আইপিএল ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিদেশী তারকা কারা? তালিকা তৈরি করতে বসলে এবি ডিভিলিয়ার্স, লাসিথ মালিঙ্গাদের মতই উপরের সারিতে নাম থাকবে ক্রিস গেইলেরও (Chris Gayle)। ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগে কেরিয়ার শুরু করেছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্সের জার্সিতে। ২০১১তে যোগ দেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরুতে। ‘গার্ডেন সিটি’র ফ্র্যাঞ্চাইজিতেই জীবনের সেরা সময়টা কাটিয়েছেন গেইল (Chris Gayle)। ট্রফি জেতেন নি ঠিকই। কিন্তু জিতেছেন অরেঞ্জ ক্যাপ। একের পর এক ছক্কা হাঁকিয়ে মাতিয়েছেন চিন্নাস্বামীর গ্যালারি। বিরাট কোহলি ও এবি ডিভিলিয়ার্সের সাথে তাঁর ত্রয়ীর স্মৃতি এখনও উজ্জ্বল অনুরাগীদের মনে। ২০১৮ সালে বেঙ্গালুরু ছেড়ে পাঞ্জাবে গিয়েছিলেন তিনি। ২০২১ অবধি ছিলেন সেখানে। দীর্ঘ আইপিএল কেরিয়ারের এই শেষ অধ্যায়টিই তাঁর অসন্তোষের কারণ, সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন তিনি।
Read More: অস্ট্রেলিয়া সিরিজের আগে ‘ফ্লপ’ শ্রেয়স আইয়ার, প্রশ্ন উঠে গেলো নেতৃত্ব পাওয়া নিয়ে !!
পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে তোপ গেইলের-

সম্প্রতি সাংবাদিক শুভঙ্কর মিশ্রের পডকাস্ট অনুষ্ঠানে অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়েছিলেন ক্রিস গেইল (Chris Gayle)। আইপিএল অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণের সময় প্রীতি জিন্টার পাঞ্জাব কিংসের (PBKS) বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এনেছেন ক্যারিবিয়ান প্রাক্তনী। তিনি বলেছেন, “নির্দিষ্ট সময়েই আগেই আমার আইপিএল শেষ হয়ে গিয়েছিলো। সত্যি বলতে পাঞ্জাব ফ্র্যাঞ্চাইজি আমায় অপমান করেছিলো। আমার মনে হয়েছিলো যে আমার মত একজন সিনিয়র খেলোয়াড় যে কিনা লীগের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধির জন্য যথাসাধ্য করেছে, দলের (পাঞ্জাব) দর বাড়াতেও যাঁর বড় ভূমিকা রয়েছে, তাঁকে সঠিক মর্যাদা দেওয়া হচ্ছিলো না। আমার সাথে একজন বাচ্চার মত আচরণ করা হচ্ছিলো। আমার মনে হয়েছিলো যে আমার কাঁধেই চাপ পড়ছে। জীবনে প্রথমবার অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলাম। তাই কেউ অবসাদের কথা বললে আমি তা বুঝতে পারি।”
পাঞ্জাব ফ্র্যাঞ্চাইজির উপর বীতশ্রদ্ধ হয়ে অর্থ, যশের চিন্তা না করেই সরে দাঁড়িয়েছিলেন, সাফ বলেছেন গেইল (Chris Gayle)। জানান, “আমি জানি যে এটাই (খেলা) আমাদের পেশা। কিন্তু ঐ সময়ে টাকার তেমন মূল্য ছিলো না আমার কাছে। টাকার প্রয়োজন ছিলো না। মানসিক স্বাস্থ্যকেই অগ্রাধিকার দিতে হয়। আমি অনিলের (কুম্বলে) সাথে মুখোমুখি বসে কথা বলি। ওকে জানাই যে আমি দল ছাড়ছি। তখন টি-২০ বিশ্বকাপও ছিলো। আর আমরা একটা বাব্ল-এর মধ্যে থাকছিলাম। যার বাইরে যাওয়া যেত না। ফলে মানসিক শান্তিও ছিলো না। একটা দ্বিধাগ্রস্ত অবস্থা ছিলো যা কিনা মানসিক ভাবে আপনাকে ধ্বংস করে দিচ্ছিলো। ভিতরে ভিতরে আমিও ধ্বংস হয়ে যাচ্ছিলাম। মুম্বইয়ের (ইন্ডিয়ান্স) বিপক্ষে শেষ ম্যাচটা খেলার পর আমি ভেবেছিলাম, ‘এটা অর্থহীন। শান্তিতে থাকার চেয়ে নিজের বেশী ক্ষতি করছি বরং।”
রাহুলের অনুরোধও রাখেন নি গেইল-

কোচ কুম্বলের সাথে তাঁর যে মতপার্থক্য ছিলো তা পডকাস্ট অনুষ্ঠানে স্বীকার করে নিয়েছেন ক্রিস গেইল (Chris Gayle)। তিনি জানিয়েছেন, “আমি ওকে (কুম্বলে) ফোন করেছিলাম। সিদ্ধান্তের ব্যাখ্যা দিয়েছিলাম। ওর সাথে কথা বলছিলাম কারণ আমি সত্যিই আহত হয়েছিলাম সেই সময়। কেঁদে ফেলেছিলাম। অনিলের (কুম্বলে) আচরণ আমার ভালো লাগে নি। গোটা ফ্র্যাঞ্চাইজিই তখন যেভাবে সামলানো হচ্ছিলো তাও পছন্দ হয় নি।” তৎকালীন পাঞ্জাব অধিনায়ক কে এল রাহুল যে তাঁকে সিদ্ধান্ত পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছিলেন, তাও মেনে নিয়েছেন ইউনিভার্স বস। বলেছেন, “তখন অধিনায়ক ছিলেন কে এল রাহুল। ও আমায় কল করে বলে, ‘ক্রিস তুমিও জানো যে তুমি থাকতেই চাও। তুমি পরের ম্যাচটা খেলবে।’ আমি তখন বলেছিলাম, ‘শোনো ভাই আমি তোমাদের সাফল্য কামনা করি।’ এরপর নিজের ব্যাগ গুছিয়ে বেরিয়ে যাই।”
Also Read: নেতৃত্বে শ্রেয়স আইয়ার, ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ভারতীয় দলে থাকছেন ঈশান-পৃথ্বী’রা !!