গত দেড়-দুই বছর ধরে চোট সমস্যায় জর্জরিত মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। ২০২৩-এর বিশ্বকাপের পর গোড়ালিতে অস্ত্রোপচার করাতে হয়েছিলো তাঁকে। এরপর দীর্ঘসময় চলে রিহ্যাব। ২০২৪-এর নভেম্বরে রঞ্জি ট্রফিতে কামব্যাক করেন তিনি। খেলেন সৈয়দ মুস্তাক আলি ট্রফিও। কিন্তু ফের হাঁটু ফুলে ওঠায় কয়েকদিন মাঠের বাইরে থাকতে হয় তাঁকে। অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে টেস্ট সিরিজে তাই সুযোগ পান নি শামি (Mohammed Shami)। আন্তর্জাতিক আঙিনায় শামি ফেরেন ২০২৫-এর গোড়ায় ইংল্যান্ডের বিপক্ষে। টি-২০ ও ওয়ান ডে সিরিজে দেখা গিয়েছিলো তাঁকে। খেলেন চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিও। কিন্তু আইপিএলের মাঝপথে ফের চোট সমস্যা ভুগিয়েছিলো তাঁকে। ফের একপ্রস্থ রিহ্যাব সেরে সম্প্রতি দলীপ ট্রফিতে (Duleep Trophy) বোলিং রান-আপে ফিরেছিলেন তারকা পেসার। কিন্তু নর্থ জোনের বিরুদ্ধে তাঁর হতশ্রী পারফর্ম্যান্স প্রশ্ন তুলে দিলো শামি’র কেরিয়ারের মেয়াদ নিয়ে।
Read More: রাজস্থানে অতীত রাহুল দ্রাবিড় জমানা, নতুন চ্যালেঞ্জ খুঁজে নিলেন বিশ্বকাপজয়ী কোচ !!
নর্থ জোনের বিরুদ্ধে নড়বড়ে শামি-

নয় মাস পরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফিরে চূড়ান্ত হতাশ করলেন মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। দলীপ ট্রফির (Duleep Trophy) কোয়ার্টার ফাইনালে বেশ নড়বড়ে দেখালো তাঁকে। প্রথম ইনিংসে মাত্র ২৩ ওভারে ১০০ রান খরচ করে বসেন তিনি। ইকোনমি রেট ছিলো ৪.৩৫। একটির বেশী উইকেট পান নি বাংলার পেসার। দ্বিতীয় ইনিংসেও দাগ কাটতে ব্যর্থ তিনি। ১১ ওভারের বেশী হাত ঘোরাতে পারেন নি। খরচ করেন ৩৬ রান। জোটে নি কোনো সাফল্যই। শামি’র মতই ব্যর্থ তাঁর দল ইস্ট জোন’ও। প্রথম ইনিংসে ৪০৫ তুলেছিলো নর্থ জোন। পূর্বাঞ্চল গুটিয়ে যায় ২৩০-এ। দ্বিতীয় ইনিংসে ঝড় তোলে উত্তরাঞ্চল। অঙ্কিত কুমার, যশ ধূলের শতরান ও আয়ুষ বাদোনির (Ayush Badoni) দ্বিশতক তাদের পৌঁছে দেয় ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৬৫৮ রানে। আর খেলা এগোয় নি। প্রথম ইনিংসে লিডের সুবাদে সেমিফাইনালে যায় তারা।
শামি (Mohammed Shami) যে এই মুহূর্তে টিম ইন্ডিয়ার রেডারে নেই তা স্পষ্ট হয়েছে নির্বাচকদের সাম্প্রতিক পদক্ষেপগুলিতে। ইংল্যান্ড সফরের স্কোয়াডে রাখা হয় নি তাঁকে। সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিলো তাঁর ফিটনেস নিয়ে। এশিয়া কাপেও জায়গা হয় নি বাংলার পেসারের। শামি’র পরিবর্তে আপাতত হর্ষিত রাণা, প্রসিদ্ধ কৃষ্ণাদের অগ্রাধিকার দিচ্ছে বিসিসিআই। দলীপ ট্রফিতে ভালো পারফর্ম্যান্স অক্সিজেন যোগাতে পারত তাঁকে। আসন্ন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সিরিজ বা অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য আলোচনায় জায়গা করে নিতে পারতেন তিনি। কিন্তু যেভাবে বেঙ্গালুরুর সেন্টার অফ এক্সেলেন্সের মাঠে প্রতিপক্ষকে কার্যত রান বিলিয়েছেন শামি (Mohammed Shami), তাতে সেই সম্ভাবনার দীপ কার্যত নিভে গিয়েছে বলেই ধারণা বিশেষজ্ঞদের। ৩৩ পেরিয়েছেন শামি। আর কখনও ভারতের জার্সিতে তাঁকে দেখা যাবে কিনা তা নিয়ে যথেষ্ট সন্দিহান ক্রিকেটমহল।
বিশ্বকাপই একমাত্র স্বপ্ন শামি’র-

এখনই থামতে চান না মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। অবসর জল্পনা ফুৎকারে উড়িয়ে বাংলার পেসার সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন, “কারও যদি কোনো সমস্যা থাকে আমায় এসে বলুক যে আমি অবসর নিলে তাঁদের জীবন কি একটু সহজ হবে। কার পথের কাঁটা হয়ে উঠেছি আমি যে আপনারা চাইছেন আমি সরে দাঁড়াই? যেদিন উৎসাহ পাব না সেদিন নিজেই সরে দাঁড়াব। আমায় সুযোগ না দিলেও আমি কঠিন পরিশ্রম করে যাব। আন্তর্জাতিক আঙিনায় ডাক না পেলে ঘরোয়া ক্রিকেট খেলব। কোথাও না কোথাও ঠিকই খেলে যাব “যখন একঘেঁয়েমি এসে যায় তখন এই সিদ্ধান্তগুলো (অবসর) নিতে হয়। আমার সেই সময় এখনও আসে নি।” ২০২৩-এ হাতছাড়া হয়েছে বিশ্বকাপ। তীরে এসে ডুবেছে তরী। সেই অধরা স্বপ্ন পূরণ করাই আপাতত লক্ষ্য তাঁর। ফোকাসে ২০২৭-এর টুর্নামেন্ট।