গত দশকে আইসিসি প্রতিযোগিতায় লাগাতার ব্যর্থতার সম্মুখীন হয়েছিলো টিম ইন্ডিয়া (Team India)। ওয়ান ডে বিশ্বকাপ, চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি বা টি-২০ বিশ্বকাপের সেমিফাইনাল বা ফাইনালে পৌঁছেও ফিরতে হয়েছিলো খালি হাতে। ২০২১ ও ২০২৩-এর বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালেও স্বপ্ন ভেঙেছিলো নিউজিল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়ার কাছে হেরে। পরিস্থিতি বদলেছে ২০২৪-এ এসে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে টি-২০ বিশ্বকাপের রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে দক্ষিণ আফ্রিকাকে ধরাশায়ী করে খরা কাটিয়েছে ‘মেন ইন ব্লু।’ এরপর ২০২৫-এ সাফল্যের সেই ধারাবাহিকতা বজায় রেখেছে তারা। দুবাইতে দিনকয়েক আগেই জিতেছে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি। ফর্ম ধরে রাখাই চ্যালেঞ্জ ভারতের (Team India) জন্য। ক্রিকেটারদের পরবর্তী ফোকাস এখন টি-২০ বিশ্বকাপ। ২০২৬-এ নিজেদের খেতাব রক্ষা করার জন্য আলাদা পরিকল্পনা এখন থেকেই শুরু করে দিতে চাইছে বিসিসিআই।
Read More: “ও শ্রেষ্ঠ অধিনায়ক…” ধোনি বা সৌরভ নয়, এই তারকাকে সিংহাসনে বসালেন শেহবাগ !!
সূর্যকুমারের অধীনে খেলবে ভারত-

২০২৩-এর নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টি-২০ সিরিজে ভারত (Team India) অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক হয় সূর্যকুমার যাদবের (Suryakumar Yadav)। এরপর দক্ষিণ আফ্রিকা সফরেও দলের দায়িত্ব সামলান তিনি। ২০২৪-এর জুন মাসে টি-২০ বিশ্বকাপ জয়ের পর রোহিত শর্মা ক্রিকেটের ক্ষুদ্রতম ফর্ম্যাট থেকে অবসর নেওয়ায় তাঁর কাঁধেই পূর্ণ সময়ের দায়িত্ব তুলে দেন নির্বাচকেরা। কোচ গৌতম গম্ভীরের ভোটও পেয়েছিলেন মুম্বইয়ের ক্রিকেটার। এখনও অবধি টিম ইন্ডিয়ার ‘ক্যাপ্টেন’ হিসেবে দারুণ সফল সূর্যকুমার (Suryakumar Yadav)। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে জয় পেয়েছেন দেশের মাঠে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে গিয়ে একবার সিরিজ ড্র করেছেন এবং একবার জিতেছেন। শ্রীলঙ্কা সফরে প্রতিপক্ষকে মাথা তুলে দাঁড়াতে দেন নি। বাংলাদেশ’কে দেশের মাঠে হোয়াইটওয়াশ করার কৃতিত্ব’ও অর্জন করেছেন তিনি। ২০২৫-এর গোড়ায় ইংল্যান্ড’কে হারিয়েছেন ৪-১ ফলে।
এখনও অবধি ২২টি আন্তর্জাতিক টি-২০ ম্যাচে ভারতের (Team India) অধিনায়কত্ব করেছেন সূর্যকুমার যাদব। জিতেছেন ১৭টিতে। হারের সংখ্যা চার। অমীমাংসিত থেকেছে ১টি ম্যাচ। সাফল্যের শতকরা হার ৭৯.৫৪। নজর কেড়েছে তাঁর মগজাস্ত্রের ব্যবহার। যেভাবে পাল্লাকেলের মাঠে পার্ট টাইমার রিঙ্কু সিং-কে ব্যবহার করে শ্রীলঙ্কার মুখের গ্রাস কেড়ে নিয়েছিলেন গত বছর, তাকে কুর্নিশ করতে বাধ্য হয়েছিলো ক্রিকেটজনতা। হার্দিক পান্ডিয়াকে (Hardik Pandya) পিছনে ফেলে জাতীয় দলের নেতৃত্ব পেয়েছেন সূর্যকুমার। কিন্তু ইগো’কে কোনো ভাবেই পারফর্ম্যান্সের উপর ছায়া ফেলতে দেন নি। সিনিয়র ক্রিকেটারদের দলে যেভাবে গুরুত্ব দিয়েছেন, ঠিক সেভাবেই তুলে এনেছেন তিলক বর্মা, অভিষেক শর্মা, রিয়ান পরাগদের মত প্রতিভাকে। তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে সাফল্যের যে ফর্মূলা তৈরি করেছেন সূর্য, ২০২৬-এর বিশ্বকাপে তার উপরেই আস্থা রাখছে বোর্ড।
চিন্তা সূর্যকুমারের ফর্ম নিয়ে-

২০২১ সালে আন্তর্জাতিক আঙিনাতে পা রেখেছিলেন সূর্যকুমার যাদব। ব্যাট হাতে টি-২০’র ব্যকরণই যেন কয়েক বছরে পালটে দেন তিনি। উইকেটের চার পাশে নানাবিধ শট মারার অসামান্য দক্ষতার কারণে অনুরাগীদের কাছ থেকে আদায় করে নেন ‘মিস্টার ৩৬০ ডিগ্রী’ তকমা। প্রথম ভারতীয় হিসেবে এক ক্যালেন্ডার বর্ষে ১০০০ টি-২০ রান, সর্বোচ্চ সংখ্যক ছক্কা মারার নজির গড়েন তিনি। অতি দ্রুত ছিনিয়ে নেন বিশ্ব র্যাঙ্কিং-এর শীর্ষস্থানটিও। দুই বছর র্যাঙ্কিং-এর মগডালে জায়গা ধরে রেখেছিলেন সূর্য। কিন্তু ২০২৪-এর মাঝামাঝি সময় ভারত (Team India) অধিনায়কের বাড়তি দায়িত্ব পাওয়ার পর থেকেই যেন মরচে পড়েছে তাঁর ব্যাটিং-এ। দক্ষিণ আফ্রিকা বা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে সাম্প্রতিক সিরিজগুলোতে চেনা ছন্দে পাওয়া যায় নি তাঁকে। ঘরোয়া ক্রিকেটেও রানের মুখ দেখেন নি তিনি। অফ ফর্মের অন্ধকার কাটিয়ে আলোয় ফিরুন সূর্য, প্রার্থনা অনুরাগীদের।