PAK vs NZ: এক সপ্তাহ আগে ছবিটা ছিলো সম্পূর্ণ আলাদা। ভারতের বিপক্ষে প্রথম ম্যাচে হার। তারপরের ম্যাচে জিম্বাবুয়ের কাছেও পরাজয়। দেশে বিদেশে সমালোচনার ঝোড় উঠেছিলো পাকিস্তান দল’কে নিয়ে। প্রাক্তন পাক কিংবদন্তী’রা বলছিলেন অন্যান্য দলের তুলনায় কতটা পিছিয়ে রয়েছে পাকিস্তান। অনেকে তো ক্যানবেরা থেকে করাচি বিমানবন্দরের টিকিট কেটে ফেলতেও উপদেশ দিয়ে ফেলেছিলেন পাকিস্তান দল’কে। সব সমালোচনা, সব নিন্দার জবাব দিয়ে আজ নিউজিল্যান্ড’কে শেষ চারের যুদ্ধে হারিয়ে ফাইনালের পথে শাহীন শাহ আফ্রিদি’রা। ফিটনেস, চোট, ফর্ম সব কিছু নিয়ে দলের খেলোয়াড়দের অবিরাম আক্রমণ করা হয়েছে দেশের সংবাদমাধ্যমে, সমাজমাধ্যমে। সব কিছুর জবাব দিতে পেরে তৃপ্ত নেতা বাবর আজম(Babar Azam)। তাঁর নিজের ব্যাটিং ফর্ম নিয়েও চর্চা চলছিলো। বিশ্বকাপের শেষ ৫ ম্যাচে কোনো বড় রান ছিলো না তাঁর ব্যাটে। সেই শৃঙ্খল থেকেও নিজেকে মুক্ত করে ৪৩ বলে ৫২ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে বাবর বুঝিয়ে দিলেন ফাইনালের জন্য তিনি তৈরি। ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে এসে ফাইনালে ওঠার আনন্দ ঝড়ে পড়লো তাঁর গলায়।
খুশি হলেও লক্ষ্য আমাদের স্থির, জানালেন বাবর-

সিডনি’তে নিউজিল্যান্ড বনাম পাকিস্তান টি-২০ বিশ্বকাপ সেমিফাইনাল ম্যাচটি হাড্ডাহাড্ডি হবে বলে আশা করেছিলেন বিশ্বের ক্রিকেটপ্রেমী’রা। তাদের ভুল প্রমাণ করে প্রায় একপেশে ম্যাচ ৭ উইকেটে সহজেই জিতে নিলো পাকিস্তান। দক্ষিণ আফ্রিকা’কে হারিয়ে যে দ্বিতীয় সুযোহ নেদারল্যান্ডস পাকিস্তান দল’কে দিয়েছিলো তা দুই হাতে গ্রহণ করে হারের অন্ধকার থেকে জয়ের সরণী’তে ফিরেছেন বাবর আজম, শাদাব খান’রা। টদে জিতে প্রথমে ব্যাট করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কিউই অধিনায়ক কেন উইলিয়ামসন। তখন বাবর জানান টসে জিতলে ব্যাটিং করতেন তাঁরাও। টস হারা শেষমেশ সাপে বর হয়ে দেখা দিলো। নিউজিল্যান্ডের দেওয়া ১৫৩ রানের লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে বাবরের ৪২ বলে ৫৩ এবং মহম্মদ রিজওয়ানের ৪৩ বলে ৫৭ রানের দৌলতে ৭ উইকেটে ম্যাচ জিতলো পাক দল। ম্যাচ শেষে পুরষ্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে তাঁকে পাওয়া গেলো হাল্কা মেজাজে। জয়ের জন্য প্রথমেই সমর্থকদের ধন্যবাদ জানিয়েছেন বাবর(Babar Azam)। বলেন, “যারা আমাদের সমর্থন করতে মাঠে এসেছেন আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই তাঁদের। মনে হলো যেন ঘরের মাঠে খেলছি।” জয়ের পিছনে বোলারদের গুরুত্ব জানাতে গিয়ে বলেন, “ প্রথম ছয় ওভার আমরা ভালো বল করেছি। বোলার’রা পাওয়ার প্লে’তে সুবিধা নিয়েছে। পরের দিকে পিচে পড়ে বল ব্যাটে আসতে অসুবিধা হচ্ছিলো। আমাদের পেসার’রা দারুণ বল করেছে।” মন্থর পিচে ব্যাটিং স্ট্র্যাটেজি কি ছিলো? প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, “আমরা পাওয়ার প্লে’তে বোর্ডে রান তুলে নেওয়ার চেষ্টা করছিলাম।”
ম্যাচের হিরো হ্যারিস’কে আগলে রাখছেন বাবর-

দক্ষিণ আফ্রিকা ম্যাচে তাঁকে প্রথম দেখা গিয়েছিলো বিশ্বকাপের মঞ্চে। সেইদিন থেকে নিজের ভয়ডরহীন ক্রিকেট দিয়ে সবার মন জিতে নিয়েছেন পাকিস্তান দলের নতুন তারা মহম্মদ হ্যারিস(Mohammad Haris)। আজ বাবর এবং রিজওয়ান আউট হয়ে যাওয়ার পরে পাক ইনিংসের ভার কাঁধে তুলে নিয়ে ২৬ বলে ৩০ রান করেন তিনি। জয়ের একদম কাছে এসে বাজে শট খেলতে গিয়ে উইকেট হারান হ্যারিস। তাঁকে নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে স্নেহশীল অধিনায়ক আগলে রাখলেন অনুজ’কে। বলেন, “ হ্যারিসের বয়স অল্প তাই হয়ত মাঝে মাঝেমধ্যে আগ্রসন দেখাতে যায়। ও আমাদের হয়ে দুর্দান্ত খেলছে।” জয়ের অনুভূতি কেমন? এই প্রশ্ন তাঁকে করা হলে বাবর জানান, “আমরা অবশ্যই খুশি। তবে আমাদের লক্ষ্য এখন ফাইনাল। সেখান থেকে ফোকাস সরানোর কোনো প্রশ্নই উঠছেনা” পাক দলের মেন্টর ম্যাথিউ হেডেন অবশ্য ফাইনালে সম্ভাব্য প্রতিপক্ষের দিকে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে জানিয়েছেন, “আজকে একটা বিশেষ দিন। যে পেস বোলিং আক্রমণ আজ দেখলেন তা অনবদ্য ঠিকই। কিন্তু আমাদের সেরাটা এখনও আসে নি।” নিজেদের সেরা পারফর্ম্যান্স কি পাকিস্তান তুলে রেখেছে ফাইনালের জন্য? উত্তর পাওয়া যাবে আগামী রবিবার, মেলবোর্নে।