রীতিমত বিপর্যয়ের সম্মুখীন ভারতীয় দল (Team India)। ১২ বছর ঘরের মাঠে টেস্ট সিরিজে অপরাজিত থাকার মুকুট খসেছিলো আগেই। বেঙ্গালুরু ও পুণেতে জোড়া হারের সম্মুখীন হতে হয়েছিলো রোহিত শর্মাদের (Rohit Sharma)। ওয়াংখেড়েতে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ম্যাচটি লাইফলাইন হতে পারত টিম ইন্ডিয়ার (Team India) জন্য। জিতলে মানরক্ষার পাশাপাশি আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজের জন্য আত্মবিশ্বাস খানিক ফিরে পেতেন ক্রিকেটাররা। কিন্তু শেষরক্ষা হলো না সেখানেও। আরও একবার স্পিনের বিরুদ্ধে হুড়মুড়িয়ে ভাঙে ভারতীয় ব্যাটিং। আজাজ প্যাটেল (Ajaz Patel), গ্লেন ফিলিপসদের (Glenn Phillips) সামনে আত্মসমর্পণ করে মাত্র তিন দিনের মধ্যে মুম্বইতেও পরাজয়ে অন্ধকারে ঢাকে ‘মেন ইন ব্লু।’ ২০০০ সালে হ্যান্সি ক্রোনিয়ের দক্ষিণ আফ্রিকা ২-০ হারিয়েছিলো ভারতকে। তার ঠিক ২৪ বছর পর ঘরের মাঠে হোয়াইটওয়াশ হলো তারা।
Read More: “ঘরের বউ নাকি…” পাক ক্যাপ্টেন রিজওয়ানের কাণ্ডে হাসির রোল সোশ্যাল মিডিয়ায় !!
ভারতকে হারাবে পাকিস্তান,মত আক্রমের-
ঘরের মাঠে ভারতের (Team India) অশ্বমেধের ঘোড়ার লাগাম যখন টেনে ধরলো নিউজিল্যান্ড, ঠিক তখনই ওয়াঘা সীমান্তের ওপারে ব্যর্থতার অন্ধকার কাটিয়ে উঠলো পাকিস্তান (Pakistan)। ১৩৪৯ দিন পর ঘরের মাঠে টেস্ট জয়ের নজির স্থাপন করলো তারা। মুলতানে প্রথম ম্যাচে এক ইনিংসে ৮২৩ রান হজম করেছিলো পাক শিবির। ত্রিশতক করেছিলেন হ্যারি ব্রুক, দ্বিশতক করেন জো রুট (Joe Root)। হেরে পিছিয়ে পড়ার পর খোলনলচে বদলে ফেলা হয় দলের। বাদ দেওয়া হয় বাবর-শাহীনদের মত তারকাদের। পেস বোলিং-এর বদলে স্পিনের উপর আস্থা রাখার সিদ্ধান্ত নেন কোচ জেসন গিলেসপি। আর তাতেই বদলে যায় ভাগ্য। দুই স্পিনার নোমান আলি (Noman Ali) ও সাজিদ খানের (Sajid Khan) ঘূর্ণির ধাক্কা সিরিজের বাকি দুই টেস্টে সামলে উঠতে পারে নি ইংল্যান্ড। ২-১ ফলে সিরিজ জিতে নেন শান মাসুদের দল।
পুণে ও মুম্বই, দুই ভেন্যুতেই ভারতের বিরুদ্ধে ঘাতক হয়েছেন কিউই স্পিনাররা। প্রাক্তনী সাইমন ডুল (Simon Doull) ধারাভাষ্যের সময় বলতে বাধ্য হয়েছেন যে, “ভারত স্পিনটা ভালো খেলে,এই বক্তব্যটি আর হয়ত সত্যি নয়। শচীন, সৌরভ, দ্রাবিড়দের জমানা আর নেই। স্পিনের বিরুদ্ধে বাকিদের মত সমস্যায় পড়েন ভারতীয় ব্যাটাররাও।” কোহলি-রোহিতদের এই দুর্বলতা নজর এড়ায় নি পাক প্রাক্তনী ওয়াসিম আক্রমেরও (Wasim Akram)। সাজিদ-নোমান জুটির বিরুদ্ধেও ভারত বেকায়দায় পড়বে বলেই মনে করেন তিনি। একটি সাক্ষাৎকারে মাইকেল ভন’কে আক্রম জানান, “ভারত-পাকিস্তানের মধ্যে টেস্ট ম্যাচ হলে তা ক্রিকেটপাগল দুই দেশের জন্যই একটা বিরাট ব্যাপার হবে। ঘূর্ণি উইকেটে পাকিস্তানের সামনে ভারতকে হারিয়ে দেওয়ার সুযোগ থাকবে। ওরা নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ঘরের মাঠে ৩-০ ফলে ধরাশায়ী হয়েছে।”
বন্ধ রয়েছে ভারত-পাক টেস্ট ম্যাচ-
দীর্ঘ সময় বন্ধ রয়েছে ভারত বনাম পাকিস্তান (INDIA vs PAKISTAN) টেস্ট ম্যাচ। শেষবার ২০০৭ সালে তিন ম্যাচের একটি সিরিজ খেলেছিলো দুই দেশ। ভারত ১-০ ফলে জিতেছিলো সেইবার। এরপর সতেরো বছর কেটে গেলেও লাল বলের ফর্ম্যাটে মুখোমুখি হয় নি দুই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী। কূটনৈতিক সম্পর্কের অবনতি ঘটায় ২০১২ থেকে বন্ধ রয়েছে যাবতীয় দ্বিপাক্ষিক সিরিজ’ও। তা সত্ত্বেও ক্রিকেটদুনিয়ার কাছে ভারত-পাক (INDIA vs PAKISTAN) যুদ্ধের আবেদন কমে নি বিন্দুমাত্র। বরং দুই দেশের মধ্যে তিন টেস্টে একটি সিরিজ আয়োজনের ইচ্ছা ইতিপূর্বে প্রকাশ করেছিলো ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (CA)। সবুজ সংকেত পাওয়া যায় নি বিসিসিআই ও পিসিবি দুই তরফেই। একমাত্র বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ (WTC) ফাইনালে দুই দল উঠলে লাল বলের ফর্ম্যাটে কোহলি-রিজওয়ানদের সম্মুখসমরে নামতে দেখা যেতে পারে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।