সিনিয়রদের ক্রিকেটে বিশেষ সাফল্য পায় নি বাংলাদেশ। দিনকয়েক আগেই ওডিআই বিশ্বকাপের আসরে মুখ থুবড়ে পড়তে হয়েছিলো শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan), মাহমুদুল্লাহ রিয়াদদের। নেদারল্যান্ডসের মত র্যাঙ্কিং-এ অনেক পিছিয়ে থাকা দলের বিরুদ্ধেও জোটে নি সাফল্য। কোনোক্রমে জুটেছে ২০২৫-এর চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির ছাড়পত্র। তারও আগে সেপ্টেম্বর মাসের এশিয়া কাপ থেকেও ফিরতে হয়েছিলো খালি হাতে। গুরুত্বহীন ম্যাচে ভারতকে হারানো ছাড়া কোনো কৃতিত্বই নিজেদের ঝুলিতে ভরতে পারেন নি শাকিব, মুশফিকরা। ফাইনালে পৌঁছানো সক্ষম হয় নি তাদের পক্ষে। টাইগার্সদের সিনিয়র দলের অন্দরে যখন বিশৃঙ্খলা, তখন মান রাখলেন তরুণ তুর্কিরা। গতকাল ছিলো বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। আর আজ প্রথমবার এশিয়া সেরা হয়ে দেশবাসীকে দুর্দান্ত এক উপহার দিলো টাইগার্সদের অনুর্দ্ধ-১৯ দল।
সংযুক্ত আরব আমিরশাহীতে বসেছিলো অনুর্দ্ধ-১৯ এশিয়া কাপের আসর। অংশ নিয়েছিলো আট দল। উপমহাদেশের ক্রিকেটের চার হেভিওয়েট ভারত, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা ও বাংলাদেশের সঙ্গে অংশ নিয়েছিলো জাপান, নেপাল, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী ও আফগানিস্তান’ও। গ্রুপ পর্বের ম্যাচের পর সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছিলো ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তান। ৮ বারের চ্যাম্পিয়ন ভারতের বিরুদ্ধে সেমিফাইনালে দারুণ জয় ছিনিয়ে নেয় বাংলাদেশ। ৭ ওভার ১ বল বাকি থাকতেই ৪ উইকেটের ব্যবধানে জেতে তারা। অপর সেমিফাইনালে চমকে দিয়েছিলো সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। আইসিসি’র পূর্ণ সদস্য না হয়েও তারা শেষ চারের যুদ্ধে উড়িয়ে দিয়েছিলো পাকিস্তানকে। জায়গা করে নিয়েছিলো খেতাবী যুদ্ধে।
Read More: SA vs IND: ব্যাটে-বলে একচ্ছত্র আধিপত্য ভারতের, দক্ষিণ আফ্রিকাকে গুঁড়িয়ে ৮ উইকেটের ব্যবধানে জয় ‘মেন ইন ব্লু’র !!
ফাইনালের লড়াইতে জয়ী বাংলাদেশ-
দুবাই আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আজ অর্থাৎ রবিবার আয়োজিত হয় অনুর্দ্ধ-১৯ এশিয়া কাপের ফাইনাল ম্যাচটি। টসে জিতে প্রথমে ফিল্ডিং-এর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। ধারেভারে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশ শুরু থেকেই ছিলো বিধ্বংসী মেজাজে। ব্যক্তিগত ৭ রানের মাথায় ওপেনার জিশান আলম ফেরেন। দলের স্কোরবোর্ডে তখন মাত্র ১৪। তা সত্ত্বেও আক্রমণের রাস্তা থেকে সরেন নি আরেক ওপেনার আশিকুল রহমান শিবলি। এই তরুণ উইকেটরক্ষক-ব্যাটার গোটা টুর্নামেন্টেই নজর কেড়েছেন। আজও প্রথমে চৌধুরী মহম্মদ রিজওয়ান ও পরে আরিফুল ইসলামকে সঙ্গে করে বাংলাদেশ ইনিংসের ভিত গড়েন তিনি। রিজওয়ান ৬০ ও আরিফুল ৫০ করেন। ১৪৯ বলে ১২৯ করেন শিবলি।
প্রতিপক্ষের জন্য ২৮৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা বেঁধে দেয় বাংলাদেশের অনুর্দ্ধ-১৯ দল। বড় রান তাড়া করতে নেমে ইনিংসের গোড়াতেই কেঁপে গিয়েছিলো সংযুক্ত আরব আমিরশাহী। ৯ রান করেই আউট হন ওপেনার আর্যাংশ শর্মা। ১১ রানের বেশী করতে পারেন নি আরেক ওপেনার অক্ষত রাই’ও। তানিশ সূরি, ইথান ডি’সুজা’রাও ফেরেন একের পর এক। চার নম্বরে নামা ধ্রুব পরাশর লড়াইয়ের চেষ্টা করেছিলেন বটে। কিন্তু তাঁর ইনিংসও ২৫ রানের বেশী এগোয় নি। বাংলাদেশের হয়ে মারুফ মৃধা, রোহানাত দৌলা বর্ষণ ৩টি করে উইকেট নেন। ইকবাল হোসেন ইমন ও শেখ পারভেজ জীবনের ঝুলিতে জমা পড়ে ২টি করে উইকেট। মাত্র ৮৭ রানেই গুটিয়ে যায় সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর ইনিংস। ১৯৫ রানের ব্যবধানে এশিয়া কাপ জেতে বাংলাদেশের যুব দল।
এক নজরে অনুর্দ্ধ-১৯ এশিয়া কাপ জয়ী দলগুলি-
বছর | জয়ী দল | রানার্স আপ |
১৯৮৯ | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
২০০৩ | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
২০১২ | ভারত ও পাকিস্তান যুগ্মজয়ী | X |
২০১৩-১৪ | ভারত | পাকিস্তান |
২০১৬ | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
২০১৭ | আফগানিস্তান | পাকিস্তান |
২০১৮ | ভারত | বাংলাদেশ |
২০১৯ | ভারত | বাংলাদেশ |
২০২১ | ভারত | শ্রীলঙ্কা |
২০২৩ | বাংলাদেশ* | সংযুক্ত আরব আমিরশাহী |