প্রতিভার সাথে সাথে সফল হতে গেলে পরিশ্রমও যে অত্যন্ত প্রয়োজন তার প্রমাণ মেলে বিনোদ কাম্বলির (Vinod Kambli) কেরিয়ারের দিকে তাকালেই। স্কুল ক্রিকেটের আঙিনা থেকেই সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম কেড়ে নিয়েছিলেন বাম হাতি ব্যাটার। শচীন তেন্ডুলকরের সাথে উচ্চারতি হত তাঁর নাম। সারদাশ্রম স্কুলের হয়ে দু’জনে করেছিলেন রেকর্ড পার্টনারশিপ’ও। ১৯৮৯ সালে মাত্র ১৬ বছর বয়স ভারতের হয়ে অভিষেক হয় শচীনের (Sachin Tendulkar)। কয়েক বছর পর টিম ইন্ডিয়ার জার্সি গায়ে চাপান কাম্বলিও। কিন্তু দু’জনের কেরিয়ার একই পথ ধরে এগোয় নি। নিষ্ঠা, পরিশ্রমকে হাতিয়ার করে শচীন যেখানে সর্বকালের সেরাদের তালিকায় নাম লিখিয়েছেন, কাম্বলি (Vinod Kambli) সেখানে বেহিসেবি জীবনযাপনের খেসারত দিয়ে হারিয়ে গিয়েছেন মূলস্রোত থেকে। রয়ে গিয়েছেন ট্র্যাজিক হিরো হয়েই।
Read More: CT 2025: চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জট মিটতেই প্রকাশ্যে ভারতীয় স্কোয়াড, ১৬ মাস পর সুযোগ পেলেন এই তারকা !!
হাসপাতালে বিনোদ কাম্বলি-
অসুস্থতাজনিত সমস্যার কারণে হাসপাতালে ভর্তি বিনোদ কাম্বলি (Vinod Kambli)। মূত্রজনিত সমস্যা ও যন্ত্রণার কারণে গতকাল তড়িঘড়ি মুম্বইয়ের থানে এলাকার আকৃতি হাসপাতালে নিয়ে আসা হয় প্রাক্তন ক্রিকেটার’কে। তাঁর চিকিৎসার দায়িত্বে রয়েছেন ডক্টর বিবেক ত্রিপাঠী। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন যে শারীরিক পরীক্ষার পর দেখা গিয়েছে যে কাম্বলির মস্তিষ্কে কিছু জায়গায় রক্ত জমাট বেঁধে রয়েছে। “প্রতি মুহূর্তের দিকে নজর রাখা হচ্ছে। মঙ্গলবার আরও কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করে দেখা হবে,” জানিয়েছেন তিনি। থানের আকৃতি হাসপাতালের মালিক কাম্বলির (Vinod Kambli) একনিষ্ঠ ভক্ত। মূলত তাঁর তৎপরতার কারণেই দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিলো প্রাক্তন ক্রিকেটারকে। তাঁর থেকে চিকিৎসাজনিত কোনো খরচ নেওয়া হবে না বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের ইন চার্জ এস.সিং।
দিনকয়েক আগেই কোচ রমাকান্ত আচরেকারের একটি স্মরণসভায় উপস্থিত হয়েছিলেন বিনোদ কাম্বলি (Vinod Kambli)। শিবাজী পার্কে অনুষ্ঠিত সেই স্মরণসভায় উপস্থিত ছিলেন ক্রিকেট কিংবদন্তি শচীন তেন্ডুলকর’ও। দুই বন্ধুর ভিডিও ভাইরাল হয়েছিলো সোশ্যাল মিডিয়ায়। তখনই নেটিজেনদের অনেকে লিখেছিলেন যে অসুস্থ মনে হচ্ছে কাম্বলিকে। সেই অনুষ্ঠানের কিছুদিনের মধ্যেই হাসপাতালে ভর্তি হতে হলো প্রাক্তন ক্রিকেটারকে। এই প্রথম নয়, এর আগেও একাধিক বার গুরুতর শারীরিক সমস্যার সম্মুখীন হতে হয়েছে তাঁকে। ২০১৩ সালে তাঁর হৃদযন্ত্রে দুই বার অস্ত্রোপচার হয়েছিলো। সেই সময় আর্থিক সহায়তা করেছিলেন তাঁর শচীন তেন্ডুলকর (Sachin Tendulkar)। বন্ধুকে পরে কৃতজ্ঞতাও জানিয়েছিলেন কাম্বলি। “শচীন আমার জন্য সবকিছু করেছে,” সাক্ষাৎকারে জানান তিনি।
অসুস্থতা নিয়ে মুখ খোলেন কাম্বলি স্বয়ং-
৫২ বর্ষীয় প্রাক্তন ক্রিকেটার সম্প্রতি একটি সাক্ষাৎকারে নিজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে মুখও খুলেছিলেন। তিনি জানান, “মূত্রজনিত একটি সমস্যায় ভুগছিলাম। তা গুরুতর আকার ধারণ করে। একমাস আগে হঠাৎই মাথা ঘুরে পড়ে গিয়েছিলাম। সেই সময় আমার পুত্র আমায় উঠে দাঁড়াতে সাহায্য করে। আমার স্ত্রী ও কন্যাও সাহায্য করেছিলো।” সেই ঘটনার পর তিনটি আলাদা আলাদা হাসপাতালে চিকিৎসা করাতে হয়েছিলো তাঁকে, সাক্ষাৎকারেও তাও বলেছিলেন কাম্বলি (Vinod Kambli)। ১৯৮৩ বিশ্বকাপ জয়ী দলের দুই সদস্য কপিল দেব ও সুনীল গাওস্কর’ও কাম্বলির অসুস্থতা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছিলেন। তাঁকে রিহ্যাবের পরামর্শ দেন দুই প্রাক্তনী। অসুস্থতা সত্ত্বেও রিহ্যাবে যেতে আপত্তি নেই কাম্বলির। “আমি কিছুতেই ভয় পাই না। আমার পরিবার আমার সঙ্গে রয়েছে,” কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন ভারতীয় ক্রিকেটের উপেক্ষিত নায়ক।