ওভাল টেস্টের শেষ দিনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিলো ৩৫ রান। আর ভারতের জয়ের জন্য দরকার ছিলো ৪ উইকেট। বিশেষজ্ঞমহল এগিয়ে রেখেছিলো অলি পোপের দলকেই। কিন্তু সোমবার যাবতীয় হিসেবনিকেশ উলটে দিলেন মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। প্রথমেই জেইমি স্মিথকে আউট করেন তিনি। সিরাজের আউটস্যুইং তাঁর ব্যাট ছুঁয়ে জমা পড়ে ধ্রুব জুরেলের দস্তানায়। এরপর ফেরান জেইমি ওভারটনকে। ইনস্যুইং-এ তাঁকে পরাস্ত করেন হায়দ্রাবাদের পেসার। জশ টাং-কে ফিরিয়ে ম্যাচ জমিয়ে দিয়েছিলেন প্রসিদ্ধ কৃষ্ণা (Prasidh Krishna)। তবে ‘ফিনিশিং টাচ’ দেন সিরাজই (Mohammed Siraj)। তাঁর দুরন্ত ইয়র্কার গাস অ্যাটকিনসনকে পরাস্ত করে অফস্টাম্প ছিটকে দিতেই বাজিমাত টিম ইন্ডিয়ার। মাত্র ৬ রানের ব্যবধানে ম্যাচ জেতেন শুভমান গিল’রা। ২-২ ফলে শেষ হয় অ্যান্ডারসন-তেন্ডুলকর ট্রফি।
Read More: IND vs ENG: “আমরা হাল ছাড়ি না…” নাটকীয় জয়ের পর হুঙ্কার শুভমানের, দলের পারফর্ম্যান্সে তৃপ্ত অধিনায়ক !!
ওভালে রূপকথা লিখলেন মহম্মদ সিরাজ-

ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি টেস্ট খেলেছেন জসপ্রীত বুমরাহ (Jasprit Bumrah)। তিনটি করে ম্যাচ খেলেছেন আর্শদীপ সিং, আকাশ দীপরাও। কিন্তু ব্যতিক্রম মহম্মদ সিরাজ (Mohammed Siraj)। লিডস, এজবাস্টন, লর্ডস, ম্যাঞ্চেস্টার হোক বা ওভাল-সব ম্যাচেই বোলিং রান-আপে দেখা গিয়েছে তাঁকে। পরিসংখ্যান বলছে ১৮৫.৩ ওভার বোলিং করেছেন তিনি। অর্থাৎ বৈধ ডেলিভারির সংখ্যা ১১১৩। তার পরেও ক্লান্তি নেই তাঁর। ওয়ার্কলোডের আলোচনাকে তুড়ি মেরে আজ তফাৎ গড়ে দিলেন তিনি। খেলা শেষে আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েছিলেন সিরাজ। দীনেশ কার্তিককে দেওয়া সাক্ষাৎকারে বলেন, “আমি শুধু সঠিক জায়গায় বোলিং করতে চেয়েছিলাম। গতকাল (হ্যারি) ব্রুকের ক্যাচ ধরার পর যে বাউন্ডারি রোপে পা দিয়ে ফেলব তা ভাবি নি। ওই মুহূর্ত’টা ম্যাচ বদলে দিয়েছিলো। হ্যাঁ নিজের উপর বিশ্বাস ছিলো যে আমি দল’কে সাফল্য এনে দিতে পারব।”
“ওভালে এই ইনিংসে পাঁচ উইকেট নেবেন মহম্মদ সিরাজ,” টেস্ট শুরু হওয়ার আগে ট্যুইট করেছিলেন ডেল স্টেইন (Dale Steyn)। প্রথম ইনিংসে চার উইকেট নিয়ে থেমেছিলেন ভারতীয় পেস তারকা। দ্বিতীয় ইনিংসে প্রোটিয়া কিংবদন্তির ভবিষ্যদ্বাণী মিলিয়ে দিলেন তিনি। ১০৪ রান খরচ করলেন তুলে নিলেন ৫ উইকেট। সঙ্গত কারণেই ম্যাচের সেরার পুরস্কার পেয়েছেন সিরাজ (Mohammed Siraj)। সাক্ষাৎকারে বলেন, “সত্যি বলতে দারুণ লাগছে। প্রথম দিন থেকে সবাই লড়াই করেছে আর ফলাফল আপনারা দেখতেই পাচ্ছেন। খুব ভালো লাগছে। সবকিছু সহজ রাখার পরিকল্পনা ছিলো। চেয়েছিলাম একটা নির্দিষ্ট জায়গায় বল রেখে যেতে। বেশী কিছু না করেই সেখান থেকে উইকেট পাওয়া যায় কিনা সেটাই দেখছিলাম। চাপ বজায় রাখার ব্যাপারটা বাড়তি পাওনা।”
আত্মবিশ্বাস’ই সাফল্যের চাবিকাঠি-

‘ওয়ার্কলোডে’ বিশ্বাস না করলেও ‘ম্যানিফেস্টেশন’-এ করেন সিরাজ (Mohammed Sirja)। বলেছেন, “আজ ঘুম থেকে ওঠার পর আমার মনে হয়েছিলো যে আমি পারব। আমি গুগ্ল থেকে একটি ছবি নিই যেখানে লেখা ছিলো ‘আমি এটা পারব’ আর সেটাই আমার (ফোনের) ওয়ালপেপার হিসেবে লাগিয়েছিলাম।” ব্রুকের ক্যাচ ফস্কানোর আক্ষেপ রয়েছে তাঁর। “গতকাল ব্রুকের ক্যাচটা সঠিক ভাবে ধরলে হয়ত আজ এই পরিস্থিতিতে আসতেই হত না। ওটা খেলার গতিপথ বদলে দিয়েছিলো। কিন্তু (হ্যারি) ব্রুকও দারুণ খেলেছে। ওর আক্রমণাত্মক ক্রিকেটকে আমার কুর্নিশ।” শেষবেলায় ফিরে এসেছে লর্ডসে আউট হওয়ার প্রসঙ্গ। বলেন, “ঐ মুহূর্তটা হৃদয়বিদারক ছিলো। ও (জাদেজা) আমায় সোজা ব্যাটে আর ব্যাটের মাঝখান দিয়ে খেলার কথা বলছিলো। বলছিলো আমার বাবার কথা, আমাকে এই পর্যায়ে পৌঁছে দিতে তাঁর পরিশ্রিমের কথা স্মরণ করতে।”
দেখুন জয়ের মুহূর্ত-
Mohammed Siraj does it for India 🇮🇳
Shubman Gill & his team level the series by 2 – 2 when literally no hopes were left.#ShubmanGill #MohammedSiraj #ENGvIND pic.twitter.com/cwRIdrikkv
— Prateek (@prateek_295) August 4, 2025
Also Read: IND vs ENG 5th Test: ওভালের বাইশ গজে ‘বাজিগর’ সিরাজ, ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ঐতিহাসিক জয় ভারতের !!