চলতি আইপিএলে পয়েন্ট টেবিলের নীচের দিকেই রয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালুরু। এই মুহুর্তে তারা মরিয়া হয়ে রয়েছে এই প্রতিযোগিতায় বেশ কিছু জয় পেতে। দিল্লি ডেয়ারডেভিলস এবং পাঞ্জাবের বিরুদ্ধে তারা ম্যাচ জিতলেও খুব একটা ভাল প্রদর্শন ছিলতা তাদের ওই ম্যাচে। ইতিমধ্যে এই টুর্নামেন্টে তাদের বোলিংয়ের দুর্বরলতাও প্রকাশ পেয়েছে। ফলে আইপিএলে নতুন প্রবর্তিত ট্রান্সফার উইন্ডো তাদের জন্য স্বস্তির বাতাসই বয়ে নিয়ে আসবে।
তাদের টিম ম্যানেজমেন্ট আশা করছে এই উইন্ড থেকে তারা বেশি কিছু উপযোগী প্লেয়ার তারা তুলে নিতে পারবে,যারা বাকি প্রতিযোগিতায় তাদের জন্য উপযোগী প্রমানিত হবে। বিশেষ করে চাপের মুখে। ট্রান্সফার উইন্ডোতে কোন পাঁচ প্লেয়ারদের দিকে নজর থাকবে একবার দেখে নেওয়া যাক।
অভিষেক শর্মা
আরসিবির দলের এই মুহুর্তে অভাব রয়েছে একজন সঠিক অলরাউন্ডারের। এমন একজন অলরাউন্ডার এখন তাদের প্রয়োজন যিনি প্রয়োজনের সময় ব্যাট এবং বল দু ক্ষেত্রেই দলের হয়ে সঠিক যোগদান দিতে পারবে। যদিও তাদের হাতে পবন নেগীর মত অলরাউন্ডার রয়েছে, কিন্তু এখনও পর্যন্ত তিনি তার পারফর্মেন্সে সিএসকেকে প্রভাবিত করতে পারেন নি। অন্যদিকে শেষ ম্যাচে সিএসকের বিরুদ্ধে একমাত্র মনদীপ সিং ছাড়া আর কোনও ব্যাটসম্যানই প্রভাব ফেলতে পারেন নি। অনুর্ধ্ব ১৯ বিশ্বকাপে ভারতের প্রতিনিধিত্ব করা অভিষেক শর্মা আরসিবির জন্য ইউটিলিটি প্লেয়ার হতে পারেন। শর্মার সক্ষমতা রয়েছে প্রথম বল থেকেই বাউন্ডারি মারতে পারার, যা নিউজিল্যান্ড বিশ্বকাপে তিনি প্রমান করেছেন। এছাড়াও অভিষেকের লেফট আর্ম বোলিং প্রয়োজনে দলকে সহায়তাও করতে পারবে।
শচীন বেবী
আরসিবির জন্য মনদীপ সিংহের আদর্শ ব্যাক হয়ে উঠতে পারেন শচীন বেবী। মনদীপ আরসিবির হয়ে ৬টি ম্যাচেই দুরন্ত বেশ কিছু ইনিংস খেলেছেন। সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে দুরন্ত ফর্ম দেখিয়েছিলেন। ৪৪.৬৬ গড়ে দুটি হাফ সেঞ্চুরিসহ ১৪০ রান করেছেন তিনি। যদিও আরসিবির টপ অর্ডার ভালই ফর্মে রয়েছে। কিন্তু যদি পরিস্থিতি অনুযায়ী তাদের উইকেট হারাহয় তাহলে বেবী তাদের জন্য আদর্শ হতে পারেন ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য বড় পার্টনারশিপ গড়ে। এছাড়াও বেবী পার্টটাইম অফ ব্রেক বোলিংও করতে পারেন যা উপযোগী অস্ত্র হতে পারে আরসিবির জন্য। এছাড়াও তিনি গত দুটি মরশুমেও আরসিবি হয়ে খেলেছেন এবং এ কারণেই তিনি অন্য কোনও অপরিচিত জায়গায় যেতেও চাইবেন না।
বিপুল শর্মা
আরও একজন অলরাউন্ডার হিসেবে বিপুল শর্মার দিকে নজর থাকবে আরসিবির। আইপিএলে তিনি বেশ কিছু ম্যাচ খেলে যথেষ্টই অভিজ্ঞতা অর্জন করেছেন। যদিও মুস্তাক আলি টি ২০ তে তিনি খুব বেশি উইকেট নিতে পারেন নি। কিন্তু তার লেফট আর্ম অর্থোডক্স বোলিংয়ে তিনি ব্যাটসম্যানদের যথেষ্টই বিপদে ফেলেছেন। এর আগেই আইপিএলে তিনি কিংস ইলেভেন পাঞ্জাব এবং হায়দ্রাবাদের হয়ে খেলেছেন। বোলিং ছাড়াও লোয়ার অর্ডারেও তিনি উপযোগী ব্যাটসম্যান থেকেছেন। এছাড়াও এর আগে তিনি পাওয়ার প্লে’তেও বল করেছেন যেখানে ব্যাটসম্যান তার সঠিক লাইন লেংথের কারণে তার উপর আক্রমণ করতে পারে নি।
ধ্রুব শোরে
ওপেনিং নিয়ে সমস্যা রয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স ব্যাঙ্গালোরের। তারা ওপেনিংয়ে অনেক বৈচিত্রই আনার চেষ্টা করেছে। সঠিকভাবে বলতে গেলে তিনটি আলাদা ওপেনিং কম্বিনেশন তারা ব্যবহার করেছে, কিন্তু এখনও তারা তাদের সঠিক ওপেনিং জুটি ঠিক করে উঠতে পারে নি। ধ্রুব শোরে যিনি সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে দিল্লির হয়ে খেলেছেন, তিনি বিরাট কোহলির নেতৃত্বাধীন ফ্রেঞ্চাইজির লক্ষ্য হতে পারেন, যারা শেষ ছটি ম্যাচে ওপেনিং ব্যর্থ হয়েছেন। শোরে মুস্তাক আলি ট্রফিতে শোরে ৩০৩ রান করেছেন দুরন্ত ৬০.৬০ গড়ে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল নিয়মিত ভাবে তার স্ট্রাইক রেট ১৪২ এ মেইন্টেন করে গেছেন, যা টি২০ ফর্ম্যাটে যথেষ্ট ভদ্রস্থ। আরসিবির ওপেনিং সমস্যায় শোরে সঠিক জবাব হতে পারেন তাদের জন্য। এছাড়াও তিনি একজন ডানহাতি ব্যাটসম্যান, এবং কুইন্টন ডি’ককের আদর্শ সঙ্গী হতে পারেন যিনি এখনও পর্যন্ত এই প্রতিযোগিতায় ভালই ফর্মে রয়েছেন।
হর্ষল প্যাটেল
হর্ষল প্যাটেল তার মিডিয়াম পেস বলকে যথেষ্ট চালাকির সঙ্গে ব্যবহার করে থাকেন। তার আস্তিনে যথেষ্ট বৈচিত্রও রয়েছে যা কখনও কখনও ব্যাটসম্যানদের মুশকিলে ফেলে দিতে পারে। বর্তমানে এই ক্রিকেটার হরিয়ানার হয়ে প্রতিনিধিত্ব করেন সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে, যেখানে এই বোলার তার রাজ্যের হয়ে সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি হন ৭.৭৭ ইকোনমি রেটে পাঁচ ম্যাচে ছয় উইকেট নিয়ে। এছাড়াও ওই প্রতিযোগিতায় ১৬৪ স্ট্রাইকরেটে ১৪৬ রানও করেন তিনি। গুজরাট জাত এই জোরে বোলার এর আগেও আরসিবির হয়ে খেলেছেন এবং ফের তিনি তাদের দলে যোগ দিতে পারেন। বর্তমানে এই প্লেয়ার দিল্লি ডেয়ারডেভিলের হয়ে আইপিএলে অংশ নিয়েছেন এবং তাদের হয়ে একটি মাত্র ম্যাচেই তিনি খেলেছেন তাও এই আরসিবির বিরুদ্ধেই।