রাহুল দ্রাবিড় (Rahul Dravid) যে দ্বিতীয় দফায় ভারতীয় দলের (Team India) কোচ থাকছেন না তা স্পষ্ট হয়েছিলো দিনকয়েক আগেই। নতুন কোচের পদে আবেদন করার অনুরোধ জানিয়েছিলো BCCI। প্রকাশ করা হয়েছিলো বিজ্ঞপ্তি। বোর্ডের তরফ থেকে যে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে, স্পষ্ট হয়েছিলো তাও। জুন মাসের ২৯ তারিখ অবধি রয়েছে টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup)। ঠিক তারপরেই দায়িত্ব নেওয়ার কথা নতুন কোচের। চুক্তির মেয়াদ হতে চলেছে ২০২৭-এর ডিসেম্বর অবধি। অর্থাৎ হটসিটে যেই বসুন, তাঁর অধীনেই ভারতীয় দল খেলতে চলেছে ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, ২০২৬-এর টি-২০ বিশ্বকাপ ও ২০২৭-এর ওডিআই বিশ্বকাপ। ফলে ভেবেচিন্তেই পদক্ষেপ নিচ্ছে বোর্ড।
২৭ মে ভারতীয় সময় সন্ধ্যে ৬টা অবধি আবেদনের সময়সীমা বেঁধে দেওয়া হয়েছিলো। BCCI সূত্রে খবর মিলেছে যে জমা পড়েছে প্রায় ৩০০০ আবেদনপত্র। যদিও এর মধ্যে অধিকাংশই ভুয়ো। গুগল ফর্মের মাধ্যমে আবেদনের সুবিধা থাকায় দেশ-বিদেশের বহু সাধারণ ক্রিকেট অনুরাগী জনতাও আবেদন করে বসেছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli), রোহিত শর্মা, শুভমান গিলদের হেডস্যর হতে চেয়ে। প্রাথমিক ভাবে শোনা যাচ্ছিলো রিকি পন্টিং, স্টিফেন ফ্লেমিং, জাস্টিন ল্যাঙ্গারদের নাম। যদিও প্রকাশ্যেই দায়িত্ব নিতে অস্বীকার করেন পন্টিং ও ল্যাঙ্গার। পরে BCCI সচিব জয় শাহ (Jay Shah) স্পষ্ট করে দেন যে বোর্ডের তরফে কারও কাছেই কোনো প্রস্তাব নিয়ে যাওয়া হয় নি। এরপরেই আইপিএলের সাফল্যের সুবাদে দ্রাবিড়ের উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে ‘ফেভারিট’ হয়ে ওঠেন গম্ভীর (Gautam Gambhir)।
Read More: ভিডিও: রণংদেহী মেজাজে পাকিস্তানী পেসার হারিস রউফ, ‘ভারতীয়’ ভেবে মারতে গেলেন সমর্থককে !!
আজ কোচ হিসেবে নিযুক্ত হতে পারেন গম্ভীর-
খেলোয়াড় হিসেবে ক্রিকেটকে বিদায় জানানোর বেশ কয়েক বছর মেন্টর হিসেবে বাইশ গজের দুনিয়ায় ফেরেন গৌতম গম্ভীর (Gautam Gambhir)। যোগ দেন লক্ষ্ণৌ সুপারজায়ান্টস (LSG) শিবিরে। দুই বছর ছিলেন সেখানে। এরপর ২০২৪-এর আইপিএলের আগে তিনি নাম লিখিয়েছিলেন কলকাতা নাইট রাইডার্স (KKR) দলে। অধিনায়ক হিসেবে একটা সময় ‘সিটি অফ জয়’কে উপহার দিয়েছিলেন জোড়া আইপিএল (IPL) ট্রফি, মেন্টর হিসেবে প্রথম মরসুমেই দিয়েছেন খেতাব। তারকাখচিত দলকে যেভাবে সামলেছেন তিনি তাকে সাধুবাদ জানাতে বাধ্য হয়েছেন সকলে। সুনীল নারাইন’কে (Sunil Narine) ওপেনিং-এ তুলে আনা, মিচেল স্টার্কের উপর আস্থা রাখার মত সিদ্ধান্ত মাস্টারস্ট্রোক হয়েছে কলকাতার জন্য। আইপিএলে গম্ভীরের ‘মগজাস্ত্র’-এর সঠিক প্রয়োগই গম্ভীরকে জাতীয় কোচের দৌড়ে এনে দিয়েছে।
আইপিএল ফাইনালের দিনই জয় শাহের সাথে আলাদা ভাবে কথা বলতে দেখা গিয়েছিলো গৌতম গম্ভীরকে (Gautam Gambhir)। তখনই শুরু হয়েছিলো গুঞ্জন। পরে এক খুদে ভক্তের প্রশ্নের উত্তরে গম্ভীর নিজেই জানান যে কোচ হতে আপত্তি নেই তার। বরং তা তাঁর জন্য সম্মানেরই হবে। বিভিন্ন সূত্র থেকেও খবর মিলেছিলো যে প্রাক্তন বাম হাতি ওপেনারকেই চূড়ান্ত করেছে BCCI। আজ অবশেষে কোচ নিয়োগ নিয়ে চলতে থাকা নাটকের যবনিকা পড়ার সম্ভাবনা দেখা গিয়েছে। জানা গিয়েছে যে মুম্বইতে বোর্ডের সদর দপ্তরে আজই বোর্ডের ক্রিকেট অ্যাডভাইজরি কমিটির মুখোমুখি হয়ে ইন্টারভিউ দিতে চলেছেন গম্ভীর (Gautam Gambhir)। হেভিওয়েট প্রার্থী হিসেবে রয়েছেন কেবল তিনিই। ফলে সাক্ষাৎকার শেষে তাঁর হাতেই যে ব্যাটন তুলে দেওয়া হবে তা এক প্রকার নিশ্চিত।
রদবদল নির্বাচক কমিটিতেও-
ভারতীয় দলের নতুন কোচ নির্বাচনের পাশাপাশি BCCI-এর ক্রিকেট অ্যাডভাইজরি কমিটি (CAC) টিম ইন্ডিয়ার নির্বাচকমণ্ডলীর নবতম সদস্যকেও বেছে নেবে আজ। গত বছরের জানুয়ারিতে নতুন নির্বাচকমণ্ডলীর নাম ঘোষণা করা হয়েছিলো। পূর্বাঞ্চল থেকে ছিলেন শিবসুন্দর দাস (Shiv Sundar Das), পশ্চিমাঞ্চল থেকে সলীল আঙ্কোলা (Salil Ankola), মধ্যাঞ্চল বা সেন্ট্রাল জোনের প্রতিনিধি হিসেবে ছিলেন সুব্রত বন্দ্যোপাধ্যায় (Subroto Banerjee) ও নর্থ জোন বা উত্তরাঞ্চল থেকে ছিলেন চেতন শর্মা (Chetan Sharma)। এর মধ্যে চেতন শর্মাকেই মুখ্য নির্বাচকের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু মাসখানেকের মধ্যেই দেখা যায় সমস্যা। একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলের গোপন ক্যামেরার সামনে বিতর্কিত মন্তব্য করে বোর্ডের অস্বস্তি বাড়িয়েছিলেন চেতন। সরে যেতে হয় তাঁকে।
মুখ্য নির্বাচকের অপসারণের পর দীর্ঘ সময় ফাঁকাই ছিলো সেই চেয়ার। শিবসুন্দর দাসকে অন্তর্বর্তীকালীন দায়িত্ব সামলাতে দেখা গিয়েছিলো। শেষমেশ অজিত আগরকারকে (Ajit Agarkar) নিয়োগ করা হয়। গত বছরের এশিয়া কাপ, ওডিআই বিশ্বকাপ থেকে চলতি বছরের টি-২০ বিশ্বকাপ-সব টুর্নামেন্টের দল নির্বাচনেই বড় ভূমিকা রেখেছিলেন আগরকার। কিন্তু তাঁর নিয়োগের পর নতুন সমস্যা দেখা দেয়। আগরকার মুম্বইয়ের ক্রিকেটার ছিলেন। ফলে নির্বাচক কমিটিতে পশ্চিমাঞ্চলের দুই প্রতিনিধি হয়ে পড়ে, উত্তরাঞ্চলের পদটি ফাঁকাই থেকে যায়। এক সমস্যার সমাধান করতে চলেছে BCCI। সলীল আঙ্কোলাকে সরিয়ে দেওয়া হতে চলেছে। বদলে উত্তরাঞ্চল থেকে কাউকে নির্বাচন করা হতে পারে। হেভিওয়েট কাউকে চাইছে বোর্ড। রেডারে রয়েছে যুবরাজ সিং-এর নাম।