আইপিএলের ইতিহাসে সবথেকে সফল অধিনায়কের নাম রোহিত শর্মা। পাঁচ বার অধিনায়ক হিসেবে ট্রফি জিতেছেন তিনি। বিরাট কোহলিকে সরিয়ে যখন রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma) নেতা করা হয়েছিলো তখন ‘হিটম্যানের’ হাত ধরে আইসিসি ট্রফি জেতার নয়া স্বপ্ন দেখেছিলেন ভারতীয় সমর্থকেরা। কিন্তু বাস্তবে তা আর পূরণ হয় নি। ২০২২ এর এশিয়া হোক বা টি-২০ বিশ্বকাপ, দু’বারই খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ভারতকে। জুটেছে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১০ উইকেটে হারার মত লজ্জাও। রোহিতের নেতৃত্বে কোনোরকম উদ্ভাবনীশক্তি দেখতে পাচ্ছেন না অনেক ক্রিকেটবোদ্ধা। পরিস্থিতি বিচারে প্ল্যান-বি বা প্ল্যান-সি ব্যবহার করার কোনো চিহ্ন বা ইঙ্গিত নেই তাঁর ম্যাচ পরিচালনায়, শুনতে হচ্ছে এমন সমালোচনাও। এহেন পরিস্থিতিতে পূর্ণ দায়িত্ব পাওয়ার এক বছরের মধ্যেই রোহিতকে সরিয়ে দেওয়ার দাবী জোরালো হচ্ছে। অন্তত সাদা বলের খেলায় রোহিতের (Rohit Sharma) উত্তরসূরী হিসেবে উঠে আসছে হার্দিক পান্ডিয়ার নাম। ইতিমধ্যেই আয়ারল্যান্ড, নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে রোহিতকে বাইরে রেখে হার্দিককে (Hardik Pandya) নেতা হিসেবে পরখ করে দেখেছে বোর্ড। এবার জাতীয় দলে রোহিতের নেতৃত্বের ভবিষ্যৎ নিয়ে প্রশ্ন তুলে দিলো ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। পরবর্তী নেতার সন্ধান কি শুরু করে দিয়েছে বোর্ড? বিসিসিআই সূত্রে খবর তেমনই।
বিশ্বকাপের পর বদল দেখা যাবে নেতৃত্বে ?

ঘরে-বাইরে চাপের মুখে রয়েছে রোহিত শর্মার (Rohit Sharma) অধিনায়কত্ব। একটা ভুল পদক্ষেপেই ছাঁটাই হতে পারেন তিনি। বিষয়টি জানেন রোহিতও। ২০২৩ সালে দেশের মাটিতে বসতে চলেছে বিশ্বকাপের আসর। ২০১১ সালে ভারতের মাটিতেই শেষবার বিশ্বজয়ীর খেতাব এসেছিলো ভারতের ঝুলিতে। এরপর ২০১৫ এবং ২০১৯ সালে বিশ্বকাপ জিতেছে অস্ট্রেলিয়া এবং ইংল্যান্ড। ২০১৩ সালের চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির পর আইসিসি ট্রফিরও দেখা নেই ভারতীয় ক্রিকেটে। যাবতীয় সমালোচনার জবাব রোহিত (Rohit Sharma) দিতে পারেন দলকে বিশ্বকাপ জিতিয়ে। সেই লক্ষ্যেই আপাতত দলকে নিয়ে প্রস্তুতিতে ব্যাস্ত তিনি। শ্রীলঙ্কা এবং নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটানা দুটি একদিনের সিরিজ জিতে ছন্দে থাকার ইঙ্গিত দিয়েছে ভারতীয় দলও। তাই এক্ষুণি নেতৃত্ব থেকে হিটম্যানকে বরখাস্ত করার পথে বোর্ড হাঁটবে না বলেই মত বিশেষজ্ঞ মহলে। সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ভারতীয় দলের নেতৃত্বের ভার কার হাতে থাকবে সেই বিষয়ে বক্তব্য জানাতে গিয়ে নাম গোপন রাখার শর্তে বিসিসিআই-এর এক উচ্চপদস্থ কর্তা জানিয়েছেন, “আপাতত বিশ্বকাপে রোহিতই ভারতকে নেতৃত্ব দেবে। তবে আমাদের ভবিষ্যতের কথা ভাবতেই হবে। ঘটনা ঘটে যাওয়ার পর কেবল প্রতিক্রিয়া জানানোর অপেক্ষায় বসে থাকার মানে হয় না। যদি ২০২৩ বিশ্বকাপের পর রোহিত মনে করেন যে তিনি অধিনায়কত্ব থেকে সরে দাঁড়াবেন, তাহলে বিকল্প আমাদের ভেবে রাখতেই হবে।” বোর্ড কর্তার আচরণ থেকে পরিষ্কার যে রোহিতের উত্তরসূরী নিয়ে আলোচনা শুরু হয়ে গিয়েছে বোর্ডের অন্দরমহলে।
রোহিত শর্মার জায়গায় অভিষেক হতে পারে হার্দিকের-

২০২৩ বিশ্বকাপের পর রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) যদি নেতৃত্ব থেকে সরে দাঁড়ান তাহলে স্থায়ী অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হতে পারে হার্দিক পান্ডিয়ার। ২০২২ সালে প্রথমবার নেতা হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেন তিনি। নতুন ফ্র্যাঞ্চাইজি গুজরাত টাইটান্সের অধিনায়ক হিসেবে জিতে নে আইপিএল। তারপর থেকেই ভারতীয় দলের পরবর্তী অধিনায়ক হিসবে অনেকেই চাইছেন হার্দিককে (Hardik Pandya) । তাঁর ওপর আস্থা রয়েছে বোর্ডের, তা বুঝিয়েছে BCCI-ও। নানা সময় রোহিত শর্মার অনুপস্থিতিতে হার্দিকের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে অধিনায়কত্বের ভার। দেশের বাইরে আয়ারল্যান্ড এবং নিউজিল্যান্ডে টি-২০ সিরিজ জিতে ফিরেছেন ক্যাপ্টেন হার্দিক (Hardik Pandya) । দেশেও শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সিরিজ জিতেছেন। আসন্ন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজেও রোহিত-বিরাটদের মত সিনিয়ররা না থাকায় অধিনায়ক করা হয়েছে হার্দিককেই। ভবিষ্যতের নেতা যে তিনিই তা বোঝাতেই যেন কে এল রাহুলকে সরিয়ে একদিনের দলের সহ-অধিনায়ক করা হয়েছে পান্ডিয়াকে। রোহিতের (Rohit Sharma উত্তরসূরী হিসেবে পান্ডিয়া চূড়ান্ত কিনা তা জানানে গিয়ে বোর্ড কর্তা জানিয়েছেন, “অধিনায়ক হিসেবে ভালো করছে হার্দিক। ও বয়সে তরুণ, এখনও অনেক উন্নতি করবে। তবে এই মুহূর্তে রোহিতই যোগ্যতম। ওকে ছাড়া কাউকে আপাতত ভাবা হচ্ছে না। রোহিতের প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন জানানো দরকার।”