TOP 3: ২০০৮ সালে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই-এর হাত ধরে পথচলা শুরু করেছিলো ইন্ডিয়ান প্রিমিয়ার লীগ (IPL)। এরপর সম য় যত এগিয়েছে, ততই জনপ্রিয়তার শিখরে জায়গা করে নিয়েছে এই ফ্র্যাঞ্চাইজি টি-২০ প্রতিযোগিতা। ক্রিকেট ও বিনোদনের এই ককটেল গত দেড় দশকেরও বেশী সময় ধরে চুটিয়ে উপভোগ করছেন অনুরাগীরা। ২০০৮ থেকে ২০২৩- এই লম্বা সময়টাতে নিজেকে বারবার ভেঙেচুরে আরও আকর্ষণীয় করে তুলেছে আইপিএল। ২০২৩-এর মরসুম শেষ হয়েছে মে মাসে। গুজরাত টাইটান্সকে (GT) হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে চেন্নাই সুপার কিংস (CSK)। সপ্তদশ মরসুম শুরু হতে এখনও বাকি মাসখানেক। তবুও এখন থেকেই ক্রিকেটদুনিয়ার চর্চার কেন্দ্রে ভারতীয় ফ্র্যাঞ্চাইজি লীগ। টুর্নামেন্টের আকর্ষণ বজায় রাখার জন্য ২০২৩-এ বেশ কিছু নতুন নিয়ম যোগ করেছে আয়োজক সংস্থা। আগামী বছরেও যুক্ত হচ্ছে আরও কিছু নতুন নিয়ম।
Read More: “কোনো তুলনাই চলে না” IPL-এর সাথে এক আসনে PSL-কে রাখতে রাজী নন ওয়াসিম আক্রম !!
ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার-

আইপিলের (IPL) ষোড়শ মরসুমে ক্রিকেটকে আরও চিত্তাকর্ষক করে তূলতে ভারতীয় বোর্ড ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’ নিয়মটি ব্যবহার করার কথা ভেবেছিলো। এই নিয়ম মোতাবেক দলগুলি একজন পরিবর্ত ক্রিকেটারকে ম্যাচে ব্যবহার করতে পেরেছে নিজেদের সুবিধামত। এর আগে অস্ট্রেলিয়ার বিগ ব্যাশের (BBL) মত টি-২০ লীগে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। আইপিএলে ব্যবহার করার আগে ২০২২ সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে এই নিয়ম’কে পরীক্ষা করে দেখতে চেয়েছিলো ভারতের ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই। ক্রিকেটার ও কোচদের থেকে ইতিবাচক সাড়া পাওয়ার পর আইপিএলের আঙিনাতেও তা ব্যবহার করার ভেবেছে বিসিসিআই।
এই নতুন নিয়ম অনুসারে টসের সময় দলগুলি নিজেরদের প্রথম একাদশের সাথে সাথে আরও চারজন পরিবর্ত ক্রিকেটারের নাম ঘোষণা করতে পারে। ম্যাচ চলাকালীন সেই চারজনের যে কোনো একজন প্রথম একাদশের কোনো ক্রিকেটারের বদলে মাঠে এসে ব্যাটিং বা বোলিং করতে পারে। অনেকটা ফুটবলের সাবস্টিটিউশন নিয়মের মত এই ‘ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার’ রুল। তবে কিছু বাধ্যবাধকতা রয়েছে এই নিয়মের। একবার ইম্প্যাক্ট প্লেয়ার মাঠে নামানোর পর আর তাঁকে বদল করা যাবে না। এছাড়া বৃষ্টি বা অন্য কোনও কারণে যদি ম্যাচ ১০ ওভারের কম হয়ে যায়, তখন এই নিয়ম কার্যকরী থাকবে না। অর্থাৎ চাইলেও পরিবর্ত হিসাবে ‘ইমপ্যাক্ট প্লেয়ার’কে ব্যবহার করতে পারবে না দলগুলি।
নো-ওয়াইডের ক্ষেত্রে চাওয়া যাবে DRS-

আম্পায়ারের সিদ্ধান্তে অখুশি দলগুলির হাতে ডি আর এস (DRS) বা ডিসিশন রিভিউ সিস্টেম ব্যবহারের স্বাধীনতা আগেই দেওয়া হয়েছে ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা আইসিসি’র তরফে। তবে এতদিন তা কেবল সীমাবদ্ধ ছিলো আউট বা নট-আউটের ক্ষেত্রে। আম্পায়ার আউটের সিদ্ধান্ত জানানোর ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে ব্যাটার সেই সিদ্ধান্ত রিভিউ করতে পারতেন। আবার আপিলের ক্ষেত্রে নট-আউট জানানোর ১৫ সেকেন্ডের মধ্যে বোলিং দলের অধিনায়ক রেফারেল চাইতে পারতেন।
২০২৩ সালে আইপিএলের (IPL) ষোড়শ মরসুম থেকে ডিআরএসের ব্যবফার আরও ব্যাপক করা হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা বিসিসিআই-এর পক্ষে থেকে। এবার থেকে আম্পায়ারের দেওয়া ওয়াইড বা নো-বলের সিদ্ধান্তের ক্ষেত্রেও রিভিউ চাওয়ার অধিকার দেওয়া হয়েছে দুই দলকে। প্রথম উইমেন্স প্রিমিয়ার লীগে এই নীতি নিয়েছিলো বোর্ডে। ইতিবাচক সাড়া মেলায় আইপিএলেও কার্যকরী করা হয় এই নিয়ম।
ওভারে দুটি বাউন্সার করা হচ্ছে আইনসম্মত-

তালিকায় তৃতীয় নিয়মটির ব্যবহার দেখা যাবে আগামী মরসুম থেকে। তবে ২০২৩ সালেই সিলমোহর দেওয়া হয়েছে সিদ্ধান্তে। টি-২০ ক্রিকেটকে বরাবরই ব্যাটিং বান্ধব খেলা বলে অভিহিত করে এসেছেন ক্রিকেটবোদ্ধারা। পিচ, ফিল্ডিং বিধিনিষেধ, পাওয়ার প্লে বা মাঠের দৈর্ঘ্য-প্রস্থ, সবই প্রায় ব্যাটারদের কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে এতদিন। বর্তমানে ব্যাট ও বলের সুষ্ঠু লড়াই ফেরাতে সচেষ্ট হয়েছে ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থাগুলি। নড়েচড়ে বসেছে বিসিসিআই-ও।
ব্যাটিং ও বোলিং-এর মাঝে সুস্থ প্রতিদ্বন্দ্বীতা বজায় রাখতে বোলারদের তূণে নতুন অস্ত্র যোগ করার কথা ভেবেছে বিসিসিআই। ২০২৪ সালের আইপিএল (IPL) থেকে একই ওভারে দুটি করে বাউন্সার ব্যবহার করতে পারবেন পেসাররা। এতদিন একের বেশী বাউন্সারের ক্ষেত্রে ওয়াইড বল দিতেন আম্পায়াররা। নতুন নিয়মের পর তা আর দেখা যাবে না। ২০২৩-এর সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিতে (SMAT) ইতিমধ্যেই এই নিয়ম পরীক্ষামূলকভাবে ব্যবহার করে দেখেছে বোর্ড কর্তৃপক্ষ। ক্রিকেটার ও কোচদের কাছ থেকে ইতিবাচক সাড়া মেলায় আগামী মরসুমে আইপিএলে (IPL) ব্যবহার শুরু হচ্ছে এই নিয়ম।