আঠারো বছরের অপেক্ষা শেষে এবার আইপিএল (IPL) ট্রফি জিতেছে রয়্যাল চ্যালেঞ্জার্স বেঙ্গালুরু (RCB)। ফাইনালে তারা হারিয়েছে পাঞ্জাব কিংস-কে। তবে এই মুহূর্তে চর্চায় সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের বিরুদ্ধে তাদের ম্যাচটি। ২৩ মে ভারতরত্ন শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী একানা স্টেডিয়ামে ‘অরেঞ্জ আর্মি’র বিপক্ষে হেরেছিলো বেঙ্গালুরু (RCB)। কোহলি, রজত পাটিদারদের সেই দিনের ব্যর্থতাই রুখে দিলো বিরাট বড় ডাকাতি, এমন তথ্যই উদ্ঘাটিত হয়েছে কর্ণাটক পুলিশের তদন্তে। পয়েন্ট তালিকার নীচের দিকে থাকা সানরাইজার্সের বিপক্ষে সহজেই জিতবে আরসিবি (RCB), ধরে নিয়েছিলো ডাকাতরা। সেদিনই কানাড়া ব্যাঙ্কের মানাগুলি টাউন শাখায় ডাকাতির পরিকল্পনা ছিলো তাদের। সমর্থকদের উদ্যাপন’কে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে পালাতে চেয়েছিলো তারা। কিন্তু কোহলিদের হারে পরিকল্পনা বদলাতেই হয় তাদের।
Read More: IND vs ENG: বাদ শার্দুল ঠাকুর, দ্বিতীয় টেস্টে এই তারকা বোলারকে প্রধান অস্ত্র করে মাঠে নামবেন গম্ভীর !!
ধরা পড়েছে ডাকাতেরা-

ঠিক ছিলো ২৩ তারিখের ম্যাচের পর ২৪ তারিখ ভোররাতে ডাকাতেরা হানা দেবে কানাড়া ব্যাঙ্কের মানাউলি টাউন শাখায়। কিন্তু বেঙ্গালুরুর (RCB) হারে পরিকল্পনা বদলাতে হয় তাদের। ২৪ নয় বরং ২৫ তারিখ ভোররাতে কানাড়া ব্যাঙ্কের শাখায় হানা দেয় তারা। ডাকাতদের ‘মাস্টারমাইন্ড’ ছিলেন ঐ শাখারই প্রাক্তন ম্যানেজার বিজয়কুমার মিরিয়ালা (Vijaykumar Miriyala)। আগেই লকারের চাবি নকল করে রেখেছিলেন তিনি। ডাকাতেরা ব্যাঙ্কে ঢুকে প্রথমেই নিষ্ক্রিয় করে সিসিটিভি ক্যামেরাগুলি। তারপর বিভিন্ন জায়গায় সিঁদুর, হলুদ এবং ব্লো চর্চ ছড়িয়ে দেয় । কালো জাদু করে টাকা সরিয়েছে কেউ, পুলিশের মনে এহেন সন্দেহ গাঢ় করার উদ্দেশ্য ছিলো তাদের। অতীতে কেরল বা তামিলনাড়ুতে এভাবে ব্যাঙ্ক ডাকাতি হয়েছিলো। সেই পন্থাই অনুসরণ করেছিলেন বিজয়কুমার ও তাঁর সঙ্গীরা।
পুলিশ কুকুরকে বিভ্রান্ত করতে জায়গায় জায়গায় নুন’ও ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এরপর লকার থেকে মোট ৫৮.৯৭ কেজি সোনা চুরি করে ডাকাতদল। যার অর্থমূল্য প্রায় ৫৩ কোটি ২৬ লক্ষ টাকা। এছাড়া ৫.২০ লক্ষ টাকা নগদ’ও সরিয়ে ফেলে তারা। তবে এত কিছু করেও শেষরক্ষা হয় নি। ভোররাতে বাগালকোট জেলার গাড্ডানাকারি ক্রসিং-এ হুবলি অঞ্চলের রেজিস্ট্রেশন যুক্ত একটি গাড়ি বিজয়পুরা থেকে হুবলির রাস্তায় যাচ্ছে দেখে সন্দেহ হয় পুলিশের। সেই গাড়ির নম্বরের সূত্র ধরেই সরাসরি বিজয়কুমার মিরিয়ালার সন্ধান পান তারা। গ্রেপ্তার করা হয় সুনীল মোকা (Sunil Moka) ও চন্দ্রশেখর নেরেলা নামে আরও দুই ব্যক্তিকে। তদন্তে নেমে এখনও পর্যন্ত ১০.৭৫ কেজি সোনা উদ্ধার করতে পেরেছে কর্ণাটক পুলিশ। যার অর্থমূল্য ১০.৭৫ কোটি টাকা। চুরির পর সোনা গলিয়ে ফেলেছিলো ডাকাত’রা, খবর পুলিশ সূত্রে।
চমকপ্রদ তথ্য মিলেছে পুলিশী জেরায়-

প্রাক্তন ব্যাঙ্ককর্মী বিজয়কুমার ও তাঁর সঙ্গীরা বেশ কয়েক মাস ধরে এই ডাকাতির ছক সাজিয়েছিলো বলে জানা গিয়েছে। বিভিন্ন ইংরেজি ও হিন্দি চলচ্চিত্র থেকে অনুপ্রেরণা নিয়েছিলো তারা। চেয়েছিলো তদন্তকারীদের জন্য কোনো সূত্র ছেড়ে না যেতে। দু’টি গাড়ি ডাকাতির জন্য ব্যবহার করা হয়েছিলো। এমনকি পুলিশ বা সিসিটিভি’র নজর এড়াতে ট্রাকের মধ্যে করে ডাকাতিতে ব্যবহৃত মোটরবাইক আনা হয়েছিলো বলেও জেরায় জানিয়েছে ধৃত তিন জন। বাকি অর্থ ও সোনা উদ্ধারে এখনও অভিযান চলছে। সন্ধান চলছে অন্যান্য অভিযুক্তদেরও। রাজ্যের ইতিহাসে এটিই দ্বিতীয় বৃহত্তম সোনার গয়না চুরির ঘটনা। “আমরা আটটি বিশেষ দলগঠন করেছিলাম এই রহস্যের সমাধান করতে। অপরাধীরা তদন্তকারীদের ভুল পথে চালিত করতে চেষ্টার ত্রুটি রাখে নি,” জানিয়েছেন এস পি লক্ষ্মণ নিম্বাগি।