ভারতীয় ক্রিকেটের শ্রেষ্ঠতম তারকাদের নামের তালিকা তৈরি করতে বসলে উপরের দিকেই লিখতে হবে মহেন্দ্র সিং ধোনি’র (MS Dhoni) নাম। ২০০৪ সালে আন্তর্জাতিক অভিষেক হয় তাঁর। মাত্র তিন বছরের মধ্যে পেয়েছিলেন অধিনায়কের দায়িত্ব। টি-২০ বিশ্বকাপে সিনিয়র’রা বিশ্রাম নেওয়ায় তাঁকে নেতা বেছে নিয়েছিলো বিসিসিআই। সেই এক সিদ্ধান্তেই বদলে যায় ভারতীয় ক্রিকেটের গতিপথ। প্রথম সুযোগেই দলকে ট্রফি এনে দেন ধোনি (MS Dhoni) । জেতেন টি-২০ বিশ্বকাপ। এর ঠিক চার বছর পর তাঁর হাত ধরে ওয়ান ডে বিশ্বকাপ’ও জেতে ‘মেন ইন ব্লু।’ অবসান হয় ২৮ বছরের অপেক্ষার। ২০১৩তে ফের নজির গড়েন ধোনি। ছিনিয়ে নেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। রাঁচির মেকন কলোনি থেকে ক্রিকেট দুনিয়ার সর্বোচ্চ শিখরে পা রাখার লড়াইটা সহজ ছিলো না ধোনি’র জন্য। কিন্তু নিজের উপর আস্থা আর কঠিন পরিশ্রমেই সেই অসম্ভবকে সম্ভব করেছিলেন তিনি।
Read More: IND vs ENG 2nd Test: আইসিসি’র নিয়ম ভেঙে বিতর্কে শুভমান, হতে পারেন নির্বাসিত !!
ঘাম ঝরিয়েই সাফল্য পেয়েছেন ধোনি-

কিশোর বয়সে ফুটবল খেলতেই ভালোবাসতেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni) । গোলকিপার হিসেবে নামডাকও ছিলো তাঁর। একদিন স্কুল ক্রিকেট দলের উইকেটরক্ষক উপস্থিত না থাকায় তাঁকে মাঠে নামার প্রস্তাব দেন কোচ কেশব চন্দ্র বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই একটা সিদ্ধান্তই জীবন বদলে দেয় তাঁর। দস্তানা হাতে তেকাঠির নীচে যেমন সাবলীল ছিলেন, তেমনই স্টাম্পের পিছনেও নজর কাড়েন তিনি। সাথে ব্যাট হাতেও রাখেন প্রতিভার স্বাক্ষর। একের পর এক ধুন্ধুমার ইনিংস খেলে দ্রুত সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকেন ধোনি (MS Dhoni) । বয়সভিত্তিক ক্রিকেটে অসামান্য পারফর্ম্যান্সের পর ১৯৯৯-২০০০ সালে বিহারের হয়ে অভিষেক হয় তাঁর। ২০০১ সালে দক্ষিণ-পূর্ব রে্লে চাকরি পান ধোনি। পোস্টিং হয় পশ্চিমবঙ্গের খড়্গপুরে। ক্রিকেটের পাশাপাশি টিকিট পরীক্ষকের কাজও সেই সময় সামলাতে হয়েছে তাঁকে।
রঞ্জি ট্রফি, দেওধর ট্রফির মত টুর্নামেন্টে ঝাড়খণ্ড বা পূর্বাঞ্চলের হয়ে ধোনি’র পারফর্ম্যান্স নজর এড়ায় নি নির্বাচকদের। ভারত-এ দলে সুযোগ দেওয়া হয় তাঁকে। জিম্বাবুয়ে ও কেনিয়া সফরে সফল হয়েছিলেন ধোনি। ২০০৪-এর ডিসেম্বরে বাংলাদেশ সফরে যাওয়ার কথা ছিলো ভারতীয় সিনিয়র দলের। উইকেটরক্ষক হিসেবে দীনেশ কার্তিক ও মহেন্দ্র সিং ধোনি’র মধ্যে থেকে দ্বিতীয় জনকে বেছে নেন তৎকালীন ভরত অধিনায়ক সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের দরজা খুলে যায় ঝাড়খণ্ডের তরুণের সামনে। অভিষেক ম্যাচে শূন্য করে ফিরেছিলেন সাজঘরে। ব্যর্থতা সত্ত্বেও পাশে পেয়েছিলেন অধিনায়ক’কে। বিশাখাপত্তনমে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে একটি ওয়ান ডে ম্যাচে ধোনি’কে (MS Dhoni) নিজের জায়গা ছেড়ে দেন সৌরভ। ধুন্ধুমার ১৪৮ করে ঝাড়খণ্ডের তরুণ বুঝিয়ে দেন যে বাইশ গজ শাসন করতেই এসেছেন তিনি।
MS ধোনি’র কিছু উল্লেখযোগ্য রেকর্ড-

দেড় দশক ভারতীয় জার্সিতে মাঠে নেমেছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni) । ২০০৪ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে যে যাত্রাপথের সূচনা হয়েছিলো তা থেমেছে ২০১৯-এ নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে। দীর্ঘ কেরিয়ারে টেস্ট, ওয়ান ডে ও টি-২০ মিলিয়ে ৫৩৮টি ম্যাচে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন ঝাড়খণ্ডের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। লাল বলের ক্রিকেটে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৪৮৭৬ রান। সীমিত ওভারের দুই ফর্ম্যাটে করেছেন যথাক্রমে ১০৭৭৩ ও ১৬১৭ রান। সবচেয়ে কম ইনিংস খেলে ওয়ান ডে’তে আইসিসি র্যাঙ্কিং-এর শীর্ষে পৌঁছানোর নজির রয়েছে তাঁর। পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে ৮৪ বার নট-আউট থেকেও নজির গড়েছেন তিনি। পেয়েছেন ‘শ্রেষ্ঠ ফিনিশার’ তকমা। অধিনায়ক হিসেবে ধোনি’র (MS Dhoni) শ্রেষ্ঠত্ব প্রশ্নাতীত। আইসিসি আয়োজিত তিনটি সীমিত ওভারের টুর্নামেন্টজয়ী একমাত্র অধিনায়ক তিনি। পাশাপাশি আইপিএলের ইতিহাসেও সফলতম নেতা ধোনিই।
Also Read: আইপিএলের আগে দল বদলালেন সঞ্জু স্যামসন, বিপুল টাকায় কিনলো এই ফ্রাঞ্চাইজি !!