পাকিস্তান ক্রিকেটের অন্দরে ডামাডোল অব্যাহত। মেয়াদ ফুরানোর আগেই চেয়ারম্যান পদ থেকে সরে গিয়েছেন জাকা আশরাফ (Zaka Ashraf)। বোর্ডের নতুন চেয়ারম্যান হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন মহসীন নকভি। তাঁর নেতৃত্বে ফের একবার পাক ক্রিকেটের গঠনতন্ত্রে বড়সড় বদল আনার ভাবনা দেখা গিয়েছে পিসবি’র অন্দরে। দিনকয়েক আগে শোনা গিয়েছিলো শাস্তির মুখে পড়তে পারেন দুই তারকা ক্রিকেটার বাবর আজম (Babar Azam) ও শাহীন শাহ আফ্রিদি (Shaheen Shah Afridi)। অনুমতি ছাড়াই এক্স সোশ্যাল মিডিয়া হ্যান্ডেলে প্রশ্নোত্তর পর্ব আয়োজন করায় তাঁদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিতে পারে বোর্ড। এমনকি নতুন সোশ্যাল মিডিয়া আইন আনার কথাও ভাবা হচ্ছে। এরই মধ্যে বিতর্ক বাড়লো হারিস রউফকে (Haris Rauf) নিয়ে। পাকিস্তানের এক্সপ্রেস পেসার’কে নিয়ে কড়া পদক্ষেপ নিলো পাক ক্রিকেট নিয়ামক সংস্থা। আপাতত প্রশ্নের মুখে হারিসের কেরিয়ার।
Read More: “একটু নজরে রাখবেন…” অবশেষে টেস্ট ক্রিকেটে অভিষেক হওয়ার পর ক্যাপ্টেন রোহিতের কাছে আবেদন জানালেন সরফরাজ খানের পিতা !!
চুক্তি বাতিল হারিসের, সংকটে কেরিয়ার-
গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণা করেছিলো পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড (PCB)। ক্রিকেটারদের এ, বি, সি ও ডি-এই চার বিভাগে ভাগ করা হয়েছিলো। সর্বোচ্চ এ-গ্রেডে ছিলেন বাবর আজম, শাহীন শাহ আফ্রিদি ও মহম্মদ রিজওয়ান। বি-গ্রেডে ইমাম উল হক, ফখর জামান, মহম্মদ নাওয়াজ, শাদাব খানদের সাথে ছিলেন হারিস রউফ’ও (Haris Rauf)। কেন্দ্রীয় চুক্তি ঘোষণার সাথে সাথে ক্রিকেটারদের আর্থিক সুযোগ সুবিধা’ও বাড়ানোর ঘোষণা করেছিলো পাক বোর্ড। কিন্তু মাসকয়েক যেতে না যেতেই হারিস রউফের চুক্তি বাতিল করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা। নেপথ্যে শৃঙ্খলাজনিত কারণ। দেশের হয়ে খেলার বদলে টি-২০ লীগে মনোনিবেশ করাই কাল হয়েছে পাকিস্তানের ফাস্ট বোলারের জন্য।
বিশ্বকাপে হতাশাজনক পারফর্ম্যান্সের পর গত বছরের শেষের দিকে অস্ট্রেলিয়া সফর ছিলো পাকিস্তানের। টেস্ট সিরিজের জন্য হারিস’কে (Haris Rauf) বেছে নিতে চেয়েছিলো বোর্ড। কিন্তু তিনি লাল বলের ফর্ম্যাটে খেলতে রাজী হন নি। বরং মেলবোর্ন স্টারসের হয়ে সেই সময় বিগ ব্যাশ লীগে অংশ নিয়েছিলেন। এতেই চটেছে বোর্ড। শাস্তিস্বরূপ তাঁর কেন্দ্রীয় চুক্তি বাতিল করা হয়েছে। এক বিজ্ঞপ্তিতে পিসিবি জানিয়েছে, “আত্মপক্ষ সমর্থনের জন্য পিসিবি হারিস রউফকে ৩০ জানুয়ারি, ২০২৪ অবধি সময় দিয়েছিলো, কিন্তু যে ব্যাখ্যা তিনি দিয়েছেন তা যুক্তিগ্রাহ্য বলে মনে হয় নি। পাকিস্তানের হয়ে মাঠে নামা কোনো ক্রীড়াবিদের কাছে সর্বোচ্চ সম্মান। কোনো শারীরিক সমস্যা ছাড়া টেস্ট দলের অংশ হতে রাজী না হওয়া কেন্দ্রীয় চুক্তির শর্তাবলীর পরিপন্থী।”
টি-২০ লীগগুলিতেও খেলতে বাধা হারিস’কে-
কেন্দ্রীয় চুক্তি বাতিল করার সাথে সাথে আগামী ৩০ জুন অবধি বিদেশের টি-২০ লীগগুলিতে খেলার ক্ষেত্রেও নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে হারিসের (Haris Rauf) উপর। পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ড এন ও সি দেবে না বলে ঘোষণা করেছে। খাতায়-কলমে শাস্তি পেলেও এন ও সি না পাওয়ায় বিশেষ সমস্যার মুখে পড়তে হচ্ছে না হারিসকে (Haris Rauf)। ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৮ মার্চ অবধি রয়েছে পাকিস্তান সুপার লীগ। সেখানে খেলতে বিশেষ অসুবিধা নেই ডান হাতি পেসারের। টি-২০ লীগগুলির মধ্যে এরপর রয়েছে ভারতের আইপিএল। সেখানে কেবল হারিস নয়, কোনো পাক ক্রিকেটারই খেলেন না। মে মাসে ইংল্যান্ডে টি-২০ ব্লাস্ট টুর্নামেন্ট রয়েছে ঠিকই, কিন্তু সেই সময় ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই সাদা বলের সিরিজ রয়েছে পাকিস্তানের। দেশের হয়ে খেলতে ব্যস্ত থাকায় এমনিই টি-২০ ব্লাস্ট খেলা হত না তাঁর।