বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার হার নিয়ে রণতুঙ্গার পরোক্ষ অভিযোগ মাহেলা-সাঙ্গাকারাদের বিরুদ্ধে , ক্ষুব্ধ গোতি-নেহরা 1

২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ। ভারতীয়দের অনেক আশা, ভালোবাসা, ইচ্ছে, চাওয়া-পাওয়া, আবেগ, অনুভূতি জড়িয়ে এর সঙ্গে। ১৯৮৩-র পর ২০০৩-য়ে বিশ সাল বাদ-এর স্বপ্নভঙ্গ। ২০০৭-এ মর্মবেদনা। এগারো বছর পর যখন উপমহাদেশে আবার ফিরে এল ওয়ান-ডে ওয়ার্ল্ড কাপ, তখন আপামর ভারতবাসী একসঙ্গে বলে উঠেছিল, না আর নয়। মাহির এই টিমটাই স্বপ্ন সফল করবে। ভারত আবার বিশ্বচ্য়াম্পিয়ন হবে বিশ্বক্রিকেটের মঞ্চে। ইতিহাসের পাতায় আবার লেখা হবে বীরগাথা। অধরা মাধুরীকে ছুঁয়েই ক্রিকেটের ইশ্বর বুকে একরাশ শান্তি নিয়েই হাসি মুখেই ব্য়াট আর গ্লভস জোড়া তুলে রাখবেন।

২০১১ সালের দোসরা এপ্রিল রাতের ওয়াংখেড়ের মাহেন্দ্রক্ষণ আজও গোটা ভারতবাসীকে একজাতির সুতোয় বাঁধে। গোতি, যুবীর বুক চিতিয়ে লড়াই আর ধোনি স্পেশাল সিক্সারের উইনিং স্ট্রোক আজ বর্তমান ভারতীয় ক্রিকেটের ট্রেডমার্ক।

যে বিশ্বকাপের সঙ্গে একশো কুড়ি কোটির দেশের আবেগ জড়িয়ে রয়েছে, সেই বিশ্বকাপ নিয়েই তদন্তের দাবি তুললেন ১৯৯৬-এর বিশ্বকাপজয়ী দলের অধিনায়ক শ্রীলঙ্কান লেজেন্ড অর্জুনা রণতুঙ্গা। তাঁর এই দাবিতে অবাক ক্রিকেটপ্রেমীরা। অবাক কয়েকজন ভারতীয় ক্রিকেটারও। বলছেন, হঠাৎ করে এসব কি বলছেন অর্জুনা?

১৯৯৬-এর বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে যে দলের কাছে হেরে বিদায় নিতে হয়েছিন মহম্মদ অজহরউদ্দিনের ভারতকে, সেই দলকে ২০১১ বিশ্বকাপে হারিয়ে মধুর বদলা নেয় ভারত। ছয় উইকেটে মাহেলে জয়বর্ধনের দলকে হারিয়ে কপিলের দলের জয়কে ছাপিয়ে যায় মাহির ভারত। টানটান উত্তেজনায় ভরে ওঠা সেই ম্য়াচ নিয়েই প্রশ্ন তুলছেন রণতুঙ্গা। ফেসবুকে একটি ভিডিও পোস্ট করে তিনি বলেছেন, ২০১১ সালের বিশ্বকাপের সময় আমি ভারতেই ছিলাম। ফাইনাল ম্য়াচেও ধারাভাষ্য় দিই। যখন আমরা হেরে যাই(পড়ুন শ্রীলঙ্কা হেরে যায়), তখন আমি ভেঙে পড়ি। আমরা তখনই সন্দেহ হয়েছিল। শ্রীলঙ্কার হার নিয়ে তদন্ত করা হোক। আমি এখনই সব কিছু বলতে পারব না। কিন্তু, একদিন ঠিক বলবই। এনিয়ে তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।

রণতুঙ্গার এই অভিযোগ শুনে ভারতের ২০১১ বিশ্বকাপ জয়ের অন্য়তম কারীগর ওপেনার গৌতম গম্ভীর বেজায় চটেছেন। গোতি বলেন, অর্জুনা রণতুঙ্গার এই অভিযোগ শুনে আমি অত্য়ন্ত অবাক। ওনার মতো একজন সম্মানীয় ব্য়ক্তির কাছ থেকে এরকম অভিযোগ। আমি পরিষ্কার কথা বলছি, ওনার যদি কিছু বলার থাকে, পোক্ত প্রমান নিয়ে এসে বলুন।

রণতুঙ্গার মতো একজন লেজেন্ডের কাছে এমন কথা শুনে ২০১১ বিশ্বকাপের অন্য়তম আরেক কাণ্ডারী পেস বোলার আশিস নেহরাও তাঁর ক্ষোভ জানিয়েছেন, রণতুঙ্গার অভিযোগ খণ্ডন করতে আমি পাল্টা কোনও মতামত রাখতে চাই না। কারণ, এধরণের কথার কোনও শেষ নেই। আমি যদি এখন ১৯৯৬-তে শ্রীলঙ্কার জয় নিয়ে একইরকম মন্তব্য় করি, তাহলে কি সেটা ভালো শোনাবে। তবে, হ্য়াঁ, ওঁর মতো একজনের মুখ থেকে এরকম মন্তব্য় শুনে প্রচণ্ড হতাশ হয়েছি।

ক্রিকেট বিশেষজ্ঞ মহল বলছে, রণতুঙ্গা এই ধরনের আলটপকা মন্তব্য় করে কি প্রমান করতে চাইছেন? তাও এতদিন পর। এই ধরনের অভিযোগ এনে ভারতীয় ক্রিকেটারদের নয়, আখেরে শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের দিকেই আঙুল তুলছেন তিনি। সেদিন ফাইনালে মাহেলা জয়বর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারার মতো ব্য়াটিং লেজেন্ডরাও ছিলেন। রণতুঙ্গার এই বক্তব্য়কে, তাই অনেকে জয়বর্ধনে-সাঙ্গাকারাদের বিরুদ্ধে পরোক্ষে আঙুল তোলা হিসেবে দেখছেন।

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *