টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জেতার পর অবসান ঘটেছে রাহুল দ্রাবিড় জমানার। ভারতীয় দলের নতুন কোচ হিসেবে দায়িত্ব নিয়েছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের মেন্টর হিসেবে যে সাফল্য পেয়েছেন তিনি, যেভাবে ক্রিকেটারদের পাশে থেকে তাঁদের থেকে আদায় করে নিয়েছেন সেরাটা, তার তারিফ করেছেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। আইপিএলে গম্ভীরের মগজাস্ত্রের ধার মুগ্ধ করেছে সমর্থকদেরও, বেড়েছে তাঁর কাছ থেকে প্রত্যাশা। শ্রীলঙ্কা সফরে প্রথমবার টিম ইন্ডিয়ার (Team India) ডাগ-আউটে বসেন তিনি। টি-২০ সিরিজে একের পর এক চমক দেখা গিয়েছিলো গুরু গম্ভীরের (Gautam Gambhir) স্ট্র্যাটেজিতে। ৩-০ ফলে প্রতিপক্ষ’কে হোয়াইটওয়াশ করে দল, কিন্তু চাপে পড়তে হয়েছে ওডিআই’তে। ০-২ ফলে হেরে বসেছে ভারত।
Read More: হার্দিক-সূর্য নয়, টিম ইন্ডিয়ার অধিনায়ক হওয়ার যোগ্য দাবীদার এই দুই তরুণ, জানালেন দীনেশ কার্তিক !!
বাংলাদেশ সিরিজ বড় পরীক্ষা গম্ভীরের-
১৯৯৭ সালের পর থেকে দ্বিপাক্ষিক ওডিআই সিরিজে শ্রীলঙ্কা ২৭ বছর একটানা হেরেছে ভারতের বিরুদ্ধে। সম্প্রতি কলম্বোর মাঠে সেই অন্ধকার অধ্যায়কে পিছনে ফেলতে সক্ষম হয়েছে লঙ্কান শিবির। চরিথ আশালঙ্কার (Charith Asalanka) দল প্রথম ম্যাচটি ড্র রাখতে সক্ষম হয়। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে ভারতকে বিপাকে ফেলে তাদের ব্যাটিং। স্পিনের বিপক্ষে নাস্তানাবুদ হয়ে আত্মসমর্পণ করতে হয় দল’কে। এই ফলাফলের পর সমালোচনার তীরে বিদ্ধ হয়েছিলেন নতুন কোচ। গম্ভীরের বিরুদ্ধে আক্রমণ শানিয়ে অনেকেই বলেছিলেন যে ব্যাটিং লাইন আপ নিয়ে অতিরিক্ত পরীক্ষানিরীক্ষা (Gautam Gambhir) করতে যাওয়ায় কাল হয়ে দাঁড়িয়েছে তাঁর জন্য। অধিক সংখ্যায় অলরাউন্ডার খেলাতে গিয়ে একাদশের ভিত নড়বড়ে করে ফেলেছিলেন গম্ভীর, উঠেছে এমন অভিযোগ’ও।
খাদের কিনার থেকে ঘুরে দাঁড়ানোর সুযোগ গম্ভীর (Gautam Gambhir) পেতে চলেছেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আসন্ন টেস্ট সিরিজে। ঘরের মাঠে প্রতিবেশী দেশের বিরুদ্ধে দু’টি টেস্ট খেলবে টিম ইন্ডিয়া। লাল বলের ফর্ম্যাটে টাইগার্সদের বিপক্ষেও ১৩ ম্যাচ খেলে অপরাজিত ভারত। জয় ১১টিতে, ড্র হয়েছে ২টি ম্যাচ। অপরাজিত তকমা কোনো মূল্যেই হারাতে চাইবেন না গম্ভীর (Gautam Gambhir) । সাম্প্রতিক অতীতে পাকিস্তানে গিয়ে তাদের ২-০ ফলে হোয়াইটওয়াশ করে এসেছে বাংলাদেশ। ফলে লড়াই যে সহজ হবে না তা দিনের আলোর মত পরিষ্কার। শ্রীলঙ্কা সফরের পর প্রায় এক মাস স্ট্র্যাটেজি সাজানোর জন্য সময় পেয়েছেন গম্ভীর। নাজমুল হোসেন শান্ত, শাকিব আল হাসানদের (Shakib al Hasan) বিপক্ষে তাঁর চাল কার্যকরী হলে অক্সিজেন পাবেন তিনি। না হলে উঠতে পারে তাঁকে ছাঁটাই করার দাবী।
হাত ধরতে পারেন মহেন্দ্র সিং ধোনি’র-
২০২৪-এর জুলাই থেকে ২০২৭-এর ডিসেম্বর অবধি বিসিসিআই-এর সাথে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir) । মাসখানেক কাটতে না কাটতেই তাঁকে নিয়ে প্রশ্ন উঠুক তা নিশ্চয়ই চাইবেন না তিনি। ইতিমধ্যেই পছন্দের কোচিং স্টাফ হিসেবে অভিষেক নায়ার ও রায়ান টেন দুশখাতেকে বেছে নিয়েছেন তিনি। সাথে বোলিং কোচ হিসেবে যুক্ত হচ্ছেন দক্ষিণ আফ্রিকার মর্ণি মর্কেল’ও। স্ট্র্যাটেজি নির্মাণে যাতে কোনো ফাঁক না থাকে, তা সুনিশ্চিত করার জন্য দেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা ক্রিকেট মস্তিষ্ক মহেন্দ্র সিং ধোনি’র শরণাপন্ন’ও হতে পারেন তিনি। ক্রিকেটের বাইশ গজে গম্ভীর ও ধোনি’র (MS Dhoni) মধ্যে বরাবরই রেষারেষি চোখে পড়েছে। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাঁরা একসাথে কাজ করলে যে সোনা ফলতে পারে তার প্রমাণ ২০১১-এর বিশ্বকাপ ফাইনাল। ব্যক্তিগত দূরত্বকে পিছনের সারিতে রেখে ভারতীয় দলের কথা ভেবে প্রশিক্ষক হিসেবেও হাত মেলাতে পারেন দু’জনে.
২০২১ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) সময় ধোনি’কে (MS Dhoni) ভারতীয় দলের মেন্টর হিসেবে নিয়োগ করেছিলো বিসিসিআই। কিছুদিনের মধ্যেই ফের সেই মেন্টর পদেই ফিরতে পারেন দেশের সর্বকালের সেরা অধিনায়ক। শীঘ্রই তাঁর কাছে পাঠানো হতে পারে প্রস্তাব। তবে কিংবদন্তি তারকা রাজী হবেন কিনা তা নিয়ে সন্দিহান ক্রিকেটজনতা। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটকে ধোনি বিদায় জানিয়েছেন ২০১৯ সালে। কিন্তু এখনও চুটিয়ে খেলছেন আইপিএল। চেন্নাই সুপার কিংসের (CSK) হয়ে গতবার মাঠে নেমেছেন প্রতিটি ম্যাচে। এবারও যদি ‘আনক্যাপড প্লেয়ার রিটেনশন’-এর নিয়মে বিশেষ রদবদল করে বিসিসিআই, তাহলে চেন্নাইয়ের জার্সি গায়েই মাঠে নামতে পারেন তিনি। ব্যাট হাতে বাইশ গজে নামার রোমাঞ্চকে দূরে সরিয়ে রেখে আদৌ মেন্টরের ভূমিকা বেছে নেবেন ‘মাহি?’ সেই উত্তরের সন্ধানেই এখন সকলে।