ভারতীয় ক্রিকেটের পোস্টার বয় বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। গত দেড় দশকে ব্যাট হাতে একের পর এক শৃঙ্গ জয় করেছেন তিনি। জিতেছেন ওয়ান ডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি, এমনকি টি-২০ বিশ্বকাপও। ঝুলিতে রয়েছে ২৫০০০-এর বেশী আন্তর্জাতিক রান। শচীনকে টপকে ওয়ান ডে ক্রিকেটে সর্বোচ্চ সংখ্যক শতরানের মালিক হয়েছেন তিনি। এমনকি আন্তর্জাতিক আঙিনায় সর্বোচ্চ সংখ্যক শতকের নিরিখেও রয়েছেন দ্বিতীয় স্থানে। শুধু ব্যাটার হিসেবে নয়, অধিনায়ক হিসেবেও ক্রিকেটের বাইশ গজে নিজের প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন বিরাট (Virat Kohli)। তাঁর উত্থানের শুরুটা ২০০৮ সালে। মালয়েশিয়াতে অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপ জয়ের পরে আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁকে। বিরাটের কেরিয়ারের গ্রাফ ক্রমেই উপরের দিকে গেলেও তাঁর অনুর্দ্ধ-১৯ দলের সতীর্থ তরুবর কোহলি (Taruwar Kohli) কিন্তু পৌঁছতে পারেন নি সেই উচ্চতায়। ঘরোয়া ক্রিকেটেই আটকে থেকেছেন তিনি।
Read More: যশস্বীর দলবদল রুখেছেন রোহিত শর্মা, চাঞ্চল্যকর তথ্য সামনে আনলেন MCA কর্মকর্তা !!
দুর্দান্ত ট্রিপল সেঞ্চুরি কোহলির-

২০১৩’র রঞ্জি ট্রফির কোয়ার্টার ফাইনালে ঝাড়খণ্ডের মুখোমুখি হয়েছিলো পাঞ্জাব। জামশেদপুরের মাঠে টসে জিতে প্রথম ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন ঝাড়খণ্ড অধিনায়ক শাহবাজ নাদিম (Shahbaz Nadeem)। রামিজ নিমত (১০০) ও ঈশাঙ্ক জাগ্গি’র (১৩২) জোড়া শতরানের সৌজন্যে প্রথম ইনিংসে ৪০১ রান তুলে ফেলে তারা। জবাবে ব্যাট করতে নেমে পাঞ্জাব প্রথম উইকেট হারায় ৭৫ রানের মাথায়। আউট হন রবি ইন্দর সিং। তিন নম্বরে ব্যাট করতে নেমেছিলেন তরুবর কোহলি (Taruwar Kohli)। তাঁকে আর বাইশ গজ থেকে নড়ানো সম্ভব হয় নি ঝাড়খণ্ড বোলারদের পক্ষে। শাহবাজ নাদীম, অজয় যাদব, শঙ্কর রাও, ঈশাঙ্ক জাগ্গি’দের বোলিং আক্রমণকে পর্যুদস্ত করেন তিনি। ৮২৩ মিনিট ক্রিজে কাটিয়ে ৬০৯ বল খেলে অপরাজিত থাকেন ৩০০ করে। মারেন ৩৪টি বাউন্ডারি ও ২টি ছক্কা।
জীবনজ্যোত সিং ও উদয় কৌল’ও (Uday Kaul) শতরান করেছিলেন পাঞ্জাবের হয়ে। ৯৬ করে আউট হন মনদীপ সিং। ঝাড়খণ্ডের বিরুদ্ধে মাত্র ৩ উইকেট হারিয়ে ৬৯৯ রান স্কোরবোর্ডে তুলে ফেলে পাঞ্জাব দল। প্রথম ইনিংসে তাদের লিড দাঁড়ায় ২৯৮ রানের। দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যাট করতে নেমেছিলো ঝাড়খণ্ড। কিন্তু বেশীদূর এগোনো যায় নি খেলা। ১৪ ওভারে তাদের স্কোরবোর্ডে যখন বিনা উইকেটে ৩৩ রান, তখনই শেষ হয়ে যায় ম্যাচ। প্রথম ইনিংসে এগিয়ে থাকার সৌজন্যে সেমিফাইনালে পৌঁছে যায় পাঞ্জাব। ২০১৩’র সেই ট্রিপল সেঞ্চুরির বছর ছয়েক পর আরও একবার রঞ্জি ট্রফিতে ত্রিশতকের ম্যাজিক ফিগার পার করেছিলেন তরুবর কোহলি (Taruwar Kohli)। তবে সেবার পাঞ্জাব নয় বরং নজির গড়েছিলেন মিজোরামের জার্সিতে। অরুণাচলের বিরুদ্ধে ২০১৯-এ অপরাজিত থাকেন ৩০৭ রান করে।
তরুবর কোহলির কেরিয়ার পরিসংখ্যান-

জলন্ধরে জন্ম তরুবর কোহলির (Taruwar Kohli)। ২০০৮-এর অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপের পর রবীন্দ্র জাদেজা, বিরাট কোহলি, শ্রীবৎস গোস্বামীদের মতই লাইমলাইটে এসেছিলেন তিনিও। জায়গা করে নেন আইপিএলে। রাজস্থান রয়্যালসের জার্সিতে মাঠে নেমেছিলেন। ঐ বছরই পাঞ্জাবের জার্সিতে ঘরোয়া ক্রিকেটেও অভিষেক হয় তাঁর। দেড় দশক বিস্তৃত কেরিয়ারে তিনি খেলেছেন ৫৫টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ। ৫৩.৮০ গড়ে সংগ্রহ ৪৫৭৩ রান। দু’টি ত্রিশতক-সহ মোট ১৪ বার তিন অঙ্কের রান করেছেন তিনি। অর্ধশতক ১৮টি। লিস্ট-এ ক্রিকেটে ৭২টি ম্যাচে করেছেন ১৯১৩ রান। গড় ৪০-এর কাছাকাছি। শতক ৩টি, অর্ধশতক ১১টি। ৫৭টি টি-২০ খেলেছেন তরুবর। ২৪.৫৮ গড়ে রান সংখ্যা ১০৫৭। ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছেন তিনি। এই মুহূর্তে ভারসান্ট স্পোর্টস নামে একটি ক্রিকেট সরঞ্জাম প্রস্তুতকারক সংস্থার মালিক তিনি। তাঁর একটি পডকাস্ট অনুষ্ঠানও রয়েছে।
Also Read: রোহিত জামানার ইতি, ভারতের ওডিআই দলের ক্যাপ্টেন হচ্ছেন এই তরুণ তুর্কি !!