২০০৮ সালে অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পর ক্রিকেটদুনিয়ায় লাইমলাইট কেড়ে নিয়েছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। সেই বছরই শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে হয় আন্তর্জাতিক অভিষেক। একদিনের ক্রিকেট দিয়ে পথচলা শুরু হয়েছিলো তাঁর। এরপর ২০১০-এ হয় টি-২০ ও ২০১১তে খেলেন টেস্ট। পরের দেড় দশককে কোহলি যুগ বললে খুব একটা ভুল হয় না। ব্যাট হাতে একের পর এক শৃঙ্গ স্পর্শ করেছেন তিনি। ২৫ হাজারের বেশী রান করেছেন। শতকের মাইলস্টোন পেরিয়েছেন ৮০ বার। শচীন তেন্ডুলকরের মত কিংবদন্তিকে সরিয়ে ওডিআই-তে সর্বোচ্চ সংখ্যক শতরানের মালিক হয়েছেন। একইসাথে জিতেছেন বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ও টি-২০ বিশ্বকাপের মত ট্রফি। বর্তমানে বিরাটের বয়স ছুঁয়েছে ৩৬। টি-২০ থেকে ইতিমধ্যেই সরে দাঁড়িয়েছেন। বাকি দুই ফর্ম্যাটেও আর বেশীদিন হয়ত বাকি নেই তাঁর কেরিয়ার। কে হবেন কোহলির (Virat Kohli) উত্তরসূরি? প্রশ্নের সম্মুখীন ভারতীয় ক্রিকেট।
Read More: IND vs ENG 3RD T20I HIGHLIGHS: তৃতীয় ম্যাচে ঘুরে দাঁড়ালো ইংল্যান্ড, ২৫ রানে জয় সুনিশ্চিত করলো বাটলার বাহিনী !!
দ্বিতীয় বিরাট হতে পারেন তিলক বর্মা-
গত জুনে টি-২০ ক্রিকেট থেকে সরে দাঁড়িয়েছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ফাঁকা হয়েছে ব্যাটিং অর্ডারের তিন নম্বর পজিশনটি। মহাতারকার শূন্যস্থান পূরণের দায়িত্ব কিছুদিন নিজের কাঁধেই তুলে নিয়েছিলেন নবনির্বাচিত অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব। শ্রীলঙ্কা বা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে তিনে খেলেছেন তিনি। কিন্তু ভারতীয় ক্রিকেটের ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রী’ যে তিনের থেকে চারেই বেশী সাবলীল, তার সাক্ষ্য দিচ্ছে তাঁর পরিসংখ্যান। দক্ষিণ আফ্রিকায় তরুণ তুর্কি তিলক বর্মা’কে (Tilak Varma) তিন নম্বর পজিশনটি ছেড়ে দিয়ে নিজের পছন্দের চারে ফিরে যান তিনি। অধিনায়কের এই একটা সিদ্ধান্তই ‘বর’ হয়ে দেখা দেয় হায়দ্রাবাদের তিলকের ভাগ্যাকাশে। প্রোটিয়াদের বিরুদ্ধে সেঞ্চুরিয়ন ও জোহানেসবার্গে পরপর দু’টি ম্যাচে শতরান করেন তিনি। প্রথমটিতে ১৯১ স্ট্রাইক রেটে ১০৭* করেন তিনি। দ্বিতীয়টিতে করেন ১২০। স্ট্রাইক রেট এক লাফে তা বেড়ে দাঁড়ায় ২৫৫তে।
প্রয়োজনে যেমন আগ্রাসী হতে পারেন কোহলি (Virat Kohli), তেমনই কঠিন পরিস্থিতিতে উইকেটে শেষ অবধি টিকে থেকে কার্যসিদ্ধি করে আসাও তাঁর অন্যতম ইউএসপি। ঠিক তেমন গুণই রয়েছে তিলকেরও (Tilak Varma)। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে চেপকে তার প্রমাণ দিলেন তিনি। ১৩২-এর লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে একটা সময় পরপর উইকেট হারিয়ে বেশ চাপে পড়ে গিয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া। অনেকেই ভেবেছিলেন যে হাতছাড়া হবে ম্যাচ। কিন্তু রুখে দাঁড়ান তিলক। স্নায়ুর চাপ সামলে রেখে প্রথমে ওয়াশিংটন সুন্দর (Washington Sundar) ও পরে রবি বিষ্ণোইকে সঙ্গী করে ভারতকে এনে দেয় কাঙ্ক্ষিত জয়। ৫৩ বলে ৭২ করে অপরাজিত থাকেন তিনি। পাকিস্তান বা অস্ট্রেলিয়ার মত প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে এই রকম দায়িত্বশীল ইনিংস বেশ কয়েকবার খেলেছেন কোহলি (Virat Kohli)। বছর ২১-এর তিলকের (Tilak Varma) মধ্যেও বিরাটসুলভ পরিণতিবোধ দেখে খুশি ক্রিকেটজনতা।
রঞ্জি ট্রফি খেলবেন বিরাট কোহলি-
ফর্ম সমস্যায় ভুগছেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ২০২৪-এর টি-২০ বিশ্বকাপে আশানুরূপ পারফর্ম্যান্স করতে পারেন নি তিনি। এরপর শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে একদিনের সিরিজে রানের মুখ দেখেন নি মহাতারকা। ঘরের মাঠে বাংলাদেশ বা নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে টেস্টেও সফল হন নি। অফস্টাম্পের বাইরের লাইনের বিরুদ্ধে তাঁর দুর্বলতা ফের একবার প্রকাশ হয়ে পড়েছে অস্ট্রেলিয়া সফরে। পার্থ-এ দ্বিতীয় ইনিংস করা একটি শতরান ছাড়া এবারের বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে একটিও কার্যকরী ইনিংস খেলতে পারেন নি তিনি। বারবার পঞ্চম বা ষষ্ঠ স্টাম্পের লাইনে থাকা ডেলিভারিতে খোঁচা দিয়ে বা ড্রাইভ মারতে গিয়ে ধরা পড়েছেন স্লিপ ফিল্ডার বা উইকেটরক্ষকের হাতে। অন্ধকার সময় কাটিয়ে উঠতে ঘরোয়া ক্রিকেটকেই আঁকড়ে ধরছেন তিনি। আগামীকাল থেকে রেলওয়েজের বিরুদ্ধে ম্যাচ রয়েছে দিল্লীর। সেখানে খেলতে দেখা যাবে মহাতারকাকে। ২০১২’র পর এই প্রথম রঞ্জি খেলবেন কোহলি (Virat Kohli)।