IND vs ENG: হায়দ্রাবাদের রাজীব গান্ধী আন্তর্জাতিক স্টেডিয়ামে চলছে ভারত বনাম ইংল্যান্ড (IND vs ENG) সিরিজের প্রথম টেস্ট ম্যাচ। প্রথম দুই দিন দাপট ছিলো স্বাগতিক দেশের। অশ্বিন-জাদেজা-বুমরাহদের সৌজন্যে ইংল্যান্ডকে ২৪৬ রানেই গুটিয়ে দেওয়ার পর ব্যাট হাতে সহজেই প্রতিপক্ষের রান পেরিয়ে গিয়েছিলো রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) দল। যশস্বী জয়সওয়াল, রবীন্দ্র জাদেজা, কে এল রাহুলদের চমৎকার ইনিংস ১৯০ রানের লিড এনে দিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়াকে। তৃতীয় দিনের সকালে ভারতের ইনিংস শেষ হওয়ার পর থেকে লড়াইতে ফেরে ইংল্যান্ড। নিজেদের ‘বাজবল’ অবতারে কোনো বদল ঘটায় নি তারা। মারমুখী ছিলেন দুই ওপেনার জ্যাক ক্রলি (Jack Crawley), বেন ডাকেট। তাঁরা ফেরার পর খানিক চাপে পড়লেও সামাল দেন অলি পোপ। তাঁর ব্যাটেই ‘মেন ইন ব্লু’র দিকে রীতিমত চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেয় বেন স্টোকসের (Ben Stokes) দল।
গতকাল অর্থাৎ ম্যাচের তৃতীয় দিন পোপ’কে (Ollie Pope) আউট করার কৌশল খুঁজেই কাটলো টিম ইন্ডিয়ার (Team India) বোলারদের। বুমরাহ, সিরাজের পেস আক্রমণ থেকে অশ্বিন, জাদেজা, অক্ষর স্পিন ত্রয়ীর ঘূর্ণির ফাঁস, কিছুই বাধা হয়ে দাঁড়ালো না ইংল্যান্ড ব্যাটারের সামনে। প্রথমে উইকেটরক্ষক বেন ফোকস ও পরে স্পিনার রেহান আহমেদ’কে নিয়ে প্রাচীর হয়ে দাঁড়ান তিনি। দিনের শেষে অপরাজিত ছিলেন ১৪৮ রানে। ব্যাট-বলের জমজমাট লড়াইয়ের মাঝেমাঝে গতকাল ধারাভাষ্যের বক্সেও দেখা গেলো রেষারেষি। ‘স্যুইচ হিট’ নিয়ে রীতিমত বিতর্কে জড়ালেন ইংল্যান্ডের কিংবদন্তি ক্রিকেটার কেভিন পিটারসেন (Kevin Pietersen) এবং ভারতের জনপ্রিয় ক্রিকেট বিশ্লেষক হর্ষ ভোগলে (Harsha Bhogle)। মাইক হাতে কথার যুদ্ধের রেশ গড়ালো সোশ্যাল মিডিয়াতেও।
Read More: ৪২০ রানে সমাপ্ত হলো ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংস, প্রথম টেস্ট জিততে ভারতের প্রয়োজন ২৩১ রান !!
হর্ষ-পিটারসেন দ্বন্দ্ব উত্তেজনা বাড়ালো টেস্টের-
‘ভয়েজ অফ ক্রিকেট’ বলা হয় হর্ষ ভোগলে’কে (Harsha Bhogle)। বিশ্ববরেণ্য ক্রিকেট বিশ্লেষক রয়েছেন ভারত বনাম ইংল্যান্ড সিরিজের সম্প্রচারকারী সংস্থা জিও সিনেমার কমেন্ট্রি প্যানেলে। রয়েছেন ইংল্যান্ডের প্রাক্তন ক্রিকেটার এবং ২০১২ সালে ভারতে টেস্ট সিরিজ জয়ী দলের সদস্য কেভিন পিটারসেন’ও (Kevin Pietersen)। গতকাল দুপুরে একই সাথে দুজন ছিলেন কমেন্ট্রি বক্সে। ধারাভাষ্য দেওয়ার সময়েই লাগলো নারদ-নারদ। কথা হচ্ছিলো ক্রিকেটীয় শিষ্টতা নিয়ে। হর্ষ ভোগলে জানান কোনো বোলার যদি ডান হাত দিয়ে বোলিং করার পর চান বাঁ-হাত দিয়ে বোলিং করতে, তাহলে তাঁকে আম্পায়ারকে আগে থেকে জানাতে হয়। ব্যাটারদের স্যুইচ হিট খেলার জন্যও এহেন নিয়ম থাকা উচিৎ বলে জানান তিনি। না হলে ব্যাট ও বলের ভারসাম্য রক্ষিত হয় না বলেও মনে করেন তিনি।
ক্রিকেট মাঠে ‘স্যুইচ হিট’ মাঠের আবিষ্কর্তা মনে করা হয় কেভিন পিটারসেনকেই (Kevin Pietersen)। হর্ষের মন্তব্য মোটেই পছন্দ হয় নি তাঁর। তিনি বলেন, “স্থানীয় সময় এখন ৩টে ২৫ বাজে। আমি নীচে চললাম, কারণ তুমি বাজে বকছো।“ পরে পিটারসেনের মন্তব্য এক নেটিজেনে এক্স হ্যান্ডেলে (পূর্বতন ট্যুইটার) পোস্ট করলে তা রিট্যুইট করে ইংল্যান্ড প্রাক্তনী লেখেন, “সত্যিই ও (হর্ষ) তাই করছিলো।” এরপর প্রতিক্রিয়া দেন হর্ষ ভোগলেও। মনক্ষুণ্ণ হন নি তিনি। বরং সাদরে গ্রহণ করেছেন পিটারসেনের মন্তব্য। তিনি লেখেন, “পুরোপুরি অর্থহীন। যদি স্যুইচ হিট মারতে চাও, তাহলে বোলারকে দুই হাতে বোলিং করার অনুমতিও দেওয়া উচিৎ। কোনো কিছু কঠিন হলেই যে সেটা গ্রহণযোগ্য সেটা হতে পারে না। বাঁ-হাতে বল করার আগে বোলারকে তা জানাতে হয় আম্পায়ারকে। ব্যাটসম্যানের জন্যও শর্ত একই থাকা উচিৎ। বিতর্ক চলতে থাকুক।”
দেখে নিন হর্ষের ট্যুইট’টি-
Absolute nonsense! 😄 😄. If you want to switch hit allow a bowler to bowl with both hands. Because something is difficult, it doesn’t make it acceptable. The bowler has to inform the umpire if he wants to bowl left handed, the batsman must have the same condition. May the debate… https://t.co/JcXTJRdQhe
— Harsha Bhogle (@bhogleharsha) January 27, 2024
জয়ের জন্য ভারতের চাই ২৩১ রান-
গতকাল ৩১৬ রান ছিলো ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে। অপরাজিত ছিলেন অলি পোপ (Ollie Pope) ও রেহান আহমেদ (Rehan Ahmed)। আজ সকালেই জসপ্রীত বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) বলে রেহান আহমেদ ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক কে এস ভরতের দস্তানায়। দ্রুত প্রতিপক্ষকে গুটিয়ে দেওয়ার সংকল্প নিয়ে আক্রমণের জোর বাড়ায় ভারতীয় দল। কিন্তু রুখে দাঁড়ান সেই অলি পোপ (Ollie Pope)। সঙ্গী হিসেবে পান হায়দ্রাবাদে টেস্ট অভিষেক হওয়া টম হার্টলিকে। বল হাতে সফল হন নি হার্টলি (Tom Hartley), কিন্তু ব্যাট হাতে করলেন লড়াকু ৩৪ রান। পোপের সাথে জুটিতে ৮০ রান যোগ করেন তিনি। শেষমেশ অশ্বিনের বলে উইকেট হারান তরুণ ক্রিকেটার।
হার্টলি ও পোপের জুটি ভাঙার পর একা কুম্ভ হয়ে লড়াই চালিয়ে গেলেন পোপ’ই। মার্ক উড ফেরেন শূন্য রান করে। দুর্দান্ত দ্বিশতকের দিকে এগোচ্ছিলেন পোপ। কিন্তু ১৯৬ রানের মাথায় জসপ্রীত বুমরাহ’র বলে বোল্ড হন তিনি। ৪২০ রান করে ইনিংসে ইতি টানে ইংল্যান্ড। প্রথম ইনিংসের ১৯০ রানের লিডের সুবাদে জয়ের জন্য ভারতের প্রয়োজন ২৩১ রান। চতুর্থ ও পঞ্চম দিনের হায়দ্রাবাদের পিচে এই রান তোলাও কঠিন হতে পারে টিম ইন্ডিয়ার (Team India) সামনে। ইতিমধ্যেই মধ্যাহ্নভোজের বিরতির পর মাঠে নেমেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ প্রতিবেদন লেখার সময় অবধি কোনো উইকেট হারায় নি তারা। যশস্বী জয়সওয়াল ও রোহিত শর্মা স্কোরবোর্ডে যোগ করেছেন ২৫রান।