IPL 2025: ফেসবুক, ট্যুইটার, ইন্সটাগ্রামের মত সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে জনপ্রিয়তার নিরিখে সবার আগে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। কিন্তু ট্রফি জয়ের ক্ষেত্রে সবার শেষেই আটকে রয়েছে তারা। ২০০৮ থেকে আইপিএলে (IPL) অংশ নিচ্ছে ‘গার্ডেন সিটি’র ফ্র্যাঞ্চাইজি। বেশ কয়েকবার খেলেছে ফাইনাল’ও। কিন্তু ফিরতে হয়েছে খালি হাতেই। তীরে এসে তরী যাতে আর না ডোবে তা নিশ্চিত করতে এবার মরিয়া কর্মকর্তারা। সেই কারণেই বিগত বছরের স্কোয়াড থেকে ধরে রাখা হয়েছে মাত্র তিনজনকে। সম্পূর্ণ স্কোয়াডের ভোল পালটে ফেলার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন তাঁরা। গত নভেম্বরের মেগা নিলাম থেকে নতুন করে গড়া হয়েছে দল। ব্যাটিং, বোলিং ও ফিল্ডিং-ক্রিকেটের তিন বিভাগকেই যথেষ্ট গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ক্রিকেটার নির্বাচনের সময়। ‘নিউ লুক’ আরসিবি (RCB) স্বপ্ন দেখাচ্ছে সমর্থকদের। এই তিন কারণে ট্রফি খরা কাটবে আরসিবি’র, মনে করছেন বিশেষজ্ঞরাও।
Read More: IPL 2025: হার্দিক বাদ পড়তেই কপাল খুললো এই ক্রিকেটারের, সরাসরি জায়গা পেলেন মুম্বই একাদশে !!
বোলিং বিভাগে শক্তি বেড়েছে বেঙ্গালুরুর-

বোলিং বরাবরই বেঙ্গালুরুর (RCB) অন্যতম মাথাব্যথার কারণ। ২০০’র বেশী রান স্কোরবোর্ডে তুলেও বহু ম্যাচ হারতে হয়েছে স্রেফ বোলিং ব্যর্থতার কারণেই। এবারের মেগা নিলামে ভঙ্গুর বোলিং আক্রমণকে শক্তিশালী করার দিকে বিশেষ নজর দিয়েছিলেন রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু কর্মকর্তারা। ‘ঘরের ছেলে’ হয়ে ওঠা মহম্মদ সিরাজকে ছেড়ে দিতেও দ্বিধা করেন নি তাঁরা। বদলে বিনিয়োগ করেছেন ভুবনেশ্বর কুমার (Bhuvneshwar Kumar), জশ হ্যাজেলউডদের মত টি-২০ স্পেশ্যালিস্টদের উপর। ধরে রাখা হয়েছে তরুণ তুর্কি যশ দয়ালকে। পাওয়ার প্লে ও ডেথ ওভারে প্রতিপক্ষের উপর চাপ বাড়ানোর দায়িত্ব থাকবে এই তিনজন পেসারের উপরেই। যুজবেন্দ্র চাহাল দল ছাড়ার পর দুর্বল হয়ে পড়েছিলো রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্সের স্পিন বিভাগও। সেই সমস্যা সমাধানেও পদক্ষেপ নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি। সুয়শ শর্মার মত প্রতিভাবান তরুণকে দলে নেওয়া হয়েছে। রয়েছেন লিভিংস্টোন, ক্রুণাল পাণ্ডিয়ারাও।
বেঙ্গালুরু স্কোয়াডের দুর্দান্ত গভীরতা-

এবার ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের নজর কেড়ে নিয়েছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু স্কোয়াডের গভীরতাও। গত তিন বছর কোহলি, দু প্লেসি ও গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের উপর অতিরিক্ত নির্ভরশীল ছিলো তারা। আশানুরূপ ছিলো না বাকিদের পারফর্ম্যান্স। অষ্টাদশতম আইপিএলে (IPL) সেই সমস্যা এড়াতে একসাথে একঝাঁক তারকাকে দলে সামিল করেছেন কর্মকর্তারা। চোট-আঘাতের মত সমস্যাও যাতে কোনো অবস্থাতেই স্কোয়াডের ভারসাম্য বিঘ্নিত করতে না পারে, নজর রাখা হয়েছে তাতেও। প্রত্যেক পজিশনের জন্য একাধিক বিকল্প বা ব্যাক আপ রাখা হয়েছে দলে। টিম ডেভিড, লিয়াম লিভিংস্টোনদের (Liam Livingstone) মত বিদেশী অলরাউন্ডারদের বিকল্প হিসেবে ওয়েস্ট ইন্ডিজের রোমারিও শেপার্ড, ফিল সল্টের বদলি হিসেবে জিতেশ শর্মা রয়েছে। ভুবনেশ্বর কুমার বা জশ হ্যাজেলউডের বিকল্প হিসেবে রসিক দার সালাম, নূয়ান তুষারা, লুঙ্গি এনগিডিদের মত তারকাদের নির্দ্বিধায় খেলাতে পারেন কোচ অ্যান্ডি ফ্লাওয়ার।
ভরাট হয়েছে মিডল অর্ডারের ফাঁকফোকর-

সাম্প্রতিক অতীতে একমাত্র রজত পাটিদার ছাড়া বেঙ্গালুরুর মিডল অর্ডারে রানের মুখ দেখেন নি কেউই। যা ট্রফি জয়ের পথে অন্যতম অন্তরায় হয়ে দাঁড়াচ্ছিলো বারবার। সাফল্যের সন্ধানে মিডল অর্ডার মজবুত করারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে ফ্র্যাঞ্চাইজি। এবার তাদের হয়ে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পারেন দেবদত্ত পাডিক্কাল (Devdutt Padikkal)। কর্ণাটকের তরুণের ঘর ওয়াপসি হচ্ছে ২০২৫-এর আইপিএলে। চারে থাকছেন অধিনায়ক পাটিদার স্বয়ং। পাঁচ নম্বরে দেখা যেতে পারে লিয়াম লিভিংস্টোনকে। ইংল্যান্ডের তারকার ধুন্ধুমার ইনিংস খেলার দক্ষতার সাথে পরিচিত গোটা ক্রিকেটমহল। ছয় নম্বরে দেখা যেতে পারে অস্ট্রেলীয় অলরাউন্ডার টিম ডেভিডকে (Tim David)। ঝোড়ো ব্যাটিং করতে সিদ্ধহস্ত তিনিও। সাত নম্বরে নেমে কার্যকরী ইনিংস খেলতে পারেন ক্রুণাল পাণ্ডিয়াও। ব্যাটিং বিকল্পের সংখ্যা বাড়ায় নিঃসন্দেহে হাসি ফুটেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স অনুরাগীদের মুখে।