টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) মিটেছে দিনকয়েক আগে। এর মধ্যেই পরবর্তী আইসিসি টুর্নামেন্ট, অর্থাৎ ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) নিয়ে শুরু হয়েছে হইচই। নেপথ্যে ভারত বনাম পাকিস্তান। রাজনৈতিক ও কূটনৈতিক দ্বন্দ্বের কারণে ২০০৮-এর এশিয়া কাপের পর আর পড়শি দেশে পা রাখে নি টিম ইন্ডিয়া (Team India)। শেষবার পাকিস্তান দ্বিপাক্ষিক সিরিজ খেলতে ভারতে এসেছিলো ২০১২তে। তারপর আর দ্বিপাক্ষিক দ্বৈরথ দেখা যায় নি ক্রিকেটের বাইশ গজে। মাঝে টি-২০ বিশ্বকাপ ও ওডিআই বিশ্বকাপে অংশ নিতে ২০১৬ ও ২০২৩-এ পাক শিবির অবশ্য এসেছে ওয়াঘা সীমান্তের পূর্ব পারে। তবে ভারতীয় দল পাকিস্তান যাওয়া নিয়ে নেতিবাচক অবস্থানেই থেকেছে। ২০২৫-এ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) আয়োজক পড়শি দেশ। তাই বিসিসিআই কি সিদ্ধান্ত নেয় সেদিকে তাকিয়ে রয়েছে বিশ্ব।
Read More: গৌতম গম্ভীর হেড কোচ হতেই ওয়ানডে থেকে ছাটাই হচ্ছে রোহিত শর্মার, এই খেলোয়াড়কে দেওয়া হচ্ছে অধিনায়কত্ব !!
খসড়া সূচি পেশ করেছে পাকিস্তান-
আইসিসি প্রকাশিত ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) আয়োজন করার কথা পাকিস্তানের। লম্বা সময় পর কোনো বড় মাপের টুর্নামেন্ট আয়োজনের দায়িত্ব পাচ্ছে তারা। তাই প্রস্তুতিতে কোনো রকম ফাঁক রাখতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড রাজী নয়। গত ২৯ জুন বার্বাডোজে টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) ফাইনাল দেখতে পিসিবি প্রধান মহসীন নকভিকে (Mohsin Naqvi) আমন্ত্রণ জানিয়েছিলো আইসিসি। সেখানেই ক্রিকেটের সর্বোচ্চ সংস্থার কাছে আগামী বছরের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির (CT 2025) জন্য গ্রুপ বিন্যাস ও খসড়া সূচি জমা দিয়েছেন তিনি। পাক বোর্ডের প্রস্তাব অনুযায়ী অংশগ্রহণকারী ৮ দলকে ভাগ করা হতে পারে দুটি গ্রুপে। গ্রুপ-এ’তে থাকছে ভারত, পাকিস্তান, নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশ। অন্যদিকে গ্রুপ-বি’তে থাকার সম্ভাবনা অস্ট্রেলিয়া, ইংল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা ও আফগানিস্তানের।
সূত্রের খবর যে ১৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৯ মার্চের মধ্যে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025) আয়োজন সেরে ফেলতে চায় পাকিস্তান। ১৫টি ম্যাচের জন্য ঠিক করা হয়েছে ৩টি ভেন্যু। লাহোরের গদ্দাফি স্টেডিয়ামে তারা আয়োজন করতে চায় ৭টি ম্যাচ। ৫টি থাকছে করাচীর ন্যাশনাল স্টেডিয়ামে। আর বাকি ৩টি ম্যাচের জন্য ভাবা হচ্ছে রাওয়ালপিণ্ডি’কে। শোনা গিয়েছে যে একমাত্র ভারত ছাড়া সবক’টি অংশগ্রহণকারী দেশই পাকিস্তানে (PAK) আসা নিয়ে সবুজ সংকেত দিয়েছে বার্বাডোজে। আইসিসি সূত্র মারফৎ সংবাদসংস্থা পিটিআই জানতে পেরেছে যে পড়শি দেশে কোহলি (Virat Kohli), রোহিতরা (Rohit Sharma) যাবেন কিনা তা নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সাথে আলোচনা করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানিয়েছে বিসিসিআই।
এক নজরে প্রস্তাবিত সূচি-
Date | Match | Venue |
---|---|---|
Feb 19 | NZ vs PAK | Karachi |
Feb 20 | BAN vs IND ⭐ | Lahore |
Feb 21 | AFG vs SA | Karachi |
Feb 22 | AUS vs ENG | Lahore |
Feb 23 | NZ vs IND ⭐ | Lahore |
Feb 24 | PAK vs BAN | Rawalpindi |
Feb 25 | AFG vs ENG | Lahore |
Feb 26 | AUS vs SA | Rawalpindi |
Feb 27 | BAN vs NZ | Lahore |
Feb 28 | AFG vs AUS | Rawalpindi |
Mar 1 | IND vs PAK ⭐ | Lahore |
Mar 2 | SA vs ENG | Rawalpindi |
Mar 5 | Semi-final 1 | Karachi |
Mar 6 | Semi-final 2 | Rawalpindi |
Mar 9 | Final | Lahore |
⭐ ভারতের ম্যাচগুলি নির্ভর করছে বিসিসিআই ও কেন্দ্রীয় সরকারের ছাড়পত্রের উপর।
ভারতের সামনে খোলা কেবল দুটি রাস্তা-
নিরাপত্তাজনিত কারণে গত বছর এশিয়া কাপ খেলতে পাকিস্তান যেতে রাজী হন নি বিসিসিআই কর্তারা। সচিব জয় শাহের (Jay Shah) চাপেই শেষ পর্যন্ত মধ্যপন্থা খুঁজে বের করতে হয় এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিলকে। সম্পূর্ণ টুর্নামেন্ট নয়, বরং মাত্র ৪টি ম্যাচ দেশে আয়োজন করতে পেরেছিলো পাকিস্তান। নক-আউট পর্বসহ মোট ৯টি ম্যাচ সরে গিয়েছিলো শ্রীলঙ্কায়। এই হাইব্রিড মডেল চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্যও প্রস্তাব করেছে বিসিসিআই। কিন্তু এবার আর মাথা নোয়াতে রাজী নয় পিসিবি। তারা সম্পূর্ণ টুর্নামেন্ট দেশে আয়োজন করতে চেয়ে চাপ বাড়াচ্ছে। এমনকি ভারতের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখার কথাও জানিয়েছে তারা। নিরাপত্তার কারণে ২০ ফেব্রুয়ারি, ২৩ ফেব্রুয়ারি ও ১ মার্চ টিম ইন্ডিয়ার তিনটি গ্রুপ ম্যাচই রাখা হয়েছে লাহোরে।
পিসিবি আরও জানিয়েছে যে ভারত যদি সেমিফাইনালে ওঠে তাহলে সেই ম্যাচটি করাচী বা রাওয়ালপিণ্ডি থেকে সরিয়ে আনা হবে লাহোরে। এর পরেও পাকিস্তান যাওয়া নিয়ে এখনও গড়িমসি করছে বিসিসিআই (BCCI)। জয় শাহ (Jay Shah), রজার বিনি’রা যে আইসিসি’র অন্দরে নিজেদের ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে ম্যাচগুলি দুবাই বা অন্য কোথাও সরানোর মরিয়া চেষ্টা করবেন তা একপ্রকার নিশ্চিত। তবে কতদূর সফল হবেন তা এখনই বলতে পারছেন না কেউ। আইসিসি’র অন্দর থেকে খবর মিলেছে যে পাকিস্তানের দাবীর পক্ষেই দাঁড়াতে পারে সর্বোচ্চ নিয়ামক সংস্থা। ভারতকে দেওয়া হতে পারে দুটি বিকল্প। হয় পাক সফর করতে হবে কোহলিদের, না হলে হয়ত বাদই দেওয়া হবে টিম ইন্ডিয়াকে। সেক্ষেত্রে শ্রীলঙ্কা বা নেদারল্যান্ডসকে দেখা যেতে পারে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে।