গত জুনে টি-২০ বিশ্বকাপ (T20 World Cup) জয়ের পর কুড়ি-বিশের ফর্ম্যাট থেকে সরে দাঁড়ান রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। তাঁর অবসরের পর কে ভারতের অধিনায়ক হবেন তা নিয়ে ছিলো জল্পনা। ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেই দৌড়ে এগিয়ে রেখেছিলেন হার্দিক পান্ডিয়াকে (Hardik Pandya)। ২০২২ থেকে বেশ কয়েকটি সিরিজে রোহিতের অনুপস্থিতিতে টি-২০ দলকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন তারকা অলরাউন্ডার। এমনকি টি-২০ বিশ্বকাপেও (T20 World Cup) তিনিই ছিলেন দলের সহ-অধিনায়ক। স্বাভাবিক কারণেই তাঁকে রোহিতের উত্তরসূরি ভাবা হয়েছিলো। কিন্তু চমক দেয় বিসিসিআই। হার্দিকের বদলে টি-২০ (T20) দলের নতুন অধিনায়ক হিসেবে ঘোষণা করা হয় সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav) নাম। মুম্বই তারকার নেতৃত্বলাভ নিয়ে সেই সময় প্রচুর আলোচনা হয়েছিলো। কিন্তু বিসিসিআই যে সিদ্ধান্ত নিতে ভুল করে নি তার প্রমাণ পারফর্ম্যান্স দিয়েই দিচ্ছেন ‘ক্যাপ্টেন স্কাই।’
Read More: IND vs ENG 1st T20i: “এখানে বোলিং চ্যালেঞ্জিং…” ইডেনে ম্যাচের সেরা বরুণ চক্রবর্তী, আইপিএলকে কৃতিত্ব দিলেন ‘ঘরের ছেলে’ !!
অবিশ্বাস্য পরিসংখ্যান সূর্যকুমার যাদবের-

প্রথমবার অন্তর্বর্তীকালীন অধিনায়ক হিসেবে সূর্যকুমার (Suryakumar Yadav) ভারতীয় টি-২০ দলের দায়িত্ব সামলেছিলেন ২০২৩-এ অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে। হার্দিক আহত থাকায় তাঁর কাঁধে সেবার দায়িত্ব দিয়েছিলো বোর্ড। পাঁচ ম্যাচের সিরিজ টিম ইন্ডিয়া জেতে ৪-১ ফলে। এরপর ২০২৩-এই দল নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে গিয়েছিলেন তিনি। ১-১ ড্র হয় সিরিজ। অধিনায়ক হিসেবে তাঁর প্রত্যাবর্তন হয় ২০২৪-এর জুলাইতে। শ্রীলঙ্কার মুখোমুখি হয়েছিলো ভারতীয় দল। পাল্লেকেলের মাঠে প্রতিপক্ষকে দাঁড়াতেই দেয় সূর্যকুমারের (Suryakumar Yadav) ‘মেন ইন ব্লু।’ ০-৩ ফলে হোয়াইটওয়াশ হয় শ্রীলঙ্কা। সিরিজের তৃতীয় ম্যাচটিতে যেভাবে হারের দোরগোড়ায় পৌঁছে যাওয়া ভারতীয় দলকে জয়ের সরণিতে তুলে নিয়ে আসে সূর্যের মগজাস্ত্র, তাকে কুর্নিশ জানিয়েছিলেন ক্রিকেটজনতা।
এরপর ঘরের মাঠে বাংলাদেশকেও ৩-০ গুঁড়িয়ে দেয় দল। গত নভেম্বরে দক্ষিণ আফ্রিকা উড়ে গিয়েছিলো ভারত। প্রথম দলের একাধিক তারকাকে সেবার পাওয়া যায় নি বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির (BGT) কারণে। কিন্তু বাধা হয়ে দাঁড়ায় নি যশস্বী, বুমরাহদের অনুপস্থিতি। তরুণ তুর্কিদের সাথে নিয়েই বাজিমাত করেন সূর্যকুমার (Suryakumar Yadav)। ৩-১ ফলে উড়িয়ে দেন প্রোটিয়াদের। কুড়ি-বিশের ক্রিকেটে যে অশ্বমেধের ঘোড়া ছুটিয়েছেন তিনি, তা টগবগিয়ে ছুটছে ২০২৫-এ এসেও। গতকাল কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে ইংল্যান্ডের মুখোমুখি হয়েছিলো ভারত (IND vs ENG)। বাটলার, সল্ট, ব্রুকদের মত মহারথীদেরও খড়কুটোর মতই উড়িয়ে দিলেন সূর্য ও তাঁর সতীর্থেরা। ১২.৫ ওভারেই ১৩৩ রানের লক্ষ্যমাত্রা ছুঁয়ে ফেলে দল। ৪৩ বল বাকি থাকতেই ছিনিয়ে নেয় জয়।
বিরাট-ধোনি’দের থেকে এগিয়ে সূর্য-

এখনও অবধি ক্যাপ্টেন হিসেবে ১৮টি টি-২০ (T20) ম্যাচে দায়িত্ব সামলেছেন সূর্যকুমার যাদব। হেরেছেন মাত্র ৩টি ম্যাচ। জিতেছেন ১৫টিতে। কোনো দ্বিপাক্ষিক সিরিজ এখনও অবধি হাতছাড়া হয় নি তাঁর। দুই বার প্রতিপক্ষকে হোয়াইটওয়াশ করেছে তাঁর নেতৃত্বাধীন টিম ইন্ডিয়া। সাফল্যের বিচারে মহেন্দ্র সিং ধোনি, বিরাট কোহলি’র মত কিংবদন্তি অধিনায়কদেরও পিছনে ফেলে দিয়েছেন তিনি। ৭২টি ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। জিতেছিলেন ৪১টি ম্যাচ। হেরেছিলেন ২৮টিতে। ১টি টাই ও ২টি ম্যাচ থেকেছিলো অমীমাংসিত। জয়ের শতকরা হার ৫৬.৯৪। বিরাট কোহলির (Virat Kohli) ক্ষেত্রে এই শতকরা হার ৬০ শতাংশ। ৫০ ম্যাচের মধ্যে ৩০টি জিতেছেন তিনি। সূর্যকুমারের সেখানে জয়ের হার ৭৭.৭৭ শতাংশ। তাঁর থেকে খানিক এগিয়ে রয়েছেন রোহিত (৭৯.০৩)। তবে চলতি সিরিজেই পূর্বসূরিকে টপকে যেতে পারেন সূর্য।