Rohit Sharma: ২০১৩ সালে ইংল্যান্ডকে ইংল্যান্ডের মাঠে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতেছিলো টিম ইন্ডিয়া। এরপরের একটা দশক কেটেছে কেবল হতাশায়। ওয়ান ডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, টি-২০ বিশ্বকাপের মত টুর্নামেন্টে সেমিফাইনাল বা ফাইনাল থেকে খালি হাতে ফিরতে হয়েছে ভারতকে। এমনকি বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালে পৌঁছেও দুই বার হারতে হয়েছে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। অন্ধকার অধ্যায় অবশেষে শেষ হয় ২০২৪-এ এসে। দীর্ঘ ট্রফি খরা কাটিয়ে টি-২০ বিশ্বকাপ জেতে রোহিত শর্মা’র (Rohit Sharma) নেতৃত্বাধীন ‘মেন ইন ব্লু’। এর মাত্র নয় মাসের মধ্যেই এলো পরবর্তী সাফল্য। দুবাইয়ের মাঠে নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে তৃতীয় বারের জন্য চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ছিনিয়ে নিলো ভারত। ফাইনালে ধুন্ধুমার ব্যাটিং করে নায়ক ‘ক্যাপ্টেন রোহিত’ই। দীর্ঘ কেরিয়ারে বহু ঘাত-প্রতিঘাত সামলেও যেভাবে দেশকে সাফল্যের সরণিতে জায়গা করে দিয়েছেন তিনি, তাকে কুর্নিশ জানিয়েছেন সকলে।
Read More: IPL 2025: আইপিএল থেকে ছিটকে যাচ্ছেন মায়াঙ্ক যাদব, চিন্তার ভাঁজ LSG শিবিরে !!
ধোনি’কে কৃতিত্ব দিচ্ছেন গৌতম গম্ভীর-

২০০৭ সালে প্রথমবার দেশের জার্সি গায়ে চাপিয়েছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) । আন্তর্জাতিক আঙিনায় তাঁর পথচলার শুরুটা খুব মসৃণ হয় নি। বেশ কয়েকবছর রীতিমত সংঘর্ষ করতে হয়েছিলো ব্যাট হাতে। মুম্বইয়ের ক্রিকেটারের প্রতিভা নিয়ে দ্বিধা ছিলো না কারও মনে। কিন্তু মিডল অর্ডার বা লোয়ার মিডল অর্ডারে সেই প্রতিভার সাথে সুবিচার করতে পারছিলেন না তিনি। ধারাবাহিকতার অভাবের কারণে ২০১১’র বিশ্বকাপের স্কোয়াড থেকে বাদ’ও পড়েন। অচলাবস্থা কাটে ২০১৩তে এসে। মিডল অর্ডারে আটকে না রেখে রোহিত শর্মা’কে (Rohit Sharma) ওপেনার হিসেবে ব্যবহার করার সিদ্ধান্ত নেন তৎকালীন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। ব্যাটিং পজিশন বদলাতেই কেরিয়ারের মোড়’ও ঘুরে যায় রোহিতের। একের পর এক ধুন্ধুমার ইনিংস। শতরান, দ্বিশতরানের সৌজন্যে প্রতিভাবান এক তরুণ থেকে ধীরে ধীরে কিংবদন্তিদের তালিকায় জায়গা করে নেন তিনি।
ভারতের হয়ে গত আঠারো বছরে ৬৭টি টেস্ট, ২৭৩টি একদিনের ম্যাচ ও ১৫৯টি টি-২০ খেলা হয়ে গিয়েছে রোহিত শর্মা’র। তিন ফর্ম্যাট মিলিয়ে তাঁর রান সংখ্যা প্রায় ২০০০০ ছুঁইছুঁই। শতরান ৪৯টি। অধিনায়ক হিসেবে দেশকে উপহার দিয়েছেন টি-২০ বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ক্রিকেটার রোহিতের (Rohit Sharma) কিংবদন্তি হয়ে ওঠার যাত্রাপথে মহেন্দ্র সিং ধোনি’র অবদানও অনস্বীকার্য্য, এমনটাই জানিয়েছিলেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। সাংবাদিক বিক্রান্ত গুপ্তাকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, “অধিনায়ক আপনার পাশে না থাকলে কেউই আপনাকে সমর্থন করবে না। নির্বাচক কমিটি থেকে টিম ম্যানেজমেন্ট, সবই অধিনায়কের হাতে। দীর্ঘসময় ধরে রোহিতকে যেভাবে সমর্থন যুগিয়েছে ধোনি তেমনটা খুব বেশী খেলোয়াড় পেয়েছেন বলে মনে হয় না। আশা রাখবো শুভমান গিল, সঞ্জু স্যামসনদের মত উঠতি খেলোয়াড়দের পাশে রোহিত নিজেও এভাবে দাঁড়াবে।”
রোহিতের প্রশংসা সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়ের-

২০২২ সালে বিরাট কোহলিকে সরিয়ে যখন ভারতীয় দলের নেতৃত্ব রোহিতের (Rohit Sharma) হাতে সঁপে দেওয়া হয়েছিলো, তখন দেশের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার প্রেসিডেন্ট ছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly)। সেই সময় ঝড় উঠেছিলো বিতর্কের। সমালোচিত হয়েছিলেন বাংলার মহারাজ। কিন্তু সাহসী সিদ্ধান্ত নিয়ে তিনি যে সেদিন ভুল কিছু করেন নি তার প্রমাণ মিলেছে গত নয় মাসের মধ্যে টিম ইন্ডিয়া টি-২০ বিশ্বকাপ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জেতায়। রবিবারের সাফল্যের পর রেভস্পোর্টসকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অধিনায়ক রোহিতের ভূয়সী প্রশংসা করতে শোনা গেলো সৌরভ’কে। তিনি জানান, “…রোহিত অসাধারণ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের পর দুবাইতেও অপরাজিত রইলো। অনবদ্য। যেভাবে ও আইপিএলে মুম্বই ইন্ডিয়ান্সকে যেভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে তা থেকেই ওর দক্ষতা স্পষ্ট ছিলো। তাই বিরাট যখন টি-২০ থেকে সরে দাঁড়ায়, তখন মনে হয়েছিলো যে দলকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য রোহিতই সেরা ব্যক্তি।”