CT 2025: টি-২০ বিশ্বকাপ শেষ হয়েছে গত জুন মাসে। বর্তমানে ক্রিকেটজনতার ফোকাসে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025)। পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটের এই টুর্নামেন্ট আয়োজন করার কথা পাকিস্তানের। প্রায় তিন দশক পর কোনো বড় মাপের প্রতিযোগিতা আয়োজনের ছাড়পত্র পেয়েছে পিসিবি। প্রস্তুতিতে কোন ফাঁক রাখতে রাজী নয় তারা। ইতিমধ্যেই ১২৬০ কোটি টাকা আয়োজনের বাজেট ধরা হয়েছে। সম্ভাব্য গ্রুপ বিন্যাস থেকে খসড়া সূচি, টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) চলাকালীনই আইসিসি’র কাছে জমা করে দিয়েছেন পাক বোর্ডের প্রধান মহসীন নকভি। আট দলের টুর্নামেন্টে থাকছে ১৫টি ম্যাচ। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি আয়োজন করার অনুমতি চেয়েছে পিসিবি। মাঠ সংস্কার, পরিকাঠামো উন্নতির মত কাজ মসৃণ গতিতে চললেও তাদের ধাক্কা খেতে হয়েছে ভারত পড়শি দেশে পা দিতে বেঁকে বসায়।
Read More: অফ ফর্মের কাঁটায় বিদ্ধ শুভমান গিল, বাদ পড়ছেন বাংলাদেশ সিরিজ থেকে !!
ভারতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা পাকিস্তানের-
গত বছরের এশিয়া কাপ’ও (Asia Cup) আয়োজিত হওয়ার কথা ছিলো পাকিস্তানের মাটিতে। কিন্তু ক্রিকেটারদের নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন তুলে যেতে সম্মত হয় নি টিম ইন্ডিয়া (Team India)। তারা কোনো নিরপেক্ষ ভেন্যুতে টুর্নামেন্ট সরিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ সৃষ্টি করেছিলো এসিসি’র উপর। শেষমেশ তৎকালীন পিসিবি প্রধান নাজম শেঠির (Najam Sethi) হস্তক্ষেপে এক হাইব্রিড মডেল চূড়ান্ত হয়। ৪টি ম্যাচ আয়োজিত হয় পাকিস্তানে। ভারতের সবক’টি খেলা ও নক-আউট পর্ব মিলিয়ে মোট ৯টি ম্যাচ সরে আসে শ্রীলঙ্কায়।
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) জন্যও তেমন কিছুই চাইছে বিসিসিআই। আগামী বছর পাকিস্তান যাতে না যেতে হয়, তা নিশ্চিত করতে উঠেপড়ে লেগেছে তারা। চাপ তৈরি করা হচ্ছে আইসিসি’র উপর। পক্ষান্তরে লড়াই করতে প্রস্তুত পাকিস্তান’ও। কোনোরকম হাইব্রিড মডেল বা ভেন্যু পরিবর্তন মানা হবে না, সাফ জানিয়েছেন মহসীন নকভি।ভারতকে পড়শি দেশে পা রাখার ব্যপারে রাজী করানোর দায়িত্ব পিসিবি ছেড়েছে আইসিসি’র উপর। তবে ‘মেন ইন ব্লু’র নিরাপত্তার জন্য যে বিশেষ ব্যবস্থা করা হবে তা জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।
A-গ্রুপে ভারতের সাথে রয়েছে নিউজিল্যান্ড, বাংলাদেশ ও পাকিস্তান। যে খসড়া সূচি জমা করা হয়েছে তা অনুযায়ী রোহিত শর্মাদের প্রথম প্রতিপক্ষ টাইগার্স’রা। ম্যাচ রয়েছে ২০ ফেব্রুয়ারি। দ্বিতীয় প্রতিপক্ষ নিউজিল্যান্ড। ২৩ তারিখ আয়োজিত হওয়ার কথা ম্যাচটি। এরপর ১ মার্চ রয়েছে ক্রিকেটের এল-ক্লাসিকো। ভারত মুখোমুখি হতে পারে পাকিস্তানের। পিসিবি’র তরফে জানানো হয়েছে যে নিরাপত্তার স্বার্থে টিম ইন্ডিয়ার সবক’টি ম্যাচ লাহোরে আয়োজন করা যেতে পারে। একইসাথে তারা সেমিফাইনালে গেলে সেই ম্যাচটিও রাওয়ালিপিন্ডি বা করাচী থেকে স্থানান্তরিত হতে পারে লাহোরে। ফাইনালের জন্য এমনিই গদ্দাফি স্টেডিয়ামকে বেছে নেওয়া হয়েছে।
অমিত শাহের মন্তব্য নিয়ে জলঘোলা-
পাকিস্তান বিশেষ আয়োজন, নিরাপত্তা নিয়ে নিশ্চয়তা দিলেও চিঁড়ে হয়ত ভিজছে না সহজে। গত বছর প্রাক্তন ক্রীড়ামন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর (Anurag Thakur) জানিয়েছিলেন যে কোনো মূল্যেই পাকিস্তানে পা রাখবেন না বিরাট কোহলিরা। বিভিন্ন সময় জয় শাহ, রজার বিনিদের এই নিয়ে প্রশ্ন করা হলেও মিলেছে নেতিবাচক উত্তর। কখনও কখনও কেন্দ্রীয় সরকারের কোর্টেও ঠেলে দেওয়া হয়েছে বল। পাকিস্তানে যাওয়ার ব্যপারে সরকারী সম্মতি যে মিলবে না তা স্পষ্ট হয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ’র (Amit Shah) মন্তব্যে।
সংবাদমাধ্যম ‘স্পোর্টস তক্’ জানাচ্ছে যে অমিত শাহ জানিয়ে দিয়েছেন, “সন্ত্রাসবাদ পুরোপুরি বন্ধ না হলে পাকিস্তানের সাথে কোনোরকম আলোচনায় যাওয়া হবে না।” প্রসঙ্গত ২৬/১১’র মুম্বই হামলার পরেই ভারত-পাক ক্রিকেটসম্পর্কে ফাটল ধরে। সেই ক্ষত যে এখনও শুকিয়ে যায় নি, শাহের মন্তব্যেই পরিষ্কার তা।চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) ভবিষ্যৎ কি? বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের পর কোহলিদের ওয়াঘা পেরোনোর সম্ভাবনা প্রায় শূন্য। এবার আইসিসি কোন পথে এগোয় তার উপরেই নির্ভর করছে সবকিছু।
ভারতকে বহিষ্কার করতে পারে কেন্দ্রীয় ক্রিকেট সংস্থা। সেক্ষেত্রে সুযোগ পাওয়ার কথা শ্রীলঙ্কার। কিন্তু তাতে বিনিয়োগ টানতে বড়সড় সমস্যার সম্মুখীন হবে তারা। বিকল্প রাস্তা বের করার পথেই হয়ত হাঁটতে হতে পারে তাদের। আগামী ১ ডিসেম্বর থেকে আইসিসি’র চেয়ারম্যান পদে বসছেন অমিত শাহ’র পুত্র ও বর্তমান বিসিসিআই সচিব জয় শাহ (Jay Shah)। এতে বিসিসিআই-এর পায়ের তলার মাটি যে অনেকটা শক্তি হবে তা বলাই বাহুল্য। তিনি ভারতের পক্ষেই সিদ্ধান্ত নেবেন বলে মনে করা হচ্ছে। মধ্যপ্রাচ্য বা শ্রীলঙ্কায় সরতে পারে ‘মেন ইন ব্লু’র সবক’টি ম্যাচ।