WI vs IND: টেস্ট সিরিজে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে সহজেই হারিয়ে দিয়েছে ভারতীয় দল। প্রথম ম্যাচে ইনিংস এবং ১৪১ রানের ব্যবধানে জয়ের পর দ্বিতীয় ম্যাচেও জয়ের দোরগোড়ায় ছিলো ভারতীয় দল। কিন্তু বৃষ্টির কারণে পঞ্চম দিন খেলা না হওয়ায় অমীমাংসিত ভাবে শেষ হয় টেস্ট। ত্রিনিদাদে জিতে প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ না করতে পারলেও ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ভারত (WI vs IND) সিরিজ ১-০ ফলে ঝুলিতে পুরেছেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma) ও তাঁর সতীর্থরা। টেস্ট ম্যাচের দাপট সাদা বলের খেলাতেও দেখাতে মরিয়া ভারতীয় দল। আজ রয়েছে প্রথম একদিনের ম্যাচ। বার্বাডোজের কেনসিংটন ওভালে পা রাখার আগে প্রথম একাদশ নির্বাচন নিয়ে ভাবনাচিন্তা চলছে টিম ইন্ডিয়ার অন্দরে।
ঋষভ পন্থ, কে এল রাহুল (KL Rahul) এবং শ্রেয়স আইয়ার (Shreyas Iyer)-ভারতীয় দলের তিন মিডল অর্ডার ব্যাটার নেই উইন্ডিজ সিরিজে। চোটের সাথে যুদ্ধ করছেন তিনজনেই। পাঁচ নম্বরে উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে পন্থ (Rishabh Pant) বা রাহুলের বিকল্প তৈরি রয়েছে। দেখা যাবে ঈশান কিষণকে। টেস্ট সিরিজে ভালো পারফর্ম করে দলকে আস্থা যুগিয়েছেন ঈশান। তবে সমস্যা রয়ে গিয়েছে চার নম্বর কে ব্যাট করবেন তা নিয়ে। ভারতীয় দলের হাতে রয়েছেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav) এবং সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson)। সূর্যকুমার সাম্প্রতিক কালে দেশের জার্সিতে একদিনের ম্যাচে বিশেষ ভালো পারফর্ম করেন নি। অন্যদিকে সঞ্জু স্যামসন ওডিআই দলে ফিরছেন আট মাস পর। দু’জনের মধ্যে কাকে জায়গা দেওয়া হবে তা ঠিক করতে অন্তত তিনটি বিষয় মাথায় রাখতে হচ্ছে কোচ রাহুল দ্রাবিড়কে (Rahul Dravid)।
Read More: WI vs IND: ওডিআই সিরিজের আগে ব্যাকফুটে টিম ইন্ডিয়া, আচমকাই ছিটকে গেলেন এই বিধ্বংসী বোলার !!
দলের ভারসাম্য রক্ষা নিয়ে থাকবে চিন্তা-

সঞ্জু (Sanju Samson) অথবা সূর্যকুমার (Suryakumar Yadav), যেই প্রথম একদিনের ম্যাচে উইন্ডিজের বিরুদ্ধে ভারতের (WI vs IND) জার্সিতে মাঠে নামুন না কেন, মিডল অর্ডারকে সুদৃঢ করার দায়িত্ব থাকবে তাঁর কাঁধে। কে এল রাহুল বা শ্রেয়স আইয়ার কোনো কারণে দলের বাইরে থাকলে পূর্বে বেশ কয়েকটি ম্যাচে মাঠে নামার সুযোগ পেয়েছেন সঞ্জু স্যামসন। তাঁর পরিসংখ্যান ঘেঁটে দেখলে বোঝা যায় যে বেশ ধারাবাহিকতা দেখিয়েছেন তিনি। ১১টি একদিনের ম্যাচে ৬৬ গড়ে সঞ্জুর (Sanju Samson) মোট রান ৩৩০। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে শেষ যে একদিনের ম্যাচে সুযোগ পেয়েছিলেন তিনি, সেখানেও কঠিন পিচে ৩৬ রানের একটি ইনিংস খেলেছিলেন তিনি।
সঞ্জুর তুলনায় ঢের বেশী সুযোগ একদিনের ক্রিকেটে পেয়েছেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। টি-২০তে তিনি যেমন বিশ্বের সেরা ব্যাটার হয়ে উঠেছেন, তেমনভাবে একদিনের খেলায় মেলে ধরতে পারেন নি নিজেকে। ২৩টি ম্যাচে ২৪.০৫ গড়ে মাত্র ৪৩৩ রান এসেছে তাঁর ঝুলিতে। সদ্যই অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজে টানা তিন ম্যাচে ‘গোল্ডেন ডাক’ করে লজ্জার নজির গড়েছেন তিনি। এর আগের কয়েকটি সিরিজে সঞ্জুর উপর আস্থা রেখেছে দল। বিশ্বকাপের আগে তাঁকে নিজেকে প্রমাণ করার আরও একটি সুযোগ দেওয়া হবে নাকি জায়গা পাবেন সঞ্জু, সেদিকে নজর থাকবে।
এক্স-ফ্যাক্টর-

যে সমস্ত পারফর্ম্যান্স’কে যুক্তি দিয়ে বিশ্লেষণ করা যায় না ক্রীড়ার দুনিয়ায় তাকেই এক্স-ফ্যাক্টর বলা হয়। এই ক্ষেত্রে অবশ্যই এগিয়ে থাকবেন সূর্যকুমার যাদব (Suryakumar Yadav)। যে কোনো মুহূর্তে, যে কোনো সময় ম্যাচের মোড় ঘুরিয়ে দিতে তিনি সিদ্ধহস্ত। বিশেষ করে ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাটে যেভাবে তিনি ব্যাট করেছেন গত এক বছরে,তাতে বদলে গিয়েছে খেলার ব্যকরণই। একদিনের ক্রিকেটে সেই এক্স-ফ্যাক্টরের প্রতিফলন এখনও দেখা যায় নি ঠিকই। তবে উইন্ডিজের বিরুদ্ধে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জে সূর্যকুমারের (Suryakumar Yadav) সেই ‘মিস্টার ৩৬০’ রূপেই দেখতে চাইবে ভারতীয় দল।
কঠিন সময়ে ম্যাচের মোড় ঘোরানো পারফর্ম্যান্স করতে সক্ষম সঞ্জু স্যামসনও (Sanju Samson)। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে ঝোড়ো ৮৬* করে একটা সময় ম্যাচ থেকে হারিয়ে যাওয়া টিম ইন্ডিয়াকে প্রায় জয়ের দোরগোড়ায় এনে ফেলেছিলেন তিনি। আইপিএলেও বহু ম্যাচে তিনি একাই বদলে দিয়েছেন ম্যাচের রঙ।
সাম্প্রতিক ফর্ম-

ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ভারত (WI vs IND) একদিনের সিরিজের দল নির্বাচনের ক্ষেত্রে ভারতীয় থিঙ্কট্যাঙ্ক নিশ্চয় সাম্প্রতিক ফর্মের দিকে গুরুত্ব দেবে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে একটানা তিনটি ‘গোল্ডেন ডাক’-এর পর কঠিন সময় কাটিয়ে দুরন্ত প্রত্যাবর্তন ঘটিয়েছেন সূর্যকুমার যাদব। আইপিএলে ২০২৩ সালে নিজের কেরিয়ারের সেরা মরসুম কাটিয়েছেন তিনি। একটি শতরান-সহ করেছেন ৬০৫ রান। খেলেছেন বেশ কয়েকটি ম্যাচ জেতানো ইনিংস। ব্যাটিং গড় ছিলো ৪৩.২১ এবং স্ট্রাইক রেট ছিলো ১৮২’র আশেপাশে।
অন্যদিকে সঞ্জুর (Sanju Samson) ক্ষেত্রে ছবিটা খানিক আলাদা। বেশ কয়েকটি ম্যাচে ভালো শুরু করেও শেষমেশ বড় রানের ইনিংস খেলতে ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। তাঁর দল রাজস্থান রয়্যালসও শুরুর ম্যাচগুলিতে টানা জিতলেও পরে ধারাবাহিক ব্যর্থতার কবলে পড়ে জায়গা করে নিতে পারে নি আইপিএল প্লে-অফে। দুজনের সাম্প্রতিক ফর্মের এই বৈপরীত্য চিন্তা বাড়িয়েছে টিম ইন্ডিয়ার।