TOP 5: সম্প্রতি স্কটল্যান্ডের বিরুদ্ধে একটি টি-২০ সিরিজে অংশ নিয়েছিলো অস্ট্রেলীয় ক্রিকেট দল। এডিনবরায় কুড়ি-বিশের দ্বৈরথে ফেভারিট ছিলো অজিরাই। ফলাফলেও দেখা গিয়েছে তারই প্রতিফলন। টি-২০ বিশ্বকাপে ভালো খেললেও ট্র্যাভিস হেড, জশ ইংলিসদের বিরুদ্ধে তেমন প্রতিরোধই গড়ে তুলতে পারে নি স্কটল্যান্ড। প্রথম ম্যাচে ৭ উইকেটে জয় পায় অজিরা। দ্বিতীয় ও তৃতীয় ম্যাচে জয় আসে যথাক্রমে ৭০ রান ও ৬ উইকেটের ব্যবধানে। প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেই স্কটল্যান্ড সফরে ইতি টানে মিচেল মার্শের দল। সাধারণত সিরিজ জয়ীদের হাতে ট্রফি তুলে দেওয়ার রীতি রয়েছে ক্রিকেটে। স্কটল্যান্ড বনাম অস্ট্রেলিয়া সিরিজের ট্রফিটি নজর কেড়ে নেয় দর্শকদের। দৈর্ঘ্যে ইঞ্চি তিনেক ও প্রস্থেও প্রায় তেমনই হবে মাপ। এহেন ‘অদ্ভুতদর্শন ট্রফির ছবি সামনে আসার পরেই ক্রিকেটদুনিয়ার ‘আজব’ সব পুরষ্কার নিয়ে শুরু হয়ে যায় চর্চা।
Read More: বাংলাদেশের এই ক্রিকেটারের থেকে সাবধান থাকতে হবে ভারত’কে, একাই বদলে দিতে পারেন ম্যাচের মোড় !!
আধা একর জমি, কানাডা, ২০২২-
ম্যাচের সেরা বা সিরিজ সেরা হওয়ার জন্য ক্রিকেটাররা প্রায়শই অর্থ পেয়ে থাকেন। মাঝেমধ্যে বহুমূল্য ঘড়ি, গাড়ি, এমনকি আবাসন পাওয়ার ঘটনাও বিরল নয়। কিন্তু তা বলে জমি? এমন ‘আজব’ পুরষ্কার’ই দেখা গিয়েছিলো কানাডার গ্লোবাল টি-২০ টুর্নামেন্টে। পেয়েছিলেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের তরুণ ব্যাটার শেরফেন রাদারফোর্ড (Sherfane Rutherford)। ২০২২ সালে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ প্রতিযোগিতার দ্বিতীয় সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছিলেন ২৪ বর্ষীয় ক্রিকেটার। একটি অর্ধশতক ও ৪৪ গড়ে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছিলো ২২০ রান। তাঁকেই টুর্নামেন্টের সেরা খেলোয়াড় নির্বাচিত করেছিলেন আয়োজক’রা। পুরষ্কার হিসেবে একটি সুদৃশ্য ট্রফির পাশাপাশি আধা একর জমি পেয়েছিলেন তিনি। শেরফেনের হাতে এই পুরষ্কার তুলে দেন ক্যারিবিয়ান কিংবদন্তি ক্লাইভ লয়েড। কানাডায় নয়, এই জমি শেরফেন পেয়েছিলেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে।
লন-মোয়ার, আয়ারল্যান্ড, ২০০৩-
‘আজব’ পুরষ্কারের তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে জায়গা করে নেবে একটি লন-মোয়ার। ট্রফি বা মেডেল নয়, এই ঘাস কাটার যন্ত্র ম্যাচের সেরা হওয়ার পুরষ্কার হিসেবে পেয়েছিলেন দক্ষিণ আফ্রিকার কিংবদন্তি পেসার মাখায়া এনটিনি (Makhaya Ntini)। ডাবলিনে ২০০৩ সালে আয়ারল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিলো প্রোটিয়ারা। প্রথমে ব্যাটিং করে দক্ষিণ আফ্রিকা তোলে ২৯৪ রান। জোড়া অর্ধশতক করেন বোথা ডিপেনার ও জ্যাক ক্যালিস। রান তাড়া করতে নামা আইরিশদের রুখে দিয়েছিলেন ডান হাতি ফাস্ট বোলার। এনটিনি’র শিকার হয়ে সেদিন সাজঘরে ফিরেছিলেন জেরেমি ব্রে, আন্দ্রে বোথা ও পিটার গিলেসপি। ৬ ওভার হাত ঘুরিয়ে এনটিনি তুলে নেন ৩টি উইকেট। সেরা খেলোয়াড় হিসেবে পাওয়া লন-মোয়ার’টি অবশ্য দেশে নিয়ে যান নি এনটিনি। স্পন্সরদের থেকে তার বিনিময়ে কিছু অর্থ নিয়ে নিয়েছিলেন তিনি।
ব্লেন্ডার, বাংলাদেশ, ২০১৩-
ইংল্যান্ডের হয়ে ২০১০ সালে টি-২০ বিশ্বকাপ জিতেছেন লুক রাইট (Luke Wright)। ঘরোয়া ক্রিকেটে সাসেক্সের হয়েও অর্জন করেছেন বহু সাফল্য। কিন্তু কেরিয়ারে সবচেয়ে ‘অদ্ভুত’ পুরষ্কার কোথায় জিতেছেন? এই প্রশ্নের সম্মুখীন হলে তিনি নিঃসন্দেহে উচ্চারণ করবেন বাংলাদেশের নাম। ২০১৩ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশনের ম্যাচে বাংলাদেশের আবাহনী লিমিটেডের জার্সি গায়ে মাঠে নেমেছিলেন লুক রাইট। ভিক্টোরিয়া স্পোর্টস ক্লাবের বিরুদ্ধে ম্যাচটিতে ৩৩ রানের বিনিময়ে তিনি নিয়েছিলেন ৩ উইকেট। সৌম্য সরকার ও আবদুল্লাহ আল মামুনের জোড়া অর্ধশতকের সৌজন্যে স্কোরবোর্ডে ২৩৪ রান তুলেছিলো ভিক্টোরিয়া স্পোর্টস ক্লাব। ব্যাট হাতেও অনবদ্য পারফর্ম করেন লুক রাইট। করেন ৬৬। ১৪ বল বাকি থাকতে ম্যাচ জেতে আবাহনী। সেরা খেলোয়াড় হিসেবে একটি ‘ব্লেন্ডার’ জেতেন লুক।
রাইস কুকার, বাংলাদেশ, ২০১৩-
একা লুক রাইট নয়, বাংলাদেশের মাঠে অদ্ভুত পুরষ্কার জিতেছেন ইংল্যান্ডের ইয়ন মর্গ্যান’ও (Eoin Morgan)। বিশ্বকাপজয়ী অধিনায়কের কাছেও সেই অভিজ্ঞতা ‘বিশেষ’ই। ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লীগে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাবের বিরুদ্ধে গাজি ট্যাঙ্ক ক্রিকেটারস দলের জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন মর্গ্যান। ৭১ বলে ৮৪ রানের একটি চমৎকার ইনিংসও খেলেন তিনি। মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন গাজি ট্যাঙ্ক দল’কে। অর্ধশতক করেন তিনিও। ২৯৫ রান তোলে তারা। জবাবে ব্যাট করতে নামা প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব গুটিয়ে যায় ২৩৫ রানে। ৬০ রানের ব্যবধানে বড় জয় পায় ইয়ন মর্গ্যানের দল। ব্যাটিং সাফল্যের জন্য ম্যাচের সেরা নির্বাচিত হন তিনি। ট্রফি বা পদক নয়, ভাগ্যে জোটে একটি রাইস কুকার।
মিনি ট্রাক, শ্রীলঙ্কা, ২০১৭-
সিরিজ সেরা খেলোয়াড়ের পুরষ্কার জেতার পর গাড়ি বা বাইক প্রায়শই পেয়ে থাকেন ক্রিকেটার’রা। অডি গাড়ি জিতে মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে তা চালিয়েছিলেন রবি শাস্ত্রী। সেই ছবি এখনও টাটকা ক্রিকেটপ্রিয় জনতার মনে। কিন্তু তা বলে মালবহনকারী মিনি ট্রাক? এমন ‘আজব’ পুরষ্কার’ও চোখে পড়েছিলো ২০১৭ সালে শ্রীলঙ্কার মাটিতে। পড়শি দেশের বিরুদ্ধে টেস্ট ও ওডিআই-এর যুদ্ধে নেমেছিলো টিম ইন্ডিয়া। লাল বলের খেলায় ভারত জিতেছিলো ৩-০ ফলে। পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটেও জেতে ‘মেন ইন ব্লু।’ ৩৩০ রান করে সফলতম ব্যাটার হয়েছিলেন বিরাট কোহলি। কিন্তু ১১.২৭ গড়ে ৫ ম্যাচে ১৫ উইকেট নেওয়ায় তাঁকে পিছনে ফেলে সিরিজ সেরা হন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। তারকা পেসারকে পুরষ্কার হিসেবে দেওয়া হয় মিনি ট্রাক’টি। সেই ট্রাকে চেপেই মাঠ প্রদক্ষিণ করেন ক্রিকেটার’রা। স্টিয়ারিং-এ ছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি।