শাকিব আল হাসানের (Shakib Al Hasan) সাথে বিতর্ক যেন একসুতোয় গাঁথা। ক্যারিয়ারে নানা সময়ে নানা কারণের জন্যই বিতর্কে জড়িয়ে থাকেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার। মাঠের মধ্যে কখনও সতীর্থের সঙ্গে বাজে আচরণ কিংবা ক্রিকেটের নিয়ম লঙ্ঘন করা লেগেই রয়েছে শাকিবের সঙ্গে। বিশ্ব ক্রিকেটে নিজেকে সেরাদের তালিকাতে থাকলেও তার ক্যারিয়ার জুড়ে রয়েছে বিতর্ক। অ্যাঞ্জেলো ম্যাথিউসের বিরুদ্ধে বিতর্কিত আবেদন করার জন্য চলমান ওয়ানডে বিশ্বকাপ 2023-এ শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক ম্যাচে সমালোচনার মুখোমুখি হয়েছেন বাঁ-হাতি ব্যাটার। গতকাল শ্রীলঙ্কার ব্যাটসম্যান এঞ্জেলো ম্যাথিউজ (Angelo Mathews)।
নিয়ম অনুযায়ী একজন ব্যাটার আউট হওয়ার তিন মিনিটের মধ্যে পরবর্তী ব্যাটারকে বলের মোকাবিলা করতে প্রস্তুত হতে হয়। কিন্তু ক্রিজে এসে হেলমেট নিয়ে সমস্যায় পড়েছিলেন ম্যাথিউজ। তবে তিন মিনিটের মধ্যে হেলমেটের সমস্যা না মেটানোর জন্য মাথিউজকে বাংলাদেশ অধিনায়ক শাকিব আল হাসান (Shakib Al Hasan) আপিল করেন এবং বাধ্য হয়েই আম্পায়ার ম্যাথিউজকে আউট দিয়ে দেন। আর এই ঘটনা নিয়ে তৈরি হয়েছে বেশ বিতর্ক। তবে, শাকিবের শুধু একটা বিতর্ক নয়, এর আগেও বিতর্কে জড়িয়েছেন বাংলাদেশি ক্যাপ্টেন।
১. দর্শকের উদ্দেশ্যে বাজে আচরণ
দর্শকদের উদ্দেশ্যে দুইবার শাকিবকে বেশ বিতর্কে জড়াতে দেখা গিয়েছিল। প্রথমত ২০১০ সালে বিতর্কে জড়ান বাংলাদেশি অধিনায়ক, ভারতের বিপক্ষে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচে ব্যাটিং করছিলেন বাংলাদেশের এই অলরাউন্ডার, সেই সময়েই এক দর্শক সাইট স্ক্রিনে নড়াচড়া করছিলেন এবং তাকে দেখে রিতিমতন রেগে যান শাকিব এমনকি অকথ্য ভাষা ব্যবহারের পাশাপাশি ব্যাট উঁচিয়ে দর্শককে হুমকি দিতে দেখা যায়। এরপর ২০১১ বিশ্বকাপে ওয়েস্ট ইন্ডিজের সঙ্গে ৫৮ রানে অলআউট হয় বাংলাদেশ। সে সময় দলের ক্যাপ্টেন ছিল শাকিব আল হাসান এবং দলের এই পারফরম্যান্স মেনে নিতে পারেনি বাংলাদেশ সমর্থকরা। দর্শকদের উদ্দেশ্যে মিডিল ফিঙ্গার দেখান শাকিব।
২. শাকিব আল হাসান বনাম শ্রীলঙ্কা, নো বল বিতর্ক
নিদাহাস ট্রফির ষষ্ঠ ম্যাচে শেষ ওভারে জয়ের জন্য বাংলাদেশের দরকার ১২ রান। ইসরু উদানার প্রথম বলটি ডট হয়ে যায়। দ্বিতীয় বলটিও একটি মিস করেন মুস্তাফিজুর। এরপর রান চুরি করার চেষ্টা করলেও রানআউট হন তিনি। তবে এখানে তৈরি হয় বিতর্ক, মূলত এই বলটি করার সময়েই বলটা মুস্তাফিজুরের মাথার উপরে ছিল তবুও আম্পায়ার নো বল দেননি। আর মাঠের বাইরে থেকে শাকিব আম্পায়ারদের উদ্দেশ্যে নো বলের ইশারা করছিলেন। কিন্তু তখন আম্পায়ার মুস্তাফিজুরকে রান আউট দিলেও নো-বল দেননি। ঠিক তখনই শাকিব একজন প্লেয়ারকে আম্পায়ারের সঙ্গে কথা বলতে পাঠান। তবে, শ্রীলঙ্কান খেলোয়াড় বিকল্প ফিল্ডারকে চলে যেতে বলেন এবং তাকে অন্য দিকে ঠেলে দেন। এই ধাক্কা কথোপকথন ঝামেলা আরও বাড়িয়ে দেয় এবং খেলোয়াড়রা একে অপরের দিকে আঙুল তুলতে শুরু করেন। আর খেলা তারপর অনেকক্ষণ খেলা বন্ধ ছিল এবং শাকিব তাঁর ব্যাটারদের ফিরে আসার ইঙ্গিত দেন।
৩. আম্পায়ারের সাথে বিতর্ক
ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের একটি ম্যাচে, আম্পায়ার মুশফিকুর রহিমের আউট করার আবেদন এলবিডব্লিউ আবেদন প্রত্যাখ্যান করার পরে শাকিব (Shakib Al Hasan) তার ধৈর্য হারান এবং স্টাম্প,এর উপর লাথি মারেন এবং আম্পায়ারদের সঙ্গে তর্ক করেন।পরে তিনি ক্ষমা চেয়েছিলেন এবং তার আচরণকে ‘মানবিক ত্রুটি’ বলে অভিহিত করেছিলেন। শুধু তাই নয়, প্যাভিলিয়নের ব্যালকনিতে বসে ক্যামেরার দিকে অনুপযুক্ত অঙ্গভঙ্গির জন্য এশিয়া কাপ ২০১৪-এ বাংলাদেশ অধিনায়ককে তিন ম্যাচের জন্য সাসপেন্ড করা হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ম্যাচের সময় তার ক্যামেরার দিকে ইশারা করার জন্য তাকে ৩ লাখ বাংলাদেশী টাকা জরিমানা করা হয়েছিল।