T20 World Cup: ভারত এবং পাকিস্তান, উপমহাদেশীয় ক্রিকেটের দুই বৃহৎ শক্তিই জায়গা করে নিয়েছে ২০২২ টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালে। গ্রুপ স্টেজের ম্যাচে ভারত পাকিস্তান’কে ৪ উইকেটে হারিয়েছিলো। আরও একটা ভারত বনাম পাকিস্তান ম্যাচের অপেক্ষায় গোটা ক্রিকেটবিশ্ব। দুই দল নিজেদের সেমিফাইনাল দুটিতে জিতলেই মুখোমুখি হবে ফাইনালে। ২০০৭ সালেও দেখা গিয়েছিলো একই চিত্রনাট্য। ইতিহাসে পুনরাবৃত্তি কি দেখা যাবে? সেদিকেই তাকিয়ে সবাই। ভারতের হয়ে ম্যাচ উইনারের ভূমিকা নিচ্ছেন সূর্যকুমার যাদব। বিশ্বকাপ চলাকালীন উঠে এসেছেন আইসিসি র্যাঙ্কিং-এ পয়লা নম্বরে। আর যাঁকে সরিয়ে শীর্ষস্থান দখল করেছেন সূর্য, পাকিস্তানের সেই মহম্মদ রিজওয়ান, চলতি বিশ্বকাপে রয়েছেন এখনও আঁধারে। দুই দলের দুই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটারের মধ্যে এবার তুলনামূলক আলোচনা করলেন আফ্রিদি। সাধারণত ভারতবিরোধী কথা বলার জন্য বারবার সংবাদ শিরোনামে আসা আফ্রিদি সবাইকে চমকে দিয়ে প্রশংসায় ভরিয়েছেন সূর্যকুমার’কে। আর চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন রিজওয়ানের দুর্বলতা।
সূর্যের কিরণে আলোকিত টি-২০ বিশ্বকাপ-
ভারতীয় দলের ব্যাটিং অর্ডারে চার নম্বরে সূর্যকুমার যাদব(Suryakumar Yadav) ছাড়া আর কাউকে এই মুহূর্তে ভাবা যাচ্ছে না। যে ক্রিকেট এখন ৩২ বর্ষীয় ‘স্কাই; খেলছেন তা আগে কখনও দেখে নি ভারতের ক্রিকেটমহল। একমাত্র এবি ডিভিলিয়ার্স ছাড়া কাউকেই এইভাবে হয়ত ব্যাট করতে দেখে নি ক্রিকেটবিশ্ব। একমাত্র ব্যাটার হিসেবে ২০২২ ক্যালেন্ডার বর্ষে করেছেন ১০০০ এর বেশী টি-২০ রান। কুড়ি-বিশের ক্রিকেটের ব্যাকরণ নতুন করে যেন লিখছেন ভারতীয় তারকা। বিশ্বকাপেও অব্যাহত সূর্যের বিক্রম। পাকিস্তান ম্যাচে বিশেষ রান পান নি। তারপর থেকে থামানো যাচ্ছে না তাঁকে। নেদারল্যান্ডস ম্যাচে করেন ২৫ বলে ৫১ রান। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে আসে ১৬ বলে ৩০। দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধ্ব চাপের মুখে অনমনীয় থেকে ৪০ বলে ৬৮। আর জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে গ্রুপের শেষ ম্যাচে করেছেন ২৫ বলে ৬১*। উইকেটের চার পাশে তাঁর শট মারার ক্ষমতা হোক বা ২০০’র কাছাকাছি স্ট্রাইক রেট, সূর্যকুমার বাকিদের থেকে আলাদা, মানছেন সবাই। সূর্যের অগণিত ভক্তের তালিকায় এবার জুড়েছে শাহীদ আফ্রিদি’র নাম।
সূর্যকুমারের থেকে শিখুক রিজওয়ান, জানালেন আফ্রিদি-
সূর্যের আলোয় যখন ক্রিকেটবিশ্ব আলোকিত সেখানে অন্ধকারে ডুবে পাক ব্যাটিং-এর ভরসা রিজওয়ান(Mohammed Rizwan)। অনেক আশা ছিলো তাঁর কাছে। কিন্তু যত ম্যাচ পাকিস্তান খেলেছে অস্ট্রেলিয়ায়, দিনের আলোর মত পরিষ্কার হয়ে গেছে বাউন্স সামলাতে তাঁর সমস্যার কথা। অনেকে প্রশ্ন তুলেছেন তাঁর মন্থর ব্যাটিং নিয়ে। পাকিস্তানি টেলিভিশন চ্যানেল সামা টিভি’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আফ্রিদি ভারত ও পাক দলের দুই ব্যাটারের তুলনা করতে গিয়ে বলেন, “আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার আগে সূর্যকুমার ২০০-২৫০ প্রথম শ্রেণি’র ম্যাচ খেলে অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। সেই কারণেই ও জানে কি পরিস্থিতি’তে কিভাবে ব্যাট করতে হয়। যে শটগুলো ওকে মারতে দেখেন তার জন্য প্রচুর পরিশ্রম করে সূর্য। টি-২০ ফর্ম্যাটের জন্য নিজের শটগুলোকে ঢেলে সাজিয়েছে ও।” রিজওয়ানের রক্ষণাত্মক ক্রিকেটের সমালোচনা করে আফ্রিদি বলেন, “টি-২০ ক্রিকেট কিভাবে খেলা উচিৎ তা সূর্যকুমারের খেলা দেখে শেখা দরকার রিজওয়ানের।” আফ্রিদি’কে স্বভাবের বিপরীতে গিয়ে ভারতীয় খেলোয়াড়ের তারিফ করতে দেখে চমকেছেন অনেকেই।
Sur-Vir জুটি হিট, ফেভারিট ভারত-
সূর্যকুমার দুর্দান্ত ছন্দে রয়েছেন। টি-২০ বিশ্বকাপে ৫ ইনিংসে এখনও অব্দি করেছেন ২২৫ রান। এসেছে ৩ টি অর্ধশতক। তবুও বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহকারী কিন্তু তিনি নন। তাহলে কে? উত্তর’টা শুনে হাসি ফুটবে সকল ভারতীয় ক্রিকেটপ্রেমীর মুখে। প্রায় তিন বছরের রান খরা কাটিয়ে রানের বিস্ফোরণ বিরাট কোহলি’র(Virat Kohli) ব্যাটে। ৫ ইনিংসে তিনি করেছেন ২৪৬ রান। তাঁর’ও অর্ধশতকের সংখ্যা ৩। বাইশ গজে রানের লকগেট খুলে দিয়েছেন সূর্যকুমার আর বিরাটের জুটি। ভক্তেরা ভালোবেসে নাম দিয়েছেন ‘শুর-বীর।’ তাঁদের বীরত্বেই কাপস্বপ্ন দেখতে শুরু করেছেন ১৪০ কোটি ভারতীয়। এই দুজনের সাথে সাথে যে বোলিং’টা ভারতের পেসত্রয়ী অর্থাৎ অর্শদীপ-ভুবনেশ্বর আর শামি করছেন, তা বজায় রাখেন, তাহলে দেড় দশক পর কাপ আসতেই পারে ভারতের ঘরে।