Kumar) দিন ভালো যায় নি। ৪ ওভারে দিলেন ৩৫ রান, কিন্তু তা সত্ত্বেও ভারতের দুই তরুণ পেসারের দাপটে ১৬০ রানের বেশী করতে পারে নি কিউই দল। টসে জিতে আজ ব্যাটিং-এর সিদ্ধান্ত নেন নিউজিল্যান্ডের অধিনায়ক টিম সাউদী(Tim Southee)। বৃষ্টির সম্ভাবনা ছিলো। তাই স্কোরবোর্ডে বড় রান তুলে রাখতে চেয়েছিলো ‘ব্ল্যাক ক্যাপস’রা। তবে শুরুতেই ঝটকা দেন অর্শদীপ সিং(Arshdeep Singh)। লেগ বিফোর উইকেট করেন ওপেনার ফিন অ্যালেন’কে। যত দিন যাচ্ছে আরও পরিণত হয়ে উঠছেন পাঞ্জাবের ২৩ বর্ষীয় পেসার। অ্যালেনের পর ডেভন কনওয়ে, ড্যারিল মিচেল এবং ঈশ সোধিকে আউট করেন তিনি। ৩৭ রান দিয়ে আজ নিলেন ৪ উইকেট। তবে নেপিয়ারের পিচে রাজ করলেন হায়দ্রাবাদের পেসার সিরাজ(Mohammed Siraj। বুঝিয়ে দিলেন টেস্টের পাশাপাশি টি-২০তেও একজন কার্যকরী বিকল্প হতে পারেন তিনি। দুত গতিতে রান তুলে কিউইদের বড় রানের দিকে নিয়ে যাচ্ছিলেন ড্যারিল মিচেল। তাঁকে থামিয়ে দেন সিরাজ। এছাড়াও চাপম্যান, জিমি নীশম, মিচেল স্যান্টনার, কাউকেই ব্যাট হাতে সফল হতে দেন নি তিনি। মাত্র ১৭ রানের বিনিময়ে চার উইকেট নিলেন হায়দ্রাবাদী পেসার। ড্যারিল মিচেলের ৩৩ বলে ৫৪ ছাড়াও রান পেয়েছেন ডেভন কনওয়ে। তিনি ৪৯ বলে ৫৯ রান করেন। সিরাজ-অর্শদীপের দাপটে ১৬০ রানে থেমে যায় কিউই ইনিংস।
রাখে বৃষ্টি, মারে কে? DLS-কে মাত দিয়ে সিরিজ ভারতের-
আজ ভারতের ব্যাটিং শুরুর দিকে বিশেষ সুবিধা করতে পারে নি। ওপেনার বদলায়, কিন্তু একই থাকে ভারতের ওপেনিং ব্যর্থতা। বিশ্বকাপে কে এল রাহুল, রোহিত শর্মা চূড়ান্ত ব্যর্থ হওয়ার পর নিউজিল্যান্ডে মনে করা হয়েছিলো ঈশান কিষান, ঋষভ পন্থের জুটি আশার আলো দেখাবে। কিন্তু নাহ! দুই ম্যাচের দুটিতেই চূড়ান্ত ব্যর্থ দুই উইকেটরক্ষকের ব্যাটিং পার্টনারশিপ। আজ শুরুতে মিলনের বাউন্সারে পুল মারতে গিয়ে কাঁধে আঘাত পান কিষণ। তারপর বেশীক্ষণ টেকেন নি তিনি। অ্যাডাম মিলনের বলেই চাপম্যানের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হয়ে যান ১০ রান করে। খারাপ শট খেলে আউট হওয়ার প্রবণতা গেলো না ঋষভের’ও। দুটো বাউন্ডারি মেরে দিব্যি এগোচ্ছিলেন। তিম সাউদী’কে অহেতুক আপার কাট মারতে গিয়ে থার্ড ম্যানে ঈশ সোধি’র হাতে ক্যাচ দিলেন তিনি। ব্যর্থ ওপেনার পন্থ’কে এখনও দল টি-২০ তে খেলিয়ে যায় কিনা তাই দেখার। আজ করলেন ৫ বলে ১১। চারে নেমেছিলেন আগের ম্যাচে হিট উইকেট হওয়া শ্রেয়স। প্রথম বলে’ই হলেন সাউদীর শিকার। যাঁকে নিয়ে সবচেয়ে বেশী ভরসা ছিলো সেই সূর্যকুমার’ও আজ চললেন না বিশেষ। গত মায়চের ৫১ বলে ১১১’র পর আজ করলেন ১০ বলে ১৩। ৬০ রানের মধ্যে ৪ উইকেট পড়ে যাওয়ার একটু চাপে পড়ে যায় ভারতীয় দল। ক্রিজে হার্দিক পান্ডিয়া ছিলেন। বেশ ভালোই খেলছিলেন তিনি। কিন্তু দ্রুত ব্যাটিং ফুরিয়ে আসায় চিন্তা উঁকি দিচ্ছিলো সমর্থকদের মনে। ভারত বনাম নিউজিল্যান্ড আর নাটকীয়তা থাকবে না? তা কি হয়? নবম ওভার শেষ হতেই আকাশ ভেঙে নামলো বৃষ্টি। ডাকওয়ার্থ ল্যুইসের জটিল হিসেবনিকেশের শেষে জানা যায় নয় ওভারের শেষে পার স্কোর হওয়ার কথা ৭৫। ঠিক সেই স্কোরেই দাঁড়িয়ে ছিলো ভারতের ইনিংস। ম্যাচ ‘টাই’ ঘোষণা হওয়ায় মাউন্ট মাউঙ্গানুয়ার ম্যাচ জেতার সুবাদে ১-০ সিরিজ জিতলো ‘টিম ইন্ডিয়া।’ বিশ্বকাপের যন্ত্রণার হলো খানিক উপশম ।