IND vs ENG: হায়দ্রাবাদ, বিশাখাপত্তনম, হায়দ্রাবাদের পর রাঁচী-ফের একবার চার দিনেই গুটিয়ে গেলো টেস্ট। প্রথম ম্যাচে হারতে হয়েছিলো ভারতকে। তারপর থেকে টানা দুটি টেস্ট জিতে প্রতিপক্ষকে পিছনে ফেলেছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma), রবিচন্দ্রণ অশ্বিনরা। রাঁচীতেও বদল এলো না ফলাফলে। ৫ উইকেটের ব্যবধানে ম্যাচ জিতে নিলো ভারত। একইসাথে টানা তিন টেস্ট জিতে পকেটে পুরে নিলো সিরিজও। ম্যাচের প্রথম দুই দিন সমানে সমানে লড়েছিলো ইংল্যান্ড, কিন্তু তৃতীয় দিন থেকে টিম ইন্ডিয়ার দাপটের সামনে ধীরে ধীরে গুটিয়ে গেলো তারা। টসে জিতে প্রথম ব্যাট করে ইংল্যান্ড তুলেছিলো ৩৫৩। জবাবে ভারত থামে ৩০৭ রানে। ৪৬ রানের লিড পেলেও তৃতীয় ইনিংসে অশ্বিন-কুলদীপের ঘূর্ণিতে ১৪৫-এর বেশী এগোতে পারেন নি স্টোকসরা। আজ রোহিত-শুভমানদের সৌজন্যে ৬১ ওভারের মধ্যেই ১৯২ রানের লক্ষ্যমাত্রা পেরিয়ে যায় ভারত।
Read More: IND vs ENG: “কবে রাজনীতি শেষ হবে….”, রাঁচিতে দ্বিতীয় ইনিংসে ফ্লপ করায় নেটিজেনদের রোষের মুখে রজত পতিদার !!
জয়ের ভিত গড়ে দেন রোহিত-যশস্বী-
১৯২ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে গতকাল দ্রুত রান তোলার প্রয়াস করতে দেখা গিয়েছিলো রোহিত শর্মা ও যশস্বী জয়সওয়ালকে। দিনের শেষে ভারতের স্কোরবোর্ডে বিনা উইকেটে ছিলো ৪০ রান। আজ সকালেও স্কোরবোর্ডকে সচল রেখেছিলেন দুই ওপেনার। সাবলীল ভঙ্গিতেই ইংল্যান্ডের স্পিনারদের বিরুদ্ধে ব্যাট করছিলেন তাঁরা। আচমকাই ঘটে ছন্দপতন। দলের স্কোর যখন ৮৪, তখন জো রুটের বলে জেমস অ্যান্ডারসনের হাতে ধরা পড়েন যশস্বী। প্রথম ইনিংসে ৭৩ রানের অনবদ্য ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে তাঁর ব্যাট থেকে এলো ৪৪ বলে ৩৭ রান। ৫টি চার মারেন তিনি। বছর ৪১-এর অ্যান্ডারসন যেভাবে সামনের দিকে অনেকটা ডাইভ দিয়ে ক্যাচ তালুবন্দী করলেন, তা তারিফ কুড়িয়েছে ক্রিকেটমহলে।
যশস্বী ফিরলেও ব্যাটিং চালিয়ে যান রোহিত শর্মা। অহেতুক আগ্রাসন দেখানোর পথে আজ হাঁটেন নি তিনি। বরং স্পিনারদের সামলে দল’কে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন সাফল্যের দিকে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ১০ রান করে উইকেট ছুঁড়ে এসেছিলেন তিনি। দ্বিতীয় ইনিংসে দায়িত্বশীল অর্ধশতক করতে দেখা গেলো ভারত অধিনায়ককে। ৮১ বলে ৫টি চার ও ১টি ছক্কার সাহায্যে ৫৫ রান করেন তিনি। ৯৯ রানের মাথায় দ্বিতীয় উইকেট হারায় টিম ইন্ডিয়া। রোহিতকে ক্রিজ ছেড়ে বেরিয়ে আসতে দেখে লেন্থে পরিবর্তন করেন টম হার্টলি। ব্যাট বাড়িয়ে দেওয়া ছাড়া উপায় ছিলো না তাঁর সামনে। বল জমা পড়ে উইকেটরক্ষক বেন ফোকসের দস্তানায়। আম্পায়ার কট বিহাইন্ড দিলেও দেখা যায় ব্যাট নয়, প্যাড ছুঁয়েছিলো বল। তবে ফোকস স্টাম্পড’ও করেন রোহিতকে। রিভিউ নিলেও লাভ হত না তাঁর।
ধাক্কা সামলে ম্যাচ জেতালেন শুভমান-জুড়েল-
৯৯ রানের মাথায় যখন ভারতের দ্বিতীয় উইকেটটি পড়ে, তখনও বিশেষ চিন্তা বাসা বাঁধে নি ভারতীয় সমর্থকদের মনে। কিন্তু এরপর টিম ইন্ডিয়ার মিডল অর্ডারের উপর যে আক্রমণ চালান শোয়েব বশির, তা খানিক ব্যাকফুটে ঠেলে দিয়েছিলো দল’কে। চারে ব্যাট করতে নেমে ফের ব্যর্থ রজত পতিদার। ফের শূন্য রান করে ফিরলেন তিনি। তিন টেস্টের কেরিয়ারে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার শূন্য করলেন তিনি। শোয়েব বশিরের বলে ধরা পড়েন অলি পোপের হাতে। এরপর বিশেষ সুবিধা করতে পারেন নি রবীন্দ্র জাদেজা’ও। বাম হাতি ব্যাটারকে সাজঘরের পথ দেখান বশির’ই। ৪ করে তিনি ধরা পড়েন জনি বেয়ারেস্টোর হাতে। গত ম্যাচে জোড়া অর্ধশতক করলেও রাঁচীতে ব্যর্থ সরফরাজ খান। ‘গোল্ডেন ডাক’ করে বশিরের শিকার হন তিনি।
পাক বংশোদ্ভূত তরুণ স্পিনার পরপর তিন উইকেট নিয়ে জমিয়ে দিয়েছিলেন ম্যাচ। একটা সময় ভারতের প্রয়োজন ছিলো ৭২ রান। ইংল্যান্ডের দরকার ছিলো ৫ উইকেট। আশঙ্কার প্রহর গোণা শুরু করেছিলেন টিম ইন্ডিয়া সমর্থকেরা। এমতাবস্থায় ভাঙনের মাঝে রুখে দাঁড়ান শুভমান গিল ও ধ্রুব জুড়েল। দ্বিতীয় ইনিংসে বরাবরই ভরসাযোগ্য শুভমান। এর আগে গাব্বায় করেছেন ৯১ এমনকি চলতি সিরিজেও বিশাখাপত্তনমে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ১০৪, রাজকোটে করেছেন ৯৪। আজও কঠিন পরিস্থিতিতে উইকেটে টিকে থেকে ১২৪ বলে ৫২* রান করে ভারতকে বৈতরণী পার হতে সাহায্য করলেন তিনি। প্রথম ইনিংসে জুড়েলের ৯০ রানই লড়াইতে রেখেছিলো দল’কে। দ্বিতীয় ইনিংসেও ৩৯* রান করে ভারতকে জয় এনে দেন তিনি। টানা তিন ম্যাচ জিতে সিরিজ পকেটে পুরলো ভারত। ধর্মশালার পঞ্চম টেস্ট হয়ে দাঁড়ালো নিয়মরক্ষার।