ভারতীয় ক্রিকেট দলের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করারই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ড্রিম ইলেভেন (Dream 11)। ২০২৩ সালের জুলাই মাসে ৩৫৮ কোটি টাকার বিনিময়ে ফ্র্যান্টাসি গেমিং সংস্থার সাথে তিন বছরের চুক্তি করেছিলো বিসিসিআই। সেই হিসেবে চুক্তির মেয়াদ ফুরোতে এখনও প্রায় এক বছর বাকি। কিন্তু কেন্দ্রের নয়া নিয়মে ব্যাকফুটে চলে যাওয়া ড্রিম ইলেভেন জানিয়ে দিয়েছে যে আগামীতে রোহিত শর্মা, বিরাট কোহলিদের স্পন্সর করা সম্ভব নয় তাদের পক্ষে। দিনকয়েক আগেই বোর্ডের অফিসে গিয়েছিলেন ড্রিম ইলেভেনের (Dream 11) প্রতিনিধিরা। বিসিসিআই সিইও হেমাঙ্গ আমিন’কে নিজেদের অবস্থান জানিয়ে এসেছিলেন তাঁরা। শেষমেশ আজ সকালে সংবাদসংস্থা ANI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বিচ্ছেদের বিষয়টিতে সিলমোহর দেন ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থার সচিব দেবজিৎ সইকিয়া স্বয়ং।
Read More:এশিয়া কাপের আগে হাতছাড়া ৩৫৮ কোটি টাকা ? Dream11’র বিদায়ে মাথায় হাত বিসিসিআই-এর !!
নতুন স্পন্সরের সন্ধানে বোর্ড-

সামনেই রয়েছে এশিয়া কাপ (Asia Cup 2025)। ড্রিম ইলেভেন (Dream 11) সরে দাঁড়ানোয় আপাতত কোনো স্পন্সর ছাড়াই মাঠে নামতে হবে সূর্যকুমার যাদবের নেতৃত্বাধীন দলকে। অচলাবস্থা দ্রুত কাটাতে বদ্ধপরিকর বিসিসিআই। সম্ভাব্য স্পন্সরের বাণিজ্যিক স্বচ্ছতার বিষয়টি খতিয়ে দেখেই যে চুক্তি করা হবে তা জানিয়ে দিয়েছেন বোর্ডসচিব দেবজিৎ সইকিয়া। ক্রিকেটমহলের অলিন্দে কান পাতলে শোনা যাচ্ছে টাটা সন্সের নাম। ক্রিকেটে বিনিয়োগের অভিজ্ঞতা রয়েছে তাদের। দেশ-বিদেশে রয়েছে সুখ্যাতিও। ২০২৩-এ ড্রিম ইলেভেনকে (Dream 11) সরিয়েই আইপিএলের (IPL) টাইটেল স্পন্সর হয়েছিলো তারা। ২০২৮ অবধি চুক্তি রয়েছে তাদের সাথে। এমনকি উইমেন্স প্রিমিয়ার লীগেও ‘টাইটেল স্পন্সর’-এর ভূমিকায় রয়েছে টাটা’ই। জাতীয় দলেও বিনিয়োগ করতে পারে তারা, অনুমান বিশেষজ্ঞমহলের।
একমাত্র ওপো ছাড়া ‘লিড স্পন্সর’ হিসেবে কোনো বিদেশী সংস্থার সাথে সাম্প্রতিক অতীতে চুক্তি করেনি বিসিসিআই। সাহারা, মাইক্রোম্যাক্স বা বাইজুসের মত ভারতীয় সংস্থার লোগোই দেখা গিয়েছে টিম ইন্ডিয়ার জার্সিতে। কিন্তু ড্রিম ইলেভেনের বিদায়ের পর আলোচনায় জায়গা করে নিয়েছে জাপানি গাড়ি প্রস্তুতকারক সংস্থা টয়োটার (Toyota) নাম। আগে অস্ট্রেলিয়ার জার্সিতে লোগো দেখা যেত তাদের। বর্তমানে ইংল্যান্ডের ‘লিড স্পন্সর’ হিসেবে রয়েছে টয়োটা। সূত্রের খবর এবার ভারতীয় ক্রিকেটে বিনিয়োগে আগ্রহী তারা। দৌড়ে রয়েছে একগুচ্ছ ভারতীয় বহুজাতিক সংস্থাও। ভাসছে রিলায়েন্স-জিও, আদানি উইলমার, পতঞ্জলি বা আদিত্য বিড়লা গোষ্ঠীর নাম। শেষমেশ কি সিদ্ধান্ত নেয় বোর্ড, সেদিকেই তাকিয়ে সকলে।
স্পন্সর টিকছে না BCCI-তে, উদ্বিগ্ন নেটদুনিয়া-

ড্রিম ইলেভেন সরে দাঁড়ানোর পর নেটদুনিয়ায় শুরু হয়েছে তুমুল হইচই। অতীতের উদাহরণ টেনে এনে অনেকেই দাবী করছেন যে বিসিসিআই-এর সাথে যে সংস্থাই গাঁটছাড়া বাঁধে, তারাই নাকি পড়ে ঘোর সঙ্কটে। দীর্ঘসময় ‘মেন ইন ব্লু’র জার্সিতে দেখা গিয়েছে সুব্রত রায়ের মালিকানাধীন সাহারা সংস্থার লোগো। আর্থিক নয়ছয়ের অভিযোগ উঠেছিলো তাদের বিরুদ্ধে। এরপর টিম ইন্ডিয়ার ‘লিড স্পন্সর’ হয় স্টার সংস্থা। আর্থিক সঙ্কটে পড়ে তারাও। স্টার সরে যাওয়ার পর মোবাইল প্রস্তুতকারী সংস্থা ওপো’র সাথে চুক্তি করেছিলো বিসিসিআই। চীনা দ্রব্য নিষিদ্ধ হওয়ায় সরতে বাধ্য হয় তারাও। এরপর স্পন্সর হিসেবে যুক্ত হয়েছিলো এড-টেক সংস্থা বাইজুস। দেউলিয়া হয়েছে তারাও। ‘বিসিসিআই-এর অভিশাপ’-এর সেই দীর্ঘ তালিকায় এবার যুক্ত হলো ড্রিম ইলেভেনের নামও।