টি-২০ বিশ্বকাপে ভারতের জয়ের অন্যতম কারিগর জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। গতি, নিয়ন্ত্রণ ও সুইং-এর জাদুতে প্রতিপক্ষকে নাস্তানাবুদ করতে দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে কঠিন মুহূর্তে মহম্মদ রিজওয়ানকে আউট করে ম্যাচের গতি পালটে দিয়েছিলেন তিনি। ফাইনালেও দেখা যায় বুমরাহ’র (Jasprit Bumrah) ইন্দ্রজাল। একটা সময় সহজ জয়ের দিকে এগোচ্ছিলো দক্ষিণ আফ্রিকা। ডেথ ওভারে ম্যাচের মোড় ঘুরিয়েছিলেন বুমরাহ’ই। দুর্দান্ত ডেলিভারিতে ইয়ানসেনকে ফিরিয়ে দেন তিনি। আটকে দেন রানের গতি। ১৫ উইকেট নিয়ে টুর্নামেন্টের সেরা ক্রিকেটারের পুরষ্কার পেয়েছিলেন। শুধু টি-২০ বিশ্বকাপ নয়, চোট সারিয়ে গত বছর মাঠে ফেরার পর থেকেই ধারাবাহিক তিনি। এশিয়া কাপ, ওডিআই বিশ্বকাপেও করেছেন দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্স। সেরা বোলিং অস্ত্রকে তাই রেখেঢেকে ব্যবহার করতে চাইছে টিম ইন্ডিয়া।
Read More: ৬, ৬, ৬, ৪, ৪, ৪…শুভমানের ব্যাটে ধুন্ধুমার ‘ডাবল সেঞ্চুরি’, ৪ ছক্কা ও ২৯টি বাউন্ডারিতে সাজালেন ইনিংস !!
টেস্ট সিরিজে দেখা যাবে না বুমরাহ’কে-
টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) পর থেকেই জাতীয় দলের বাইরে রয়েছেন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে তরুণ তুর্কিদের নিয়ে দল সাজিয়েছিলো ভারত। স্বাভাবিক কারণেই স্কোয়াডে ছিলেন না তারকা পেসার। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধেও টি-২০তে দেখা যায় নি তাঁকে। লঙ্কানদের বিপক্ষে ওডিআই-তে বিরাট কোহলি (Virat Kohli), রোহিত শর্মাদের (Rohit Sharma) মত মহাতারকাদের ফেরানো হলেও মাঠের বাইরেই রাখা হয়েছিলো ডান হাতি ফাস্ট বোলারকে। বুমরাহ-হীন বোলিং যে বেশ নড়বড়ে তা বোঝা গিয়েছে দ্বীপরাষ্ট্রের বাইশ গজে। প্রায় মাস তিনেকের ছুটি কাটিয়ে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে মাঠে ফিরতে পারেন তিনি, ভেবেছিলেন ক্রিকেট বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে খবর যে বুমরাহকে এখনিই ফেরানোর পথে হাঁটছেন না নির্বাচকেরা।
বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ১৩টি টেস্ট খেলেছে ভারত। জিতেছে ১১টিতে। ড্র ২টি। ২০২৩-২৫ বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) সাইকেলের অংশ হলেও বাংলাদেশ সিরিজকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে দেখতে নারাজ বিসিসিআই। সেই কারণেই বুমরাহ’কে (Jasprit Bumrah) বাড়তি বিশ্রাম দেওয়ার কথা ভাবছে তারা। বোর্ডের ফোকাসে নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে আয়োজিত হতে চলা ৮টি টেস্ট। দেশের সেরা ফাস্ট বোলারকে কিউই ও ব্যগি গ্রিনদের বিরুদ্ধে তরতাজা অবস্থায় চাইছে দল।সবকিছু ঠিক থাকলে ১৬ অক্টোবর বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে লাল বল হাতে রান-আপে দেখা যেতে পারে বুমরাহ’কে (Jasprit Bumrah)। ২৪ অক্টোবর ও ১ নভেম্বর থেকে রয়েছে নিউজিল্যান্ড সিরিজের বাকি টেস্ট দুটি। তারপর অস্ট্রেলিয়া উড়ে যাবে ভারত।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরছেন রোহিত-বিরাট-
ঘরোয়া ক্রিকেটকে যে সর্বোত্তম গুরুত্ব দেওয়া হবে তা আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন বোর্ড সচিব জয় শাহ (Jay Shah)। টিম ইন্ডিয়ার ক্রিকেটারদেরও যে সুযোগ থাকলে ঘরোয়া ক্রিকেটে অংশ নেওয়া বাধ্যতামূলক, তাও জানানো হয়েছিলো। মাসকয়েক আগে বিসিসিআই-এর এই নির্দেশ অগ্রাহ্য করে শাস্তির কবলে পড়তে হয়েছিলো ঈশান কিষণ (Ishan Kishan) ও শ্রেয়স আইয়ারকে (Shreyas Iyer)। কেন্দ্রীয় চুক্তি থেকে বাদ পড়েন তাঁরা। সূর্যকুমার যাদব, সরফরাজ খানের মত ক্রিকেটাররা ইতিমধ্যেই জানিয়েছেন যে বুচিবাবু টুর্নামেন্টে অংশ নেবেন তাঁরা। নীতি একই থাকছে কোহলি-রোহিতদের (Rohit Sharma) মত সুপারস্টারদের জন্যও। দীর্ঘ সময় পর দুই মহারথীকেও দেখা যাবে ঘরোয়া ক্রিকেটের আঙিনায়, খবর সংবাদমাধ্যম ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস সূত্রে। নবসাজে সজ্জিত দলীপ ট্রফিতে দেখা যাবে তাঁদের।
২০১২ সালে শেষ রঞ্জি ম্যাচ খেলেছেন কোহলি (Virat Kohli)। ২০১৬ সালে শেষবার ভারত-ব্লু’এর হয়ে খেলেছিলেন দলীপ ট্রফি। প্রায় এক দশক পর ঘরোয়া ক্রিকেটের মাঠে ফিরতে চলেছেন তিনি। ৫ থেকে ১৪ সেপ্টেম্বর আয়োজিত হতে চলেছে দলীপ ট্রফি (Duleep Trophy) l দিনকয়েকের মধ্যেই ভারত-এ, ভারত-বি, ভারত-সি ও ভারত-ডি দলের স্কোয়াড ঘোষণা করবেন অজিত আগরকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি। কেবল কোহলি ও রোহিত নয়, একইসাথে শুভমান গিল (Shubman Gill), কে এল রাহুল, রবীন্দ্র জাদেজা (Ravindra Jadeja), যশস্বী জয়সওয়াল, সূর্যকুমার যাদব, কুলদীপ যাদব, অক্ষর প্যাটেলদের মত জাতীয় দলের তারকাদেরও এই টুর্নামেন্টে খেলার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামনে রয়েছে দীর্ঘ টেস্ট মরসুম, তার প্রস্তুতির জন্যই লাল বলের এই প্রতিযোগিতা জরুরী বলে মনে করছে বিসিসিআই।