আইপিএলের আসরে নজর কেড়েছিলেন নীতিশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy)। সানরাইজার্স হায়দ্রাবাদের জার্সিতে ১৩ ম্যাচ খেলে ৩৩.৬৬ গড়ে তিনি করেন ৩০৩ রান। স্ট্রাইক রেট ছিলো ১৪২.৯২। মাত্র ২১ বছর বয়সী নীতিশের পারফর্ম্যান্স নিয়ে হইচই শুরু হয়েছিলো ক্রিকেটমহলে। দ্রুত জাতীয় টি-২০ দলে ডাক পেয়েছিলেন তিনি। বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দেশের মাঠে হয় অভিষেক। ধুন্ধুমার একটি ৭৪ রানের ইনিংস খেলে নীতিশ বুঝিয়ে দিয়েছিলেন যে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্যও তৈরি তিনি। নয়া কোচ গৌতম গম্ভীরের (Gautam Gambhir) উদ্যোগেই বর্ডার-গাওস্কর ট্রফির স্কোয়াডে কার্যত ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি দেওয়া হয় তাঁকে। সেই সময় কোচের বিরুদ্ধে পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ এনেছিলন অনেকে। কিন্তু অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে পারফর্ম্যান্সের জোরেই যাবতীয় সন্দেহ তুড়ি মেরে উড়িয়েছেন নীতিশ (Nitish Kumar Reddy)।
Read More: কোহলি জমানার তিন নায়ককে ছেঁটে ফেলেছেন রোহিত, অধিনায়কের ইগোর খেসারত দিচ্ছে টিম ইন্ডিয়া !!
আরও উন্নতি করতে চান নীতিশ রেড্ডি-
চলতি বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে (BGT) টিম ইন্ডিয়ার সেরা আবিষ্কার নিঃসন্দেহে নীতিশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy)। অস্ট্রেলিয়ার মাটিতে ভারতীয় একাদশে কার্যত অপরিহার্য্য হয়ে উঠেছেন তিনি। পার্থ-এ অভিষেক টেস্টেই দুই ইনিংসে ৪১ ও ৩৮* রান করে দক্ষতার প্রমাণ দিয়েছিলেন। তিনি যে লম্বা রেসের ঘোড়া তা বোঝা গিয়েছিলো অ্যাডিলেডে। গোলাপি বলের বিরুদ্ধে রোহিত-কোহলিদের মত মহারথীরা যেখানে ব্যাকফুটে সেখানে অকুতোভয় নীতিশ (Nitish Kumar Reddy) দুই ইনিংসেই করেন ৪২ করে। চতুর্থ ভারতীয় হিসেবে ব্যাটিং অর্ডারে সাত বা তার পরে নেমে দুই ইনিংসেই দলের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হওয়ার বিরল নজির গড়েন তিনি। ব্রিসবেনে বিশেষ সুবিধা করতে পারেন নি। মাত্র ১৬ করে ফেরেন সাজঘরে। কিন্তু সেই ব্যর্থতা তিনি ঝেড়ে ফেললেন মেলবোর্নে। করলেন কেরিয়ারের প্রথম আন্তর্জাতিক শতরান।
গতকাল নতুন শৃঙ্গ জয় করলেন নীতিশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy)। ঐতিহাসিক মেলবোর্নে ৭০ হাজার দর্শকের সামনে এক ঐতিহাসিক শতরান করে দলকে টেনে তুললেন খাদের কিনার থেকে। ১১৪ রানের দুর্ধর্ষ ইনিংসের প্রশংসায় পঞ্চমুখ প্রাক্তনীরা। সুনীল গাওস্করের (Sunil Gavaskar) মত কিংবদন্তি “রত্ন” বলেছেন তাঁকে। সাফল্যের স্বাদ পেয়ে খুশি হলেও উচ্ছ্বাসে ভেসে যেতে রাজী নন নীতিশ (Nitish Kumar Reddy) স্বয়ং। এখনও অনেকটা পথ চলার রয়েছে তাঁর, সুযোগ রয়েছে অনেক উন্নতিরও, মনে করেন তিনি। সংবাদসংস্থা PTI-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে তিনি জানিয়েছেন, “আমি ভারতের হয়ে একজন ভালো অলরাউন্ডার হতে চাই। যেভাবে বোলিং করছি, তাতে আমি এখনও খুশি নই। আমাকে বোলিং-এ উন্নতি করার জন্য খাটতে হবে। আমি ঐ অলরাউন্ডারের জায়গাটা নিতে চাই।”
হার্দিকের জন্য কঠিন হচ্ছে চ্যালেঞ্জ-
পেস বোলিং অলরাউন্ডার হিসেবে গত পাঁচ-ছয় বছরে ভারতীয় দলে কার্যত একচ্ছত্র আধিপত্য রয়েছে হার্দিক পান্ডিয়ারই (Hardik Pandya)। তিনি চোট পাওয়ায় কখনও ভেঙ্কটেশ আইয়ার বা কখনও বিজয় শঙ্করের মত কেউ কেউ ডাক পেয়েছেন বটে। কিন্তু হার্দিকের জুতোয় পা গলাতে পারেন নি কেউই। অবশেষে নীতিশের (Nitish Kumar Reddy) আগমনে চ্যালেঞ্জের সামনে পড়তে পারেন বরোদার তারকা, মত ক্রিকেট বিশেষজ্ঞদের। যদি বোলিং-এ আরও খানিক উন্নতি করতে পারেন বিশাখপত্তনমের নীতিশ, তাহলে তিনি হার্দিকের (Hardik Pandya) আদর্শ বিকল্প হয়ে উঠতে পারেন বলে মত তাঁদের। লাল বলের ক্রিকেট হার্দিক এমনিতেই খেলেন না, নীতিশের আগমনে তাঁর প্রত্যাবর্তনের সম্ভাবনাও আপাতত বিশ বাঁও জলে। যদি এভাবেই এগোতে থাকেন তিনি, তাহলে বছর খানেকের মধ্যে ওয়ান ডে ও টি-২০ স্কোয়াডেও সিনিয়র তারকার আসন টলিয়ে দিতে পারেন বিশাখাপত্তনমের তরুণ।
Also Read: IND vs AUS 4th Test: “ক্যাচ মিস, ম্যাচ মিস…” ব্যাগি গ্রিনদের বাগে পেয়েও সুযোগ নষ্ট ভারতের, আক্ষেপ সোশ্যাল মিডিয়ার !!