গত মাসের ৭ তারিখ টেস্ট ক্রিকেট থেকে অবসর নিয়েছিলেন রোহিত শর্মা (Rohit Sharma)। তাঁর উত্তরসূরি হিসেবে নির্বাচকেরা বেছে নেন শুভমান গিল’কে (Shubman Gill)। টিম ইন্ডিয়ার ৩৭তম টেস্ট অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব পান ফাজিলকার ২৫ বর্ষীয় তরুণ। তাঁর হাত ধরে এক নয়া অধ্যায়ের সূচনা করবে ‘মেন ইন ব্লু,’ আশাবাদী ছিলেন ক্রিকেটজনতা। কিন্তু সেই স্বপ্ন ধাক্কা খেয়েছে শুরুতেই। হেডিংলের মাঠে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে মুখ থুবড়ে পড়েছে শুভমানের নেতৃত্বাধীন ভারতীয় দল (Team India)। টেস্টের পঞ্চম দিনে ইংল্যান্ডের প্রয়োজন ছিলো ৩৫০ রান। জয়ের জন্য ভারতের দরকার ছিলো ১০ টি উইকেট। কিন্তু প্রথম দেড় সেশনে একটিও সাফল্য ছিনিয়ে নিতে পারে নি ‘মেন ইন ব্লু।’ যার খেসারত দিতে হয়েছে তাদের। শেষমেশ ৫ উইকেটের ব্যবধানে জয় ছিনিয়ে নেয় বেন স্টোকসের দল’ই।
Read More: “অনেক ভুল করেছি…” আক্ষেপ পৃথ্বী শ-র, নিজেকে ফিরে পাওয়ার মরিয়া চেষ্টায় তরুণ তুর্কি !!
আতসকাঁচের নীচে শুভমানের নেতৃত্ব-

ইংল্যান্ডে অধিনায়ক হিসেবে কেরিয়ারের শুরুটা বিশেষ স্মরণীয় হলো না শুভমান গিলের (Shubman Gill)। হেডিংলে টেস্টের প্রথম চারদিন সেয়ানে সেয়ানে লড়াই চললেও পঞ্চম দিনে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে ক্রমেই পিছিয়ে পড়ে ভারতীয় দল। খেলা শেষে মাইক আথারটন’কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ব্যর্থতার দায় অনভিজ্ঞতা ও তারুণ্যের উপর চাপান অধিনায়ক। কিন্তু তাঁর নিজস্ব ভুলভ্রান্তিও চোখ এড়ায় নি ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। এই ইংল্যান্ডেই স্রেফ আগ্রাসী অধিনায়কত্বের জোরে ২০২১ সালে দেওয়ালে পিঠ ঠেকে যাওয়ার পরেও ম্যাচ জিতেছিলেন বিরাট কোহলি (Virat Kohli)। সেই আগুন যেন খুঁজে পাওয়া গেলো না শুভমান গিলের (Shubman Gill) মধ্যে। মাঠে তাঁর সতীর্থেরা যেমন ঢিলেঢালা ফিল্ডিং করলো দুই ইনিংসে, অধিনায়ক হিসেবে তেমনই নিস্তেজ দেখালো শুভমান’কে। প্রথম ইনিংসে লিড নেওয়ার পরেও তাই ম্যাচের গুরুত্বপূর্ণ সময়ে গুটিয়েই রইলো ভারতীয় দল।
রোহিত (Rohit Sharma) বা কোহলির মগজাস্ত্রের সাথে তরুণ শুভমানের (Shubman Gill) গেমপ্ল্যানের তফাৎ’ও বারবার প্রকট হয়েছে হেডিংলে ম্যাচে। অস্ট্রেলিয়া সফরে নীতিশ কুমার রেড্ডি ভালো খেলা সত্ত্বেও হেডিংলেতে শার্দুল ঠাকুরকে (Shardul Thakur) নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন তিনি। লোয়ার অর্ডারের ব্যাটিং ব্যর্থতা তফাৎ গড়ে দেয় খেলায়। ফর্মে থাকা নীতিশ ছয় বা সাতে ব্যাট হাতে নামলে ফলাফল অন্য হলেও হতে পারত। অধিনায়ক হওয়ার পরে স্লিপ কর্ডন ছেড়ে অধিকাংশ সময় শুভমানকে দেখা গিয়েছে মিড-অন বা মিড-অফে দাঁড়িয়ে ফিল্ডিং করতে। এই রদবদল’ও ঠিক কতটা যুক্তিযুক্ত তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন টিম ইন্ডিয়ার প্রাক্তনী বরুণ অ্যারন। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে অনেকেই জানিয়েছেন যে লিডসে ইংল্যান্ডের আক্রমণের কেবল প্রত্যুত্তর দেওয়ার চেষ্টা করেছেন ক্যাপ্টেন শুভমান (Shubman Gill)। স্বতঃপ্রবৃত্ত হয়ে প্রতিপক্ষকে আক্রমণ করার চেষ্টা করেন নি তিনি।
রয়েছে অধিনায়ক বদলের ভাবনা-

শুভমান গিলের (Shubman Gill) অধিনায়ক হওয়ার পিছনে ভূমিকা রয়েছে কোচ গৌতম গম্ভীরের, খবর বিসিসিআই সূত্রে। কিন্তু লিডসে হারের পর টালমাটাল খোদ কোচের আসন। নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে হারের পর ইংল্যান্ডেও যদি বিপর্যয়ের সম্মুখীন হতে হয় তাহলে অন্তত লাল বলের ফর্ম্যাটে গম্ভীর যে দায়িত্ব হারাবেন সে ব্যাপারে নিশ্চিত অনেকেই। নতুন কোচ করা হতে পারে ভিভিএস লক্ষ্মণ’কে। অনভিজ্ঞ শুভমানকে নেতার আসন থেকে সরাতে পারেন তিনি। এই মুহূর্তে ভারতীয় দলের সহ-অধিনায়ক ঋষভ পন্থ। কিন্তু বড় মঞ্চে নেতৃত্ব দেওয়ার অভজ্ঞতা তাঁরও নেই। ফলে লক্ষ্মণ জমানায় অধিনায়ক হওয়া কঠিন তাঁর পক্ষে। বদলে কেএল রাহুলকে (KL Rahul) বেছে নেওয়া হতে পারে নেতা হিসেবে। ইতিপূর্বে বেশ কিছু ওয়ান ডে ম্যাচে ভারতকে নেতৃত্ব দিয়েছেন তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে একটি টেস্ট সিরিজেও ছিলেন দায়িত্বে।