Team India: ২০২২ সালের টি-২০ বিশ্বকাপের পর থেকেই কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে নতুন পন্থা অবলম্বন করতে দেখা গিয়েছিলো ভারতীয় দল’কে। সিনিয়রদের ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাট থেকে অব্যাহতি দিয়ে তরুণ তুর্কিদের আন্তর্জাতিক আঙিনার সাথে সড়গড় হয়ে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। প্রায় ১৪ মাস রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলি’রা খেলেন নি আন্তর্জাতিক টি-২০। রোহিতের পরিবর্তে নেতৃত্ব দিতে দেখা গিয়েছিলো হার্দিক পান্ডিয়াকে। নিউজিল্যান্ড, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজে অধিনায়কত্ব করেছেন তিনিই। ওপেনিং স্লটে জায়গা দেওয়া হয়েছিলো পাঞ্জাবের তরুণ শুভমান গিল’কে (Shubman Gill)।
টি-২০তে ওপেনিং কেরিয়ারের শুরুটা চমৎকার করেছিলেন শুভমান গিল (Shubman Gill)। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে আহমেদাবাদে দুর্দান্ত ৬৩ বলে ১২৬* রানের ইনিংস’ও খেলেছিলেন। আন্তর্জাতিক টি-২০তে কোনো ভারতীয় ক্রিকেটারের খেলা সর্বোচ্চ রানের ইনিংস এটি। তবে আইপিএলের পর থেকে টি-২০ পারফর্ম্যান্স বিশেষ ভালো নয় তাঁর। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে সাফল্য পান নি। আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ম্যাচ খেললেও রানের মুখ দেখেন নি। বাধ্য হয়েই তাঁকে বাদ দিয়েছে টিম ম্যানেজমেন্ট। অন্যদিকে অধিনায়ক হিসেবে শ্রীলঙ্কা, নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে সিরিজ জিতলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে হেরেছেন হার্দিক (Hardik Pandya)। অলরাউন্ডার হিসেবে তাঁর খেলায় দেখা গিয়েছে ধারাবাহিকতার অভাব। বর্তমানে চোটের কারণে বাইরে রয়েছেন হার্দিক পান্ডিয়া। তাঁর অবর্তমানেই তাঁর আদর্শ বিকল্পকে মেজেঘষে তৈরি করে নিয়েছে ভারত। মিলেছে শুভমানের বিকল্প’ও।
Read More: ভগবান শ্রী রামের শরণে বিরাট কোহলি, যোগ দিচ্ছেন অযোধ্যার অনুষ্ঠানে !!
জাতীয় দলে স্থায়ী হতে চলেছেন যশস্বী-শিবম-
শুভমান গিল কিছু ম্যাচে ভালো পারফর্ম করলেও তাঁর মধ্যে চোখে পড়েছে ধারাবাহিকতার অভাব। শেষ দশটি ইনিংসের মধ্যে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি ১২৬ ও ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে একটি ৭৭ রানের ইনিংস থাকলেও বাকি আট ম্যাচে একবার’ও ত্রিশের গণ্ডী পেরোতে পারেন নি তিনি। শুভমানের ধারাবাহিকতার অভাবের কারণেই তাঁকে বাদ দিয়েছে দল। বদলে ভরসার স্থল হিসেবে টিম ইন্ডিয়া (Team India) খুঁজে নিয়েছে যশস্বী জয়সওয়ালকে (Yashasvi Jaiswal)। ২২ বর্ষীয় বাম হাতি ব্যাটার দুর্দান্ত খেলেছেন এখনও অবধি। নেপালের বিরুদ্ধে এশিয়ান গেমসে শতরান করেছেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজ, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে ঝোড়ো অর্ধশতক করেছেন ইতিমধ্যেই। ১৬ ম্যাচে তাঁর রান সংখ্যা ৪৯৮ ও স্ট্রাইক রেট ১৬৪’র আশেপাশে। তিনিই ওপেনার হিসেবে হয়ে উঠেছেন প্রথম পছন্দ।
পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে একটা সময় দলে অপরিহার্য্য ছিলেন হার্দিক পান্ডিয়া (Hardik Pandya)। ভেঙ্কটেশ আইয়ার, বিজয় শঙ্করদের মাঝেমধ্যে সুযোগ দিয়ে দেখা হলেও তাঁরা হার্দিকের পারফর্ম্যান্সের ধারেকাছে পৌঁছতে পারেন নি। সাদা বলের খেলায় আগামীতে পূর্ণ সময়ের অধিনায়ক করা হবে হার্দিককে। গত এক-দেড় বছর ধরে এমন কথাও শোনা গিয়েছিলো। কিন্তু আপাতত তাঁকে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলেছেন শিবম দুবে (Shivam Dube)। শেষ ১০ টি-২০ ইনিংসে হার্দিক যেখানে একটিও অর্ধশতক করতে পারেন নি, সেখানে আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে দুই ম্যাচেই দুটি দুর্দান্ত অর্ধশতক করেছেন শিবম। একই ম্যাচে অর্ধশতক ও উইকেট তোলার নজির নেই হার্দিকের। সেই বিরল কৃতিত্বেরও মালিক হয়েছেন মুম্বইয়ের অলরাউন্ডার। আপাতত চোটের জন্য মাঠের বাইরে হার্দিক। কিন্তু তাঁর পক্ষে সরাসরি দলে ফেরা যে সহজ হবে না, তা সহজেই অনুমেয়।
বোর্ডের আস্থা অর্জন করেছেন দুই নতুন তারকা-
জাতীয় দলে যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal) ও শিবম দুবে (Shivam Dube) যে লম্বা রেসের ঘোড়া হতে চলেছেন, তা ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই-এর পদক্ষেপ থেকেই বোঝা যায়। আগামী ফেব্রুয়ারি বা মার্চে ২০২৩-২৪ মরসুমের জন্য কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করার কথা বোর্ডের। সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর যে প্রথমবারের জন্য কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় আনা হতে পারে যশস্বী ও শিবম দুবে’কে। গত মরসুমে যে কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করা হয়েছিলো তাঁর আওতায় ছিলেন ২৬ ক্রিকেটার। পরবর্তী মরসুমের জন্য কতজনকে কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায় আনা হয়, নজর থাকবে সেইদিকে।
গতবারের চুক্তি অনুযায়ী এ+ গ্রেডে ছিলেন চার ক্রিকেটার। তাঁরা বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, জসপ্রীত বুমরাহ ও রবীন্দ্র জাদেজা। বছরে ৭ কোটি টাকা পাওয়ার কথা তাঁর। গ্রেড-এ তে থাকা পাঁচ ক্রিকেটার হার্দিক পান্ডিয়া, মহম্মদ শামি, ঋষভ পন্থ, রবিচন্দ্রণ অশ্বিন ও অক্ষর প্যাটেলে পেয়েছেন বার্ষিক ৫ কোটি টাকা। গ্রেড বি-তে ক্রিকেটার সংখ্যা ৬। চেতেশ্বর পূজারা, কে এল রাহুল, মহম্মদ সিরাজ, সূর্যকুমার যাদব, শ্রেয়স আইয়ার ও শুভমান গিল। তাঁরা পাচ্ছেন ৩ কোটি টাকা। আগামী মরসুমের চুক্তিতে বাদ পড়তে পারেন চেতেশ্বর পূজারা। গ্রুপ সি’তে ছিলেন ১১ ক্রিকেটার। তাঁরা পেয়েছেন বার্ষিক ১ কোটি টাকা করে। উমেশ যাদব, দীপক হুডা, শিখর ধাওয়ান-দের মত যাঁরা গ্রুপ-সি’তে থাকা সত্ত্বেও দীর্ঘদিন ভারতীয় দলের হয়ে খেলেন নি, তাঁরা বাদ পড়তে পারেন এবারের চুক্তি থেকে।