TOP 5: বেজে গিয়েছে এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) দামামা। গত ২৪ জুলাই সূচি ও গ্রুপ বিন্যাস ঘোষণা করেছিলো এশিয়ান ক্রিকেট কাউন্সিল। তখন থেকেই সম্ভাব্য ভারতীয় স্কোয়াড নিয়ে চলছিলো চর্চা। সেই কৌতূহল নিরসন হয়েছে গত মঙ্গলবার। মুম্বইতে বোর্ডের সদর দপ্তরে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করে ১৫ সদস্যের স্কোয়াড ঘোষণা করেছেন অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ও মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকার (Ajit Agarkar)। সাথে পাঁচ জন’কে জায়গা দেওয়া হয়েছে স্ট্যান্ড-বাই হিসেবে। ভারতীয় স্কোয়াড নিয়ে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্ক। যশস্বী জয়সওয়াল, শ্রেয়স আইয়ারদের মত তারকাদের কেন ভেবে দেখা হলো না তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন কেউ কেউ। প্রশ্ন রয়েছে শুভমান গিল (Shubman Gill) সহ-অধিনায়কত্ব পাওয়াতেও। কোথায় লুকিয়ে ভারতের শক্তি? কোথায়ই বা রয়েছে দুর্বলতা? দেখে নিন এক নজরে।
Read More: ভারত-পাক এশিয়া কাপ ম্যাচ নিয়ে কাটছে না জটিলতা, হবে না সরাসরি সম্প্রচার !!
টিম ইন্ডিয়ার শক্তি-
স্কোয়াড গভীরতা-

এশিয়া কাপে (Asia Cup 2025) টিম ইন্ডিয়াকে ভরসা যোগাতে পারে তাদের স্কোয়াড (Team India) গভীরতা। সব বিভাগেই একাধিক ম্যাচ উইনার রয়েছে তাদের। ওপেনিং-এ ফেরানো হয়েছে শুভমান গিল’কে। কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটে এক ও দুই নম্বরে থাকা অভিষেক শর্মা (Abhishek Sharma) ও তিলক বর্মাও থাকছেন টপ-অর্ডারে। থাকছেন বিধ্বংসী সূর্যকুমার যাদব। ফিনিশারের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে রিঙ্কু সিংকে (Rinku Singh)। পেস বা স্পিন সহায়ক-উইকেট যেমনই হোক না কেন, সেই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করার জন্য যথেষ্ট অস্ত্র মজুত রয়েছে ভারতীয় স্কোয়াডে। হার্দিক পান্ডিয়া, শিবম দুবে, অক্ষর প্যাটেলদের উপস্থিতি সমৃদ্ধ করেছে তাদের। বুমরাহ (Jasprit Bumrah), আর্শদীপদের উপর দায়িত্ব থাকবে পাওয়ার প্লে ও ডেথ ওভারে প্রতিপক্ষকে চাপে রাখার। থাকছেন কুলদীপ, বরুণের মত রহস্য স্পিনারও।
টি-২০তে কোচ গম্ভীরের মগজাস্ত্র-

আসন্ন এশিয়া কাপে (Asia Cup 2025) টিম ইন্ডিয়ার অন্যতম অস্ত্র কোচ গৌতম গম্ভীর। টেস্টে মাঝেমধ্যে তাঁর স্ট্র্যাটেজি নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে ঠিকই, কিন্তু টি-২০ তে তিনি যে শ্রেষ্ঠতম ট্যাকটিশিয়ানদের একজন, তা মানতে দ্বিধা নেই বিশেষজ্ঞদের। অতীতে নানান ছকভাঙা সিদ্ধান্ত নিয়ে কলকাতা নাইট রাইডার্সকে (KKR) আইপিএল চ্যাম্পিয়ন করার নজির গড়েছেন তিনি। এমনকি ভারতীয় দলের কোচ হওয়ার পরে অলরাউন্ডারদের অন্তর্ভুক্তিতে জোর দিয়ে দলের খেলার ধরণ বদলে দিয়েছেন গম্ভীর (Gautam Gambhir)। তাঁর অধীনে এখনও পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা, বাংলাদেশ ও ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে ভারতীয় দল। কার্যত বিনা প্রতিদ্বন্দ্বীতায় তিনটি সিরিজেই জিতেছে তারা। গম্ভীরের হাতে দলের চাবিকাঠি থাকলে এশিয়া কাপেও (Asia Cup 2025) জয়ের পথটা হতে পারে ততটাই মসৃণ।
বড় মঞ্চে সাম্প্রতিক ফর্ম-

২০১৩’র পর দীর্ঘসময় বড় মঞ্চে বারবার ব্যর্থ হয়েছে ভারতীয় দল (Team India)। টি-২০ বিশ্বকাপ, ওয়ান ডে বিশ্বকাপ এমনকি এশিয়া কাপের (Asia Cup 2025) নক-আউট পর্বে এসে তরী ডুবেছে তাদের। কিন্তু ছবিটা বদলেছে ২০২৩-এর ওয়ান ডে বিশ্বকাপের পর। সেবার আহমেদাবাদের ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ধাক্কা খাওয়ার পর ঘুরে দাঁড়িয়েছে ‘মেন ইন ব্লু।’ ২০২৪-এর জুনে তারা জিতেছে টি-২০ বিশ্বকাপ। ২০২৫-এর গোড়ায় দুবাইতেই জিতেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি (CT 2025)। এশিয়া কাপেও সেই ছন্দ ধরে রাখাই লক্ষ্য হবে তাদের। ভারতকে ভরসা যোগাবে অধিনায়ক হিসেবে সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) পরিসংখ্যান। এখনও অবধি ছয়টি টি-২০ সিরিজে দেশকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। হারেন নি একটিও। সেই রেকর্ড এশিয়া কাপে (Asia Cup 2025) অক্ষত রাখতে পারলে ট্রফি নিঃসন্দেহে আসবে ভারতেই।
টিম ইন্ডিয়ার দুর্বলতা-
রাজনৈতিক চাপ-

খাতায়-কলমে আসন্ন এশিয়া কাপে (Asia Cup 2025) ফেভারিট ভারতই। কিন্তু যে যে কারণগুলি তাদের ব্যাকফুটে ফেলতে পারে তার মধ্যে অন্যতম রাজনৈতিক ও সামাজিক চাপ। পহলগাম সন্ত্রাস ও অপারেশন সিঁদুরের পর এশিয়া কাপ বয়কট করুক টিম ইন্ডিয়া, চেয়েছিলেন অনেকেই। বিসিসিআই সেই দাবী অগ্রাহ্য করে খেলার ব্যাপারে সবুজ সংকেত দেওয়ায় রীতিমত ক্ষুব্ধ তাঁরা। বিশেষ করে পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ম্যাচটি নিয়ে রীতিমত ঝড় উঠেছে নেটদুনিয়ায়। রাজনৈতিক দলগুলিও সুর চড়িয়েছে বিষয়টি নিয়ে। সকলেরই নিশানায় ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। ফলাফল বিরুদ্ধে গেলে সমালোচনার তীরগুলি আরও তীক্ষ্ণ হবে তা নিঃসন্দেহে আন্দাজ করতে পারছেন ক্রিকেটাররা। যা মাঠে নামার আগেই চাপে ফেলতে পারে তাঁদের।
চোট ও ফর্ম নিয়ে অনিশ্চয়তা-

গত জুন মাসের ২৫ তারিখ জার্মানির মিউনিখে স্পোর্টস হার্নিয়ার অস্ত্রোপচার হয়েছে সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav)। এনসিএ-তে রিহ্যাব সেরে সরাসরি এশিয়া কাপেই মাঠে ফিরবেন তিনি। চলতি বছরের গোড়ায় দেশের জার্সিতে একদমই ফর্মে ছিলেন না তিনি। আইপিএলে ছন্দ ফিরে পেয়েছিলেন ঠিকই, কিন্তু দীর্ঘদিন ম্যাচ প্র্যাক্টিসের মধ্যে না থাকার ফলে সেই ফর্ম আদৌ ধরে রাখতে পেরেছেন কিনা তা নিয়ে রয়েছে সংশয়। চিন্তা রয়েছে জসপ্রীত বুমরাহকে (Jasprit Bumrah) নিয়েও। ওয়ার্কলোডের কারণে ইংল্যান্ড সিরিজে তিনটির বেশী টেস্ট খেলেন নি তিনি। তারপর হাঁটুতে নাকি চোটও ছিলো তাঁর। এশিয়া কাপে নিজেকে উজাড় করে দিতে পারবেন পেস তারকা? ধাঁধায় অনেকেই। ভারতীয় সমর্থকদের চিন্তায় ফেলেছেন শুভমান গিল’ও। টুর্নামেন্টের দিনকয়েক আগে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন তিনি।