ভারতীয় টেস্ট অধিনায়কদের মধ্যে সাফল্যের নিরিখে শীর্ষস্থানে থাকবেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। ২০১৪-১৫ মরসুমে অস্ট্রেলিয়া সফরের মাঝপথে হঠাৎ’ই লাল বলের ক্রিকেটকে বিদায় জানান মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। নেতৃত্বের ব্যাটন ওঠে বিরাটের হাতে। ২০২২-এর গোড়ায় পদত্যাগ করার আগে পর্যন্ত ৬৮টি টেস্ট ম্যাচে দেশের অধিনায়কত্ব করেছেন তিনি। এর মধ্যে জিতেছেন ৪০টি ম্যাচ। হার মাত্র ১৭টিতে। কোহলি (Virat Kohli) জমানায় অমীমাংসিত ছিলো ১১টি ম্যাচ। ঘরের মাঠে একটিও টেস্ট সিরিজ হাতছাড়া হয় নি তাঁর। এমনকি ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ইংল্যান্ডের মাঠে টেস্ট জিতেছেন। ২০১৮-১৯ মরসুমে তাঁর হাত ধরে প্রথমবার অস্ট্রেলিয়াতে সিরিজ জেতে ‘মেন ইন ব্লু।’ দক্ষিণ আফ্রিকার মাঠে সিরিজ জিততে না পারলেও টেস্ট জিতেছিলো বিরাটের টিম ইন্ডিয়া (Team India)।
Read More: IND vs AUS 4th Test: “রোহিত ভুল করেছে…” ওপেনিং বিতর্কে রাহুলের পাশেই মঞ্জরেকর, দুষলেন ভারত অধিনায়ককে !!
কোহলির সাফল্যে অবদান ছিলো তিন তারকার-
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় (Sourav Ganguly), মহেন্দ্র সিং ধোনি’রা টেস্ট ক্রিকেটে অধিনায়ক হিসেবে পিছিয়েই রয়েছেন বিরাট কোহলির (Virat Kohli) তুলনায়। অন্তত পরিসংখ্যান জানাচ্ছে তেমনটাই। ২০১৪ থেকে ২০২২-এই সময়কালে ব্যাট হাতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়েছেন দিল্লীর ক্রিকেটার, পাশাপাশি তাঁর সাফল্য অবদান রেখেছেন তাঁর সতীর্থরাও। এই তালিকায় উপরের দিকে নাম থাকবে ঈশান্ত শর্মা (Ishant Sharma), অজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane) ও চেতেশ্বর পূজারার (Cheteshwar Pujara)। প্রতিপক্ষের ২০ উইকেট তুলতে না পারলে বিদেশের মাঠে সাফল্য পাওয়া সম্ভব নয়, অধিনায়কত্ব কেরিয়ারের গোড়াতেই এই সত্যটি উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন বিরাট (Virat Kohli)। সেই কারণেই জোর দিয়েছিলেন ফাস্ট বোলিং-এ। দলে এনেছিলেন ফিটনেস সংস্কৃতি। তাঁর সময়কালে ফাস্ট বোলিং বিভাগের অঘোষিত নেতা হয়ে উঠেছিলেন ঈশান্ত।
২০১৪ থেকে ২০২১-এর মধ্যে কোহলি (Virat Kohli) নেতা থাকাকালীন ৪৩টি টেস্ট খেলে ঈশান্ত নিয়েছেন ১২১টি উইকেট। এর মধ্যে পাঁচ বার ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেওয়ার কৃতিত্ব’ও অর্জন করেছেন তিনি। শামি-বুমরাহদের সঙ্গে নিয়ে ভারতের পেস আক্রমণকে করে তুলেছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা। পূজারা ও রাহানের (Ajinkya Rahane) পারফর্ম্যান্স’ও সেই সময়কালে ছিলো নজরকাড়া। দেশে হোক বা বিদেশে, যখনই দল বিপদে পড়েছে ব্যাট হাতে তাঁরা দু’জনই ‘ড্যামেজ কন্ট্রোলে’ বড় ভূমিকা নেন। বিরাট জমানায় টেস্ট ক্রিকেটে দুই সেরা সাফল্য অর্থাৎ বিদেশের মাঠে দুইবার বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি (BGT) জয়ে বড় ভূমিকা নিয়েছিলেন তাঁরা। ২০১৮-১৯ মরসুমে পূজারা হন সিরিজ সেরা। আর ২০২০-২১’র পূর্ণ সময়ের অধিনায়ক বিরাটের অনুপস্থিতিতে দলকে সাফল্যের পথে পরিচালনা করেছিলেন রাহানেই।
রোহিত জমানায় ব্রাত্য ত্রয়ী-
২০২২ সালে ভারতীয় টেস্ট দলের নেতৃত্ব পান রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। তাঁর অধীনে একটি টেস্ট ম্যাচেও সুযোগ পান নি ঈশান্ত (Ishan Sharma)। সিনিয়র তারকাকে ছেঁটে ফেলে মহম্মদ সিরাজ, আকাশ দীপদের সুযোগ দিয়েছেন রোহিত। কিন্তু এখনও পর্যন্ত গতি বা স্যুইং-এর জাদুতে দিল্লীর তারকাকে পিছনে ফেলতে পারেন নি তাঁরা। ঈশান্তের নামের পাশে থাকা ৩১১টি উইকেট তাঁর দক্ষতারই সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। অন্যদিকে রাহানে (Ajinkya Rahane) ও পূজারা-দু’জনেই বাদ পড়েছিলেন রোহিত জমানার শুরুর দিকে। পরে তাঁদের ফেরানোর সিদ্ধান্ত নেয় তৎকালীন টিম ম্যানেজমেন্ট। দীর্ঘস্থায়ী হতে পারেন নি তাঁরা। ২০২৩-এর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পর ফের বাদের তালিকায় লেখা হয় তাঁদের নাম। সাম্প্রতিক টেস্ট সিরিজ গুলিতে ভারতের নড়বড়ে মিডল অর্ডারের নেপথ্যে তাঁদের দু’জনের অনুপস্থিতিই অন্যতম কারণ বলে মত বিশেষজ্ঞদের।