গত দশকে তিন ফর্ম্যাটেই ভারতীয় ব্যাটিংয়ের মুখ ছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। জার্সির রঙ সাদা হোক বা নীল, বলের রঙ লাল হোক বা সাদা-দুর্দান্ত পারফর্ম্যান্সে বারবার ‘মেন ইন ব্লু’কে সাফল্য এনে দিয়েছেন তিনি। কিন্তু দেখতে দেখতে আপাতত সায়াহ্নের পথে তাঁর কেরিয়ার। আগামী নভেম্বরে ৩৬ পেরোবেন মহাতারকা। ইতিমধ্যে টেস্ট ও টি-২০ থেকে সরেও দাঁড়িয়েছেন বিরাট। ২০২৭-এর বিশ্বকাপকে পাখির চোখ করে আপাতত শুধুই ওয়ান ডে খেলছেন তিনি। শচীন তেন্ডুলকরের শূন্যস্থান যেমন কোহলি (Virat Kohli) পূরণ করেছিলেন, তেমনই বিরাটের ছেড়ে যাওয়া সিংহাসন’কে নিজের করে নেবেন কে? প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে ক্রিকেটমহলে। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে শুভমান গিল’কে (Shubman Gill) বেছে নিচ্ছেন অধিকাংশ ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ। ওয়ান ডে ও টেস্টে তাঁর পারফর্ম্যান্স আশাপ্রদ হলেও চিন্তা থাকছে টি-২০ নিয়ে।
Read More: এশিয়া কাপের সাথে ভক্তদের মন জিতলেন সূর্যকুমার, দেশের জন্য করলেন প্রশংসনীয় কাজ !!
টি-২০তে শুভমান নয়, এগিয়ে তিলক-

ওয়ান ডে’তে বিরাটের (Virat Kohli) উত্তরসূরি হয়ে ওঠার পরীক্ষায় পাস করেছেন শুভমান গিল (Shubman Gill)। নজর কেড়েছে তাঁর রানের খিদে। এশিয়া কাপ বা বিশ্বকাপের মত টুর্নামেন্টেও ইতিমধ্যেই ভালো পারফর্ম্যান্স করেছেন তিনি। ৫৫ ম্যাচে প্রায় ৬০ গড়ে ২৭৭৫ রান করেছেন পাঞ্জাবের তরুণ। ৮টি শতরান ও ১৫টি অর্ধশতকও করে ফেলেছেন শুভমান। ধুন্ধুমার ব্যাটিংয়ে বুঝিয়ে দিয়েছেন যে আরও বড় দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে প্রস্তুত তিনি। টেস্টে শুরুটা আহামরি না হলেও ধীরে ধীরে সাফল্যের শৃঙ্গজয়ের দিকে এগিয়ে চলেছেন ডান হাতি ব্যাটার। সম্প্রতি তাঁকে অধিনায়ক নির্বাচিত করা হয়েছে। কোহলির (Virat Kohli) মতই বড় দায়িত্ব পেলে তাঁর পারফর্ম্যান্সের গ্রাফ উপরের দিকে ওঠে তা বুঝিয়ে দিয়েছেন শুভমান। ইংল্যান্ড সফরে মাত্র ৫ টেস্টে ৭৫.৪০ গড়ে করেছেন ৭৫৪ রান। লাল বলের ক্রিকেটেও তাই তাঁকে ঘিরে বেড়েছে প্রত্যাশা।
টেস্ট ও ওয়ান ডে’তে ভরসা যোগাতে পারলেও আন্তর্জাতিক টি-২০তে এখনও অনেকটাই অন্ধকারে শুভমান গিলের (Shubman Gill) কেরিয়ার। গুটিকয়েক ভালো ইনিংস তিনি যে খেলেন নি তা নয়, কিন্তু তার পরেও একাদশে তাঁর জায়গা পাওয়া নিয়ে দ্বিধা থেকেই যাচ্ছে। ২৮ ম্যাচে মাত্র ২৮.২০ গড়ে ৭০৫ রান করতে পেরেছেন তিনি। সম্প্রতি এশিয়া কাপে আহামরি সাফল্য পান নি শুভমান। কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাটে কোহলির যোগ্য উত্তরসূরি হওয়ার দৌড়ে তাই ভারতীয় ক্রিকেটমহল এগিয়ে রাখছে তিলক বর্মা’কে (Tilak Varma)। হায়দ্রাবাদের তরুণের টি-২০ অভিষেক হয়েছিলো ২০২৩-এ। ৩২ ম্যাচে ৫৩.৪৪ গড়ে তিনি করে ফেলেছেন ৯৩২ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে জোড়া শতরান করেছেন। স্নায়ুর চাপ সামলে যেভাবে বিরাট (Virat Kohli) একের পর এক কঠিন ম্যাচ জেতাতেন ভারতকে, তেমনই গতকাল পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ৬৯* করে দলকে জিতিয়েছেন নবম এশিয়া কাপ।
ফাইনাল জিতিয়ে উচ্ছ্বাস তিলকের গলায়-

চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ১৪৭ তাড়া করতে নেমে এশিয়া কাপের ফাইনালে একটা সময় ভারতের স্কোর ছিলো ৩ উইকেটের বিনিময়ে ২০ রান। ধুঁকতে থাকা ইনিংসে প্রাণসঞ্চার করেন তিলক বর্মা। প্রথমে সঞ্জু স্যামসন ও পরে শিবম দুবে’র সাথে জুটি গড়ে তিনি বৈতরণী পার করান টিম ইন্ডিয়াকে। ৫৩ বল্র ৬৯ করে শেষমেশ অপরাজিত থাকেন তিনি। দলকে সাফল্য এনে দিতে পেরে উচ্ছ্বসিত বছর ২৩-এর তরুণ। ম্যাচের সেরার পুরষ্কার হাতে জানান, “বেশ চাপ ছিলো। ওরা দারুণ বোলিং করছিলো। গতির হেরফের ঘটিয়ে আক্রমণ শানাচ্ছিলো। আমি নিঃশ্বাস নিচ্ছিলাম আর নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করছিলাম।” সতীর্থ সঞ্জু ও শিবমের প্রশংসা করেছেন তিনি। আত্মসমীক্ষাও করেছেন তিলক। জানান, “আপনাকে নমনীয় হতে হবে। আমি যে কোনো পজিশনে ব্যাটিংয়ের জন্য প্রস্তুত ছিলাম। নিজের খেলার উপর আস্থা ছিলো।”