শ্রীলঙ্কা সফর থেকেই নয়া যুগের সূচনা হয়েছে টিম ইন্ডিয়ায় (Team India)। দ্রাবিড় জমানাকে পিছনে ফেলে পথ চলা শুরু করেছে ‘গুরু’ গম্ভীর (Gautam Gambhir) যুগ। সূচনালগ্নে চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছে বিশ্বজয়ী তারকাকে। টি-২০তে লঙ্কানদের হেলায় হারালেও ভারতীয় দল মুখ থুবড়ে পড়েছে ওডিআই-তে। ব্যাটিং অর্ডারের হতশ্রী পারফর্ম্যান্সের কারণে ২৭ বছর পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে খোয়াতে হয়েছে ওডিআই সিরিজ। বর্তমানে খানিক বিরতি রয়েছে ক্রিকেটারদের। কিন্তু সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি থেকে শুরু হচ্ছে লম্বা ক্রিকেট মরসুম। বাংলাদেশ, নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়ার মত প্রতিপক্ষের সম্মুখীন হতে হবে ভারতকে। লঙ্কা সফরের ব্যাটিং ব্যর্থতা মাথায় রেখে মিডল অর্ডারে কোচ গম্ভীর (Gautam Gambhir) ফেরাতে পারেন দুই অভিজ্ঞ তারকাকে।
Read More: বাংলাদেশ সিরিজের আগেই ভাগ্য খুললো ঈশান কিষানের, পেলেন দলের অধিনায়কত্ব করার সুযোগ !!
অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে কঠিন পরীক্ষা ভারতের-
নভেম্বরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়া সফরের জন্য উড়ে যাবে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। ব্যাগ গ্রিনদের ডেরায় বছরের কঠিনতম পরীক্ষা অপেক্ষা করে রয়েছে কোহলি-রোহিতদের জন্য। ২০১৭ সাল থেকে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে একাধিপত্য রয়েছে ভারতের। দুবার ঘরের মাঠে এবং দুবার বিদেশে সিরিজ জিতেছে ‘মেন ইন ব্লু।’ সেই দাপট ধরে রাখার চ্যালেঞ্জ সামনে রেখেই স্টার্ক-কামিন্সদের মুখোমুখি হবে টিম ইন্ডিয়া (Team India)। ২২ নভেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে সিরিজ। প্রথম টেস্ট পারথ্-এ। অ্যাডিলেডে রয়েছে দ্বিতীয় টেস্ট। শুরু ৬ নভেম্বর থেকে। দ্বিতীয় ম্যাচটি হতে চলেছে দিন-রাতের। দীর্ঘ সময় পর ‘পিঙ্ক বল’ টেস্টে দেখা যাবে ভারতীয় দলকে। এই অ্যাডিলেডেই ২০২০-তে ৩৬ রানে থেমেছিলো ভারতের ইনিংস। এবার ভালো পারফর্ম্যান্সের আশায় থাকবেন সমর্থকেরা।
১৪ ডিসেম্বর থেকে সিরিজের তৃতীয় টেস্টটি রয়েছে ব্রিসবেনে। গাব্বার মাঠে ৩২ বছরের অজি শাসন ধরাশায়ী হয়েছিলো ঋষভ পন্থের ব্যাটে। ঐতিহাসিক সেই সাফল্যের পুনরাবৃত্তি চাইবে টিম ম্যানেজমেন্ট। ২৬ তারিখ থেকে রয়েছে বক্সিং ডে টেস্ট। মেলবোর্নের এমসিজি’তে ব্যাগি গ্রিন বাহিনীর মোকাবিলা করবে ‘মেন ইন ব্লু।’ প্রায় দুই মাস ব্যপী সফরের পঞ্চম ও শেষ টেস্টটি হবে সিডনি’তে জানুয়ারির ৩ তারিখ থেকে। বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের (WTC 2023-25) পয়েন্ট তালিকায় প্রথম দুটি স্থানে রয়েছে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া। যে দল এই বর্ডার-গাওস্কর ট্রফি (BGT) জিতবে তারা যে লর্ডসের ফাইনালের দিকে এক পা এগিয়ে যাবে সে বিষয়ে নিঃসন্দেহ বিশেষজ্ঞরা। যা আলাদা মাত্রা এনেছে দুই হেভিওয়েটের যুদ্ধে।
রাহানের অভিজ্ঞতা হাতিয়ার টিম ইন্ডিয়ার-
গত এক-দেড় বছরে টেস্ট দলে নতুন মুখের জোয়ার দেখা গিয়েছে। সুযোগ পেয়েছেন যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal), মুকশ কুমাররা। ২০২৪-এর ফেব্রুয়ারিতে কেবলমাত্র ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই অভিষেক হয়েছে ৫ জনের। দেশের জার্সিতে প্রথম মাঠে নামতে দেখা গিয়েছে সরফরাজ খান, রজত পতিদার, আকাশ দীপ, দেবদত্ত পাডিক্কাল, ধ্রুব জুড়েলদের (Dhruv Jurel)। ঘরের মাঠে তারুণ্যের উপর আস্থা রাখলেও অস্ট্রেলিয়ার চ্যালেঞ্জিং পরিস্থিতিতে অভিজ্ঞতার ‘পারফেক্ট ব্যালান্স’-এর সন্ধানে নবনির্বাচিত কোচ গৌতম গম্ভীর। বিশেষজ্ঞদের অনেকেরই ধারণা যে সরফরাজ, দেবদত্তদের মত তরুণদের গতিময় পিচে স্টার্ক-কামিন্সদের বিরুদ্ধে লড়াইতে না নামিয়ে আরও একবার অজিঙ্কা রাহানে (Ajinkya Rahane) ও চেতেশ্বর পূজারার (Cheteshwar Pujara) অভিজ্ঞতাকে পুঁজি করবে টিম ইন্ডিয়া।
ভারতের মিডল অর্ডারে এক দশকেরও বেশী সময় নিয়মিত দেখা গিয়েছে চেতেশ্বর পূজারা ও অজিঙ্কা রাহানে’কে। তিন নম্বরে পূজারা ও পাঁচে রাহানে বিদেশের মাঠে বহু কঠিন পরিস্থিতি সামলেছেন বিক চিতিয়ে। কিন্তু গত বছরের মাঝামাঝি থেকেই পূর্বতন কোচ রাহুল দ্রাবিড়ের ‘ব্ল্যাক লিস্ট’-এ সামিল হন তাঁরা। ওভালে বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের ফাইনালের পর বাদ পড়েন পূজারা। রাহানেকে ছেঁটে ফেলা হয় অগস্টে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরের পর। গম্ভীরের হাত ধরে দীর্ঘ অজ্ঞাতবাস হয়ত কাটতে চলেছে তাঁদের। অভিজ্ঞতার পাশাপাশি সাম্প্রতিক ফর্ম’ও পক্ষে যাচ্ছে তাঁদের। পূজারা রঞ্জি ও কাউন্টি ক্রিকেটে দারুণ খেলেছেন। রানের মধ্যে রাহানেও। এছাড়া অস্ট্রেলিয়াতে এর আগে একাধিক বড় ইনিংস খেলেছেন দু’জনেই। যা তাঁদের অন্তর্ভুক্তির বড় কারণ হতে পারে।