ফের বিতর্কের কেন্দ্রে পাকিস্তান ক্রিকেট। ২০২২-এর শেষে রামিজ রাজা সরে যাওয়ার পর থেকেই ডামাডোল চলছে পিসিবি’র অন্দরে। বাবর আজম (Babar Azam), শাহীন আফ্রিদিদের দেশে ক্রিকেট সংস্থার দায়িত্ব সামলানোর ভার দেওয়া হয় নাজম শেঠিকে। এশিয়া কাপ (Asia Cup 2023) আয়োজন নিয়ে ভারতের সাথে বিতর্কে জড়ান তিনি। তাঁর বেশ কিছু মন্তব্যে তৈরি হয় বিতর্কের ঝড়। মাসখানেক দায়িত্ব সামলানোর পর আচমকাই সরে দাঁড়িয়েছিলেন তিনি। চেয়ারম্যান পদে বসেন জাকা আশরাফ (Zaka Ashraf)। তিনি মসনদে থাকাকালীনই এশিয়া কাপ ও বিশ্বকাপের (ICC World Cup 2023) মত টুর্নামেন্টে অংশ নেয় পাকিস্তান। বাবর-শাদাবদের এশিয়া কাপ খেলা, ভারতীয় প্রতিনিধি দলকে পাকিস্তানে স্বাগত জানানো বা বিশ্বকাপ খেলতে পাক দলের ভারতে আসা নিয়ে তৈরি হওয়া জটিলতা সামলালেও দলের সার্বিক উন্নতি করতে পারেন নি তিনি।
বিশ্বকাপে পাকিস্তানের হতাশাজনক পারফর্ম্যান্সের পর দলের খোলনচলেই পালটে দিয়েছিলো পিসিবি। বাবর আজমকে (Babar Azam) সরিয়ে নতুন টেস্ট অধিনায়ক হন শান মাসুদ। টি-২০তে নেতা করা হয় শাহীন আফ্রিদিকে। কোচ, মেন্টর, নির্বাচক পদেও রদবদল হয়। মহম্মদ হাফিজকে দেওয়া হয় কোচের দায়িত্ব। উমর গুল, সঈদ আজমল’রা পরামর্শদাতা হিসেবে যুক্ত হন দলের সাথে। ইনজামাম-উল-হকের বদলে নির্বাচক পদে নিযুক্ত হন ওয়াহাব রিয়াজ। জাকা (Zaka Ashraf) জমানায় দলের গঠনতন্ত্রে একঝাঁক পরিবর্তন হলেও নিজের কুরসী লম্বা সময় রক্ষা করতে পারেন নি তিনি। ফেব্রুয়ারিতে মেয়াদ শেষ হওয়ার আগেই ইস্তফা দেন তিনি। নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নির্বাচিত হন মহসীন নকভি (Mohsin Naqvi)। দায়িত্ব পেয়েই নতুন বিতর্কের জন্ম দিলেন তিনি। বাবর আজম, শাহীন শাহ আফ্রিদিদের মত তারকা ক্রিকেটারদের আচরণে খুশি নয় নকভির নেতৃত্বাধীন পিসিবি।
Read More: “বোর্ড সম্পূর্ণভাবে…” শেষ ৩ টেস্ট বিরাটের না খেলার সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানালো BCCI, করলো এই মন্তব্য !!
বোর্ডের রোষানলে শাহীন, বাবরের মত তারকা-
বর্তমানে পাকিস্তান ক্রিকেট দলের ফর্ম একেবারেই তলানিতে। বিশ্বকাপের পর অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে টেস্ট সিরিজে হোয়াইটওয়াশ হয়েছেন বাবর-রিজওয়ানরা। তিন ম্যাচের সিরিজের তিনটিতেই হেরেছেন নাস্তানাবুদ হয়ে। এরপর টি-২০তেও নিউজিল্যান্ড সফরে গিয়ে লজ্জার হারের মুখ দেখতে হয়েছে তাঁদের। পাঁচ ম্যাচের সিরিজে কিউইরা পাকিস্তানকে হারিয়েছে ৪-১ ফলে। লাগাতার ব্যর্থতার মাঝে ক্রিকেটতারকাদের সোশ্যাল মিডিয়ার কর্মকাণ্ড ক্ষোভ বাড়িয়েছে পিসিবি’র অন্দরে। নিশানায় প্রাক্তন অধিনায়ক বাবর আজম (Babar Azam) ও বর্তমান টি-২০ অধিনায়ক শাহীন শাহ আফ্রিদি (Shaheen Shah Afridi)। ঘটনার সুত্রপাত এক্স (পূর্বতন ট্যুইটার) সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মে বাবর আজমের আয়োজন করা এক প্রশ্নোত্তর পর্বকে ঘিরে। দুই লাখ অনুরাগী এই প্রশ্নোত্তর পর্বে অংশ নেন। তাঁদের বহু প্রশ্নের জবাব’ও দেন এই মুহূর্তে ওডিআই র্যাঙ্কিং-এ শীর্ষে থাকা ব্যাটার।
বাবরের (Babar Azam) পর এই একই কাজ করতে দেখা যায় শাহীনকেও (Shaheen Shah Afridi)। এক্স-প্ল্যাটফর্মে প্রশ্নোত্তর সেশন আয়োজন করেন তিনিও। বেশ জনপ্রিয়’ও হয় তা। বাবর ও শাহীন, দুজনেই রয়েছেন পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের কেন্দ্রীয় চুক্তির আওতায়। সংবাদমাধ্যম PTI-এর প্রকাশিত খবর অনুযায়ী পাক বোর্ড ভালো চোখে দেখছে না দুই সিনিয়রের কর্মকাণ্ড। শীঘ্রই তারা এইভাবে সোশ্যাল মিডিয়ায় চ্যাট সেশনে অংশ নেওয়ার বিরুদ্ধে কড়া আইন আনতে চলেছে। তারা মনে করছে এই জাতীয় প্রশ্নোত্তর পর্ব দলকে অহেতুক বিতর্কের মুখে ফেলতে পারে। সেই কারণেই খেলোয়াড়দের সমাজমাধ্যম ব্যবহারেও রাশ টানতে চলেছে পিসিবি। একটি চ্যাট শো’তে করা মন্তব্যের জন্য ভারতে বিসিসিআই-এর নির্বাসনের মুখে পড়েছিলেন কে এল রাহুল ও হার্দিক পান্ডিয়া। নতুন আইন এলে বাবর বা শাহীনের কোনো শাস্তি হয় কিনা, সেইদিকেই এখন তাকিয়ে সকলে।