ওঠানামায় ভরা সঞ্জু স্যামসনের (Sanju Samson) আন্তর্জাতিক কেরিয়ার। ২০১৫ সালে প্রথমবার দেশের হয়ে টি-২০ খেলতে নেমেছিলেন কেরলের তারকা। এরপর প্রায় এক দশক কেটে গেলেও একটানা সুযোগ কখনই পান নি তিনি। ধোনি বা পন্থের ছায়ার সাথে নাগাড়ে যুদ্ধ করতে হয়েছে তাঁকে। সমস্যা মেটার ইঙ্গিত মিলেছিলো ২০২৪-এর টি-২০ বিশ্বকাপের পর। বেশ কয়েকটি সিরিজে সঞ্জুকেই উইকেটরক্ষক-ব্যাটার হিসেবে খেলানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিলো টিম ম্যানেজমেন্ট। জিম্বাবুয়ের বিরুদ্ধে একটি ভালো ইনিংস খেলেন তিনি। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিরুদ্ধে দিনকয়েকের ব্যবধানে তিনটি টি-২০ শতক করে হইচই’ও ফেলে দিয়েছিলেন তিনি। মনে করা হচ্ছিলো যে ২০২৬-এর টি-২০ বিশ্বকাপের (T20 World Cup) জন্য নিজের জায়গা নিশ্চিত করে ফেলেছেন স্যামসন (Sanju Samson) । কিন্তু বিধি বাম। ২০২৫-এর গোড়াতেই ছন্দ হারিয়ে ফের প্রশ্নের সম্মুখীন তিনি। ব্যাটিং-এর পাশাপাশি আতসকাঁচের নীচে তাঁর উইকেটকিপিং-ও।
Read More: IND vs ENG 4th T20i: জোচ্চুরি করে জিতেছে ভারত, ম্যাচ শেষে গম্ভীর-সূর্যকুমারদের দিকে আঙুল তুললেন জস বাটলার !!
পুনের মাঠে হতশ্রী ক্রিকেট সঞ্জু’র-
ইংল্যান্ড সিরিজের (IND vs ENG) প্রথম চারটি ম্যাচে চূড়ান্ত ব্যর্থ সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson) । ইডেনে করেন ২৬। চেপক ও রাজকোটে পরবর্তী দুটি খেলায় তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে যথাক্রমে ৫ ও ৩। গতকাল পুনেতে সিরিজের চতুর্থ ম্যাচেও হতাশ করলেন তিনি। সাজঘরে ফেরেন ১ রান করেই। শর্ট বলের বিরুদ্ধে সঞ্জুর (Sanju Samson) দুর্বলতাকে কাজে লাগান সাকিব মাহমুদ (Saqib Mahmood)। শরীর লক্ষ্য করে ধেয়ে আসা ডেলিভারিতে পুল মারতে গিয়ে স্কোয়্যার লেগে দাঁড়ানো ব্রাইডন কার্সের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তিনি। মাত্র ১২ রানের মাথায় প্রথম উইকেট হারাতে হয় টিম ইন্ডিয়াকে। চার ম্যাচে ৮.৭৫ গড়ে সঞ্জুর সংগ্রহ মাত্র ৩৫ রান। তাঁর অফ ফর্মের কারণে এমনিতেই ধৈর্য্য হারিয়েছেন ক্রিকেটজনতা, উঠছে ঈশান কিষণ বা ঋষভ পন্থকে ফেরানোর দাবী। এই আবহে উইকেটকিপিং ব্যর্থতাও বিরুদ্ধে যাচ্ছে স্যামসনের।
পুনেতে রুদ্ধশ্বাস ম্যাচে একবার নয় বরং দুই বার টিম ইন্ডিয়াকে চাপে ফেলে দিয়েছিলো দস্তানা হাতে সঞ্জু’র (Sanju Samson) দুর্বলতা। ১৬তম ওভারের প্রথম ডেলিভারিটিকে জেকব বেথে মিড উইকেটের দিকে ঠেলে দিয়ে রানের উদ্দেশ্যে দৌড়েছিলেন। প্রথম রানটি সম্পূর্ণ করে যখন দ্বিতীয় রানের জন্য স্ট্রাইকার প্রান্তের দিকে ছুটছিলেন তিনি, তখন রান-আউটের সুযোগ চলে এসেছিলো ভারতের সামনে। কিন্তু রিঙ্কু সিং-এর নিখুঁত থ্রো দস্তানাবন্দী করতে পারেন নি সঞ্জু (Sanju Samson) । প্রায় একই দৃশ্য দেখা গিয়েছিলো ১৯তম ওভারের তৃতীয় বলে। জেমি ওভারটনের ‘মিসহিট’ তালুবন্দী করার উদ্দেশ্যে ছুটে এসেছিলেন বরুণ চক্রবর্তী। কিন্তু তাঁকে নিরস্ত করে ক্যাচ ধরতে যান সঞ্জু। কিন্তু পারেন নি তিনি। বরং ইংল্যান্ডের স্কোরবোর্ডে যুক্ত হয় আরও দুটি রান। সেই ওভারেই হর্ষিত রাণা ওভারটনকে আউট করতে না পারলে চাপ বাড়ত ভারতের উপর।
ক্যাচ মিস সঞ্জু’র, দেখুন ছবি-
Justice for the ball 🙏
It couldn’t fit into the hands of Sanju Samson pic.twitter.com/w3KItrQY6J— Dinda Academy (@academy_dinda) January 31, 2025
চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে নেই সঞ্জু স্যামসন-
টি-২০ তে সুযোগ পেলেও পঞ্চাশ ওভারের ফর্ম্যাটে এখনও ভারতীয় নির্বাচকদের রেডারে নেই সঞ্জু স্যামসন (Sanju Samson) । ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওডিআই সিরিজ ও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির জন্য ১৫ সদস্যের জন্য যে স্কোয়াড ঘোষণা করা হয়েছে সেখানে ডাক পান নি কেরলের উইকেটরক্ষক-ব্যাটার। বরং সুযোগ দেওয়া হয়েছে কে এল রাহুল ও ঋষভ পন্থকে। দিল্লীর ঋষভের তুলনায় পঞ্চাশ ওভারের ক্রিকেটে পরিসংখ্যানের দিক থেকে অপেক্ষাকৃত এগিয়ে থাকলেও কেন বাদ সঞ্জু (Sanju Samson) ? এই নিয়ে প্রশ্নের মুখে পড়তে হয়েছিলো বোর্ডকে। নির্বাচকদের পরিকল্পনার সামান্য আভাস দেওয়ার চেষ্টা করেছেন প্রাক্তনী সুনীল গাওস্কর। পন্থের উইকেটকিপিং দক্ষতাই তাঁকে একদিনের ফর্ম্যাটে আপাতত সঞ্জুর থেকে এগিয়ে রেখেছে বলে মনে করেন তিনি। এছাড়াও বলেন, “ম্যাচের গতিপথ পাল্টানোয় সঞ্জুর চেয়ে পন্থ একটু বেশী দক্ষ। সেই কারণেই স্যামসনকে বাদ পড়তে হয়েছে।”