আসন্ন এশিয়া কাপে খেলার জন্য ভারতীয় ক্রিকেট দল তাদের প্রস্তুতি নিতে শুরু করে দিয়েছে। তবে, এবারের এশিয়া কাপে ভারতকে কোনো রকম টাইটেল স্পন্সর ছাড়াই মাঠে নামতে দেখা যাবে। ভারত সরকার সম্প্রতি অনলাইন বেটিং অ্যাপের উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে তাই ড্রিম ইলেভেনকে ছাড়াই এবার মাঠে নামতে হবে টিম ইন্ডিয়াকে। তবে একসময় ভারতীয় ক্রিকেট দলের সঙ্গে লম্বা সময় করে টাইটেল স্পন্সর হিসাবে কাজ করে এসেছে সাহারা। ‘সাহারা ইন্ডিয়ার’ নাম একসময় গর্বের সঙ্গেই উচ্চারিত হত। সাহারা গ্রুপের মালিক সুব্রত রায় ‘সহারা শ্রী’ নামে পরিচিত ছিলেন। সৌরভ গাঙ্গুলির ক্যাপ্টেন্সির সময়কাল থেকে এমএস ধোনির ক্যাপ্টেনসির কাল পর্যন্ত ভারতীয় ক্রিকেট দলের প্রধান স্পনসর হিসেবে কাজ করেছে এই ‘সাহারা’। কিন্তু সেই জৌলুসের আড়ালেই লুকিয়ে ছিল বিশাল এক আর্থিক প্রতারণা, যার ফলে আজও কোটি কোটি নিরীহ মানুষ তাদের টাকা ফেরত পাননি।
বিসিসিআইয়ের সঙ্গে দীর্ঘদিন কাজ চালিয়েছে সাহারা

স্কীমের নাম করে, সাহারা গ্রুপ মূলত ছোট ছোট বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে টাকা সংগ্রহ করতো। দেশের ক্রিকেট বোর্ডের সাথে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিল এই সাহারা কোম্পানি, যে কারণে চোখ বুজে সবাই এই কোম্পানিকে সমর্থন করেছিল। বিসিসিআই-এর মতো শক্তিশালী সংস্থার পাশে দাঁড়িয়ে সাধারণ মানুষের আস্থা অর্জন করেছিল সাহারা কোম্পানি। ভারতীয় ক্রিকেটের সোনালী সময়ে সাহারা ছিল টাইটেল স্পন্সর। এই সাফল্যই সুব্রত রায়কে ‘মেসায়াহ’ রূপে তুলে ধরেছিল।
Read More: এশিয়া কাপের আগেই গুরুতর আহত তারকা ক্রিকেটার, ভারতীয় শিবিরে চিন্তার ভাঁজ !!
তবে, সাহারা কোম্পানির নামে প্রতারণার খবর উঠে আসে। তদন্তে প্রকাশ পায়, সাহারা গ্রুপ প্রায় ১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি জালিয়াতি করেছে। পাশাপশি, মানতকারীদের টাকার হিসেব মিলছে না। এমনকি, তারা আদালত ও তদন্তকারী সংস্থার চোখ এড়িয়ে চলতে শুরু করে। অবশেষে, ইডি সুব্রত রায়ের স্ত্রী ও ছেলে-সহ একাধিক কর্মকর্তার বিরুদ্ধে চার্জশিট দায়ের করেছে এবং তাদের ‘ভাগোড়া’ ঘোষণা করেছে।
BCCI-কে নিয়ে তৈরি হলো বিতর্ক

এটি মূলত ভারতের অন্যতম বৃহৎ আর্থিক প্রতারণা মামলার সাথে জড়িয়ে রয়েছে। সাহারার নামে ১.৭৪ লক্ষ কোটি টাকার জালিয়াতির নাম রয়েছে।তদন্তকারীদের দাবি, সাধারণ মানুষের থেকে হাজার হাজার কোটি কোটি টাকা নিয়ে সেগুলো অবৈধভাবে হাজার হাজার কোটি টাকা সাহারা ব্র্যান্ডিং, স্পনসরশিপ এবং প্রচারে ব্যবহার করেছে। যদিও, সেই টাকা কর্পোরেট বিনিয়োগ ছিল না বরং সেটি ছিল তাদের ব্ল্যাক মানি সাদা করার কৌশল। তবে, সাহারা কান্ডের পর থেকেই বিসিসিআইয়ের উপর প্রশ্ন উঠতে শুরু হয়েছে।ভক্তের দাবি সাহারার আর্থিক অনিয়ম সম্পর্কে বিসিসিআই কি কিছু জানত না? নাকি সচেতনভাবেই সেই অর্থকে গ্রহণ করা হয়েছিল ? অতএব, সাহারা কেলেঙ্কারির পর এটা স্পষ্ট যে, এটা কেবল এক কর্পোরেট প্রতারণা নয়, বরং ভারতের ক্রিকেট ইতিহাসেরও এক অন্ধকার অধ্যায়, যা ভবিষ্যতে আরও বড় বিস্ফোরণ ঘটাতে পারে।