IND vs AUS: অস্ট্রেলিয়াকে নাগপুরের জামথা স্টেডিয়ামে পর্যুদস্ত করে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির অভিযান শুরু করেছে ভারতীয় দল। গত দুইবার অস্ট্রেলিয়ার মাঠে অজিদের হারিয়েছিলো ‘মেন ইন ব্লু।’ ভারতের মাঠেও সাফল্যের ধারা অব্যাহত রইলো। খেলা শুরুর আগেই ঘূর্ণি পিচ নিয়ে ভাবনায় ছিলো অস্ট্রেলিয়া। ম্যাচে বল লাট্টুর মত না ঘুরলেও স্পিন আতঙ্কে ভুগেই তিন দিনের মধ্যে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখা গেলো ক্যাঙারুবাহিনীকে। টসে জিতে প্রথমে ব্যাট করে ১৭৭ রান করেছিলো তারা। পাঁচ মাস পরে টেস্ট ক্রিকেটে ফিরে ৫ উইকেট নিয়ে প্রত্যাবর্তনকে সুখের করে তুললেন রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja)। জবাবে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) শতরান এবং জাদেজা-অক্ষরের অর্ধশতরানের সুবাদে ৪০০ রান করে ভারত। ২২৩ রানে পিছিয়ে থেকে খেলতে নেমে অজিদের দ্বিতীয় ইনিংস গুটিয়ে যায় ৯১ রানে। দ্বিতীয় ইনিংসে পাঁচ উইকেট নিয়ে অস্ট্রেলিয়া ব্যাটিং-এর মেরুদন্ড ভাঙেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। ৩১তম বার এক ইনিংসে ৫ শিকার নিলেন তিনি। অশ্বিন-জাদেজার জুটি ভারতকে প্রথম টেস্টে ইনিংস ও ১৩২ রানের বিশাল ব্যবধানে জয় এনে দিলো। এই দুই স্পিন বোলিং অলরাউন্ডারের কাঁধে ভর করে অজিদের বড় ব্যবধানে হারিয়ে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে খেলার স্বপ্ন দেখছে দেশের ক্রিকেট অনুরাগী জনতা। তবে এর সম্পূর্ণ উলটো কথা বললেন ভারতের প্রাক্তন ক্রিকেটার ডোডা গণেশ (Dodda Ganesh)। ‘টিম ইন্ডিয়া’র নাকি প্রয়োজনই নেই অশ্বিন-জাদেজার জুটিকে। এহেন বিস্ফোরক মন্তব্যে হতবাক ক্রিকেটমহল।
‘স্পিন ট্যুইন’ নিয়ে কি বলেছেন ডোডা গণেশ-

ভারতীয় দলের প্রাক্তণী ডোডা গণেশ (Dodda Ganesh) প্রায়শই সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর মন্তব্যের জন্য উঠে আসেন খবরের শিরোনামে। চেতেশ্বর পূজারাকে (Cheteshwar Pujara) বসিয়ে সূর্যকুমার যাদবকে (Suryakumar Yadav) টেস্ট খেলানোর পক্ষে সওয়াল করায় কিছুদিন পূর্বেই প্রাক্তন নির্বাচক সুনীল জোশিকে (Sunil Joshi) নিশানা করেছিলেন তিনি। তখনও গণমাধ্যমের চর্চার বিষয় হয়েছিলো ভারতের জার্সিতে চার টেস্ট এবং একটি একদিনের ম্যাচ খেলা গণেশের ট্যুইটগুলি। আরও একবার খবরের কেন্দ্রবিন্দুতে কর্ণাটকের প্রাক্তন পেসার। ভারতের স্পিন আক্রমণের শক্তি বোঝাতে গিয়ে অশ্বিন ও জাদেজার প্রসঙ্গ টেনে আনেন তিনি। টেস্ট অলরাউন্ডারদের তালিকায় শীর্ষ দুটি স্থান দখল করে রাখা জাদেজা (Ravindra Jadeja) ও অশ্বিনকে (Ravichandran Ashwin) ছাড়াই অজিদের গুঁড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রাখে ভারত। এমনটাই দাবী করেছেন তিনি। কারা হতে পারেন ভারতের নয়া স্পিন ত্রয়ী, সেই বিষয়েও মুখ খুলেছেন তিনি। ডোডা গণেশ (Dodda Ganesh) বলেন, “ভারতের কাছে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী স্পিন আক্রমণ রয়েছে। অশ্বিন আর জাদেজা, দু’জনকেই যদি বিশ্রাম দেওয়া হয়, তাহলেও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজ জিতে যাবে ভারত। অক্ষর প্যাটেল, কুলদীপ যাদব এবং ওয়াশিংটন সুন্দরকে খেলিয়েও টেস্ট সিরিজ জিততে পারে ভারতীয় দল।” নাগপুরে স্পিনের বিপক্ষে তাসের ঘরের মত ভেঙে পড়া অস্ট্রেলীয় দলকে নিয়ে সমালোচনার সুর ডোডা গণেশের গলায়। তিনি বলেন, “আমি আবারও বলছি, ভারতের স্পিন ত্রয়ীর বিপক্ষে অস্ট্রেলিয়ার কোনো পরিকল্পনাই নেই। ওরা একটা টেস্টও জিতবে না ভারতের স্পিনারদের বিরুদ্ধে। ভারত ৪-০ ফলে সিরিজ জিতবে।”
কুলদীপ-অক্ষর কি পারবেন অশ্বিন-জাদেজার অভাব ঢাকতে?

ডোডা গণেশ (Dodda Ganesh) যতই ভবিষ্যদ্বাণী করুন, ভারতীয় টিম ম্যানেজমেন্ট কি আদৌ তাতে কর্ণপাত করে বিশ্রামে পাঠাবে অশ্বিন আর জাদেজাকে? কুলদীপ যাদব (Kuldeep Yadav), অক্ষর প্যাটেল (Axar Patel) বা ওয়াশিংটন সুন্দর (Washington Sundar) কি আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দুই মহারথীর বিকল্প এক্ষুনি হয়ে উঠতে পারবেন? উঠছে প্রশ্ন। তবে ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের প্রায় সকলেরই ধারণা অশ্বিন এবং জাদেজাকে বাইরে রেখে ভারতীয় দল তৈরি করার মত জুয়া খেলার পক্ষপাতী হবেন না কোচ রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। বিশেষ করে যেখানে সিরিজের প্রথম টেস্টে এই জুটির কারণেই বড় জয় পেয়েছে ‘টিম ইন্ডিয়া।’ অশ্বিন ও জাদেজার ডান হাতি-বাঁ হাতি স্পিন বোলিং কম্বিনেশন ধাঁধায় ফেলে দেয় প্রতিপক্ষকে। অক্ষর (Axar Patel) ও কুলদীপ (Kuldeep Yadav) দু’জনেই বাঁ-হাতি, সেক্ষেত্রে বৈচিত্র খানিক কমে যাবে স্পিন আক্রমণের। পাশাপাশি ব্যাটার হিসেবেও লোয়ার অর্ডার বা মিডল অর্ডারে দারুণ কার্য্যকরী এই জুটি। অক্ষর-কুলদীপও ব্যাট হাতে সাবলীল, তবে জাড্ডু (Ravindra Jadeja) ও অশ্বিনের মত ভিন্ন ভিন্ন পরিস্থিতিতে খেলার অভিজ্ঞতা তাঁদের নেই। এই অভিজ্ঞতাই অনেকটা এগিয়ে রেখেছে দুই মহাতারকাকে। টেস্ট ক্রিকেটে ৪৫০ এর বেশী উইকেট নিয়েছেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। ২৫০ উইকেটের বেশী রয়েছে জাদেজার ঝুলিতেও। ব্যাট হাতে শতরান করেছেন দু’জনেই। অভিজ্ঞতায় অনেকটাই পিছনে থাকবেন অক্ষর বা কুলদীপ। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে এই সিরিজ নানা কারণে গুরুত্বপূর্ণ। বড় ব্যবধানে জিতলে আইসিসি টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনাল খেলার সুযোগ পাবে ‘টিম ইন্ডিয়া।’ পাশাপাশি উঠে আসবে টেস্ট বিশ্ব র্যাঙ্কিং-এর শীর্ষস্থানে। সবদিক মাথায় রেখে অনভিজ্ঞ কুলদীপ-অক্ষর নয়, বরং অভিজ্ঞ অশ্বিন এবং জাদেজাকেই প্রথম একাদশে রাখবে টিম ম্যানেজমেন্ট। তৃতীয় স্পিনার হিসেবেই বড়জোর জায়গা হতে পারে বাকিদের।