WI vs IND: অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC) ফাইনালে হারের পর খানিক ব্যাকফুটে চলে গিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া। গত একমাসে ঘরে-বারেই সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছিলো তাদের। এক মাসের দীর্ঘ বিরতির পর মাঠে ফিরে যাবতীয় সমালোচনার জবাব দুরন্ত ভঙ্গিতে দিলো ভারতীয় দল (Team India)। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে (WI vs IND) প্রথম টেস্টে ডোমিনিকার উইন্ডসর পার্কে দুর্দান্ত জয় ছিনিয়ে নিলেন ভারত অধিনায়ক রোহিত শর্মা ও তাঁর সতীর্থেরা। সদ্যই জিম্বাবুয়েতে বিশ্বকাপ যোগ্যতা অর্জন টুর্নামেন্ট থেকে খালি হাতে ফিরেছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ দল। প্রথমবার একদিনের বিশ্বকাপে ক্যারিবিয়ান ক্যালিপ্সো দেখা যাবে না। সেই ক্ষতে প্রলেপ দিতে ভারতের বিরুদ্ধে সর্বস্ব দিয়ে ঝাঁপাবে ওয়েস্ট ইন্ডিজ, এমনটাই আশা করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু বাস্তবে তিন দিনের মধ্যেই অসহায় আত্মসমর্পণ করতে দেখা গেলো জেসন হোল্ডার (Jason Holder), ক্রেগ ব্রেথওয়েটদের।
ডোমিনিকায় আগাগোড়া দাপট বজায় রাখলো ভারতীয় দল। টেস্টের প্রথম দিনেই মাত্র ১৫০ রানের মধ্যে গুটিয়ে গিয়েছিলো ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওভালে বাদ পড়ার পর প্রত্যাবর্তনের ম্যাচে ৫ উইকেট নেন রবিচন্দ্রণ অশ্বিন (Ravichandran Ashwin)। নবাগত অ্যালিক অ্যাথানাজের ৪৭ ছাড়া উল্লেখযোগ্য স্কোর করতে পারেন নি কেউই। ব্যাট করতে নেমে কোনো সমস্যার মুখে পড়তে হয় হি ভারতের ওপেনিং জুটিকে। অভিষেক ম্যাচে শতরান করেন যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal), শতরান রোহিত শর্মারও (Rohit Sharma)।
বিরাট কোহলি করেন ৭৬। ভারত ৪২১ তুলে ডিক্লেয়ার করে দেয় ইনিংস। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমে অশ্বিনের ঘূর্ণির সামনে ফের বিপাকে পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। মাত্র ১৩০ রানের মধ্যেই অল-আউট হয় তারা। ৭ উইকেট নেন অশ্বিন। তিন দিনের মধ্যে টেস্ট হেরে ঘরের মাঠে ১-০ পিছিয়ে পড়লো ‘মেন ইন মেরুন।’ টিম ইন্ডিয়ার দুর্ধর্ষ পারফর্ম্যান্স কুড়োচ্ছে মন জিতেছে। তবে শুভেচ্ছার ফুলের মাঝে কাঁটার মত বিঁধছে জয়দেব উনাদকাটের (Jaydev Unadkat) পারফর্ম্যান্স।
Read More: শিখর ধাওয়ানের জন্য বন্ধ হলো টিম ইন্ডিয়ার ফেরার রাস্তা, শীঘ্রই দেবেন অবসরের ঘোষণা !!
সুযোগ পেলেও কাজে লাগাতে ব্যর্থ জয়দেব-

২০১০ সালে ডারবানে দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে টেস্ট অভিষেক হয়েছিলো জয়দেব উনাদকাটের (Jaydev Unadkat)। সৌরাষ্ট্রের পেসার সেইবার একটি মাত্র টেস্ট খেলেই বাদ পড়েছিলেন। তারপর ঘরোয়া ক্রিকেটে বেশ সাফল্য পেলেও টেস্ট ক্যাপ আর মাথায় চাপানো হয় নি তার। অপেক্ষা করতে হয়েছে দীর্ঘ ১২টা বছর। ২০২২ সালে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে মহম্মদ শামির (Mohammad Shami) বদলি হিসেবে সুযোগ পান। কেরিয়ারের দ্বিতীয় টেস্টটি খেলতে মাঠেও নেমেছিলেন। মীরপুরে বল হাতে তাঁর পারফর্ম্যান্স ভরসা দিয়েছিলো জাতীয় নির্বাচকদের। এরপর অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ঘরের মাঠে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি এবং ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ফাইনালে মাঠে নামার সুযোগ না পেলেও স্কোয়াডে ছিলেন তিনি। অপেক্ষার ফসল অবশেষে পাচ্ছেন সৌরাষ্ট্রের দুইবারের রঞ্জিজয়ী অধিনায়ক, এমনটাই মনে করেছিলেন বিশেষজ্ঞরা।
ওয়েস্ট সফরের টেস্ট দল যখন ঘোষণা করা হয়,তখন বেশ কিছু চমক দিয়েছিলেন নির্বাচকেরা। জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah) চোটের কারণে নেই। বিশ্রাম দেওয়া হয়েছে মহম্মদ শামিকে। বাদ পড়েছেন উমেশ যাদব (Umesh Yadav)। তিন সিনিয়র পেসার না থাকায় মহম্মদ সিরাজের বোলিং পার্টনার হিসেবে নির্বাচকেরা বেছে নিয়েছিলেন নভদীপ সাইনি, মুকেশ কুমার এবং জয়দেব উনাদকাটকে। অভিজ্ঞ উনাদকাটকেই প্রথম টেস্টের একাদশে রেখেছিলেন কোচ দ্রাবিড় (Rahul Dravid)। সিরাজ-উনাদকাটের ডান হাতি-বাঁ হাতি কম্বিনেশন ব্যবহারের ইচ্ছা ছিলো টিম ইন্ডিয়ার। কিন্তু চূড়ান্ত ব্যর্থ তিনি। দুই ইনিংস মিলিয়ে ৯ ওভার বল করেছেন তিনি। ১৮ রান খরচ করেছেন। তবে দুই ইনিংসেই উইকেটের ঝুলি শূন্য তাঁর। ভারতের একমাত্র বোলার হিসেবে খাতা খুলতে পারেন নি তিনি। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিরুদ্ধে ব্যর্থতার পর সম্ভবত পরবর্তী টেস্টে আর মাঠে নামা হচ্ছে না তাঁর।
উনাদকাটের বদলির খোঁজে ভারত-

জয়দেব উনাদকাটের (Jaydev Unadkat) হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের পর ত্রিনিদাদের ক্যুইন্স পার্ক ওভালে উইন্ডিজ বনাম ভারত (WI vs IND) তাঁর বাদ পড়া এক রকম নিশ্চিত। বাঁ-হাতি পেসারকে ছেঁটে ফেলে নতুন বোলিং কম্বিনেশন গড়ে তোলার লক্ষ্য থাকবে টিম ম্যানেজমেন্টের। ভারতের হাতে রয়েছেন নভদীপ সাইনি (Navdeep Saini) এবং মুকেশ কুমার। এর মধ্যে নভদীপ সাইনির দুইটি টেস্ট খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে। অন্যদিকে ২৯ বছরের মুকেশ (Mukesh Kumar) একেবারের নবাগত। একটিও ম্যাচ তিনি খেলেন নি জাতীয় দলের জার্সিতে। জয়দেব উনাদকাট বাদ পড়লে ঘরোয়া ক্রিকেটে ধারাবাহিকতার বিচারে হয়ত শিকে ছিঁড়তে পারে বাংলার মুকেশের। সেক্ষেত্রে টিম ইন্ডিয়ার ৩০৮তম টেস্ট ক্যাপটির মালিক হবেন তিনি।