TOP 3: চলছে ২০২৩-এর বিশ্বকাপ (ICC World Cup 2023)। ভারতের মাঠে দুর্দান্ত গতিতে ছুটছে টিম ইন্ডিয়ার অশ্বমেধের ঘোড়া। এখনও অবধি চার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছে ভারত। গুঁড়িয়ে দিয়েছে প্রত্যেককেই। ২০১১ সালের পর ২০১৫ এবং ২০১৯-এর বিশ্বকাপে (ICC World Cup) জুটেছিলো কেবলই হতাশা। সেই ব্যর্থতার অধ্যায়কে পিছনে ফেলে সামনে তাকাতে চায় ‘মেন ইন ব্লু।’ বারো বছরের ব্যবধানে ফের বিশ্বকাপ জয়ই লক্ষ্য দলের। ভারতীয় শিবিরকে এই স্বপ্ন দেখাচ্ছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ২০১১তে তরুণ তুর্কি হিসেবে বিশ্বকাপ জিতেছিলেন, এবার অভিজ্ঞ ক্রিকেটার হিসেবে নিজের পারফর্ম্যান্সের ভিত্তিতে দলকে আরও একবার বিশ্বক্রিকেটের শিখর স্পর্শ করাতে চান তিনি।
এই মুহূর্তে বিশ্বকাপে সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহকদের তালিকায় জায়গা করে নিয়েছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। শুরুটা করেছিলেন চেন্নাইতে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে দায়িত্বশীল ৮৫ রানের ইনিংস দিয়ে। এরপর দিল্লীর মাঠে আফগানিস্তানের বিপক্ষে করেন ৫৫* রান। তৃতীয় ম্যাচে পাকিস্তানের বিপক্ষে রান পান নি। আহমেদাবাদের বাইশ গজে ফিরতে হয়েছিলো মাত্র ১৬ রান করেই। তবে জ্বলে ওঠেন বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। পুনের মহারাষ্ট্র ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন মাঠে ১০৩* রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলতে দেখা যায় তাঁকে। ৪৮তম ওডিআই শতক সম্পূর্ণ করে ম্যাচ জিতিয়েই মাঠ ছাড়েন তিনি। যেভাবে মাঠে দাপট দেখাচ্ছেন বিরাট (Virat Kohli), তাতে বিশেষজ্ঞদের ধারণা শুধু এবারই নয়, ২০২৭-এর বিশ্বকাপেও (ICC World Cup) ভারতীয় দলের হয়ে তিন নম্বরে ব্যাট হাতে দেখা যাবে তাঁকেই। কোহলির আগামী বিশ্বকাপে খেলার সম্ভাবনা বিশ্লেষণ করতে গিয়ে উঠে আসছে তিনটি কারণ।
Read More: AUS vs PAK: অস্ট্রেলিয়া-পাকিস্তান ম্যাচে অজি ভক্তের মুখে ‘ভারত মাতা কি জয়…’ স্লোগান, ভিডিও প্রকাশ্যে আসতেই ভাইরাল !!
ফিটনেসের চূড়ায় রয়েছেন বিরাট-

বর্তমানে বিরাট কোহলির বয়স ৩৪। নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই ৩৫-এ পা দেবেন তিনি। দেড় দশকের বেশী সময় আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে কাটিয়ে ফেলার পরেও নিজেকে ফিটনেসের চূড়ায় রাখতে পেরেছেন কোহলি (Virat Kohli)। মাঠে ডাইভ দিয়ে ক্যাচ ধরা বা রান আটকানোয় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। ইয়ো ইয়ো টেস্টে এখনও উপরের দিকেই থাকে তাঁর স্কোর। ফিটনেসে তিনি টেক্কা দিতে পারেন তরুণ সতীর্থদেরও।
বড় ইনিংস খেলতে সিদ্ধহস্ত কোহলি। পঞ্চাশ ওভার ফিল্ডিং করার পর ব্যাট হাতেও ইনিংসের শেষ অবধি টিকে থাকতে দেখা যায়। দিনের ১০০তম ওভারেও এক রান’কে কেবল নিজের ফিটনেসের কারণে দুইয়ে পর্যবসিত করতে দেখা যায় তাঁকে। যা চমকে দেয় দর্শকদের। যেভাবে তিনি নিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন করেন, তাতে আগামী চার বছরে তাঁর ফিটনেসের স্তর বিরাট নীচে নামার তেমন সম্ভাবনা নেই। ফলে ৩৮ বা ৩৯ বছর বয়সেও অনায়াসেই বিশ্বকাপে খেলতে পারবেন তিনি।
অনবদ্য ফর্মে রয়েছেন কোহলি-

আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে দেড় দশকের বেশী সময় কাটিয়ে ফেলেছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ক্রিকেটের তিন ফর্ম্যাটেই তাঁর ব্যাট থেকে দেখা গিয়েছে রেকর্ডের বন্যা। রানের পাহাড় গড়া কোহলি কেরিয়ারে কঠিন সময়ের মোকাবিলা করেছেন ২০১৯-এর শেষ থেকে ২০২২-এর মাঝামাঝি পর্যন্ত। প্রায় তিন বছর শতরান পান নি তিনি। দেশে হোক বা দেশের বাইরে, চেনা ছন্দে দেখা যায় নি তাঁকে। সাক্ষাৎকারে স্বীকারও করেছেন যে মানসিক বাধার সম্মুখীন হয়েছিলেন তিনি।
বর্তমানে অবশ্য সেই কঠিন অধ্যায়কে পিছনে ফেলে এসেছেন তিনি। ২০২২-এর এশিয়া কাপের ম্যাচে আফগানিস্তানের বিপক্ষে শতরান করে শৃঙ্খলমোচন করতে দেখা গিয়েছিলো বিরাটকে। তারপর থেকেই আবার অদম্য ‘কিং কোহলি।’ ২০২২ টি-২০ বিশ্বকাপ হোক বা ২০২৩ ওয়ান ডে বিশ্বকাপ (ICC World Cup 2023), কোহলির ব্যাটে রানের স্রোত অব্যাহত। এই ছন্দ যদি তিনি ধরে রাখতে পারেন, তাহলে ২০২৭-এর বিশ্বকাপ খেলতে কোনো বাধা নেই বিরাটের।
অভিজ্ঞতার প্রয়োজন রয়েছে দলের-

এই যুগ সন্ধিক্ষণের সামনে দাঁড়িয়ে বর্তমানে ভারতীয় দল। শিখর ধাওয়ান (Shikhar Dhawan) বাদ পড়েছেন। রবিচন্দ্রণ অশ্বিনকে ২০২৩-এর বিশ্বকাপে ফেরানো হলেও তিনি যে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনার অংশ নন তা নিশ্চিত। বর্তমানে ৩৭ বছর বয়স তাঁর। পরবর্তী বিশ্বকাপে দক্ষিণ আফ্রিকা, নামিবিয়ায় তাঁকে দেখার সম্ভাবনা খুবই ক্ষীণ। একই কথা বলা চলে বর্তমান অধিনায়ক রোহিত শর্মাকে (Rohit Sharma) নিয়েও। তাঁরও বয়স ছুঁয়েছে ৩৬। আগামী বিশ্বকাপের সময় হিটম্যানের বয়স হবে ৪০। সম্ভবত ভারতীয় দলে জায়গা ধরে রাখবেন না তিনিও।
শুভমান গিল (Shubman Gill), ঈশান কিষণ, মহম্মদ সিরাজদের মত তরুণ তুর্কিদের টিম ইন্ডিয়াতে সামিল করার প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। আগামী বিশ্বকাপ অবধি তাঁদের সঠিক পথে ‘গাইড’ করার জন্য অন্তত একজন অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের দলে থাকা অত্যন্ত জরুরী। সেই ক্রিকেটার হতে পারেন বিরাট’ই (Virat Kohli)।