আজ থেকে শুরু হয়েছে দলীপ ট্রফি (Duleep Trophy)। ঘরোয়া ক্রিকেটের উপর বাড়তি জোর দেওয়ার সংকল্প নিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড। তারই ফলশ্রুতি হিসেবে এবার দলীপ ট্রফি হচ্ছে নতুন ফর্ম্যাটে। ভারত-এ, ভারত-বি, ভারত-সি ও ভারত-ডি, চার দলের মধ্যে হচ্ছে লড়াই। বিরাট কোহলি, রোহিত শর্মা, রবিচন্দ্রণ অশ্বিন ও জসপ্রীত বুমরাহ, টেস্ট দলের চার সিনিয়র তারকা বাদে প্রায় সকলেই অংশ নিচ্ছেন টুর্নামেন্টে। যদিও রবীন্দ্র জাদেজা, মহম্মদ সিরাজ ও সূর্যকুমার যাদব, চোট-আঘাতজনিত কারণে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন ইতিমধ্যে। আজ বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে মুখোমুখি হয়েছে ভারত-এ ও ভারত-বি। অন্য দিকে অন্ধ্রপ্রদেশের অবন্তিপুরায় সম্মুখসমরে ভারত-সি ও ভারত-ডি। প্রথম ম্যাচটিতে একটা সময় অবধি চালকের আসনে ছিলো ভারত-এ কিন্তু এক তরুণের দাঁতে দাঁত চাপা লড়াই দিনের শেষে লড়াইতে ফেরালো ভারত-বি’কে।
Read More: IPL 2025: “এটা খুবই…” নাইট রাইডার্স ছাড়ছেন রিঙ্কু সিং, ভিডিও প্রকাশ করে স্পষ্ট করলেন অবস্থান !!
একা কুম্ভ হয়ে লড়লেন মুশির খান-
দলীপ ট্রফিতে (Duleep Trophy) আজ ভারত-এ দলের বোলিং লাইন আপের সামনে রীতিমত কেঁপে গিয়েছিলো ভারত-বি দলের ব্যাটিং। দুই ওপেনার যশস্বী জয়সওয়াল (Yashasvi Jaiswal) ও অভিমণ্যু ঈশ্বরণ (Abhimanyu Easwaran) ফিরে গিয়েছিলেন দ্রুত। যথাক্রমে ৩০ ও ১৩ রান করেন তাঁরা। তারকা উইকেটরক্ষক-ব্যাটার ঋষভ পন্থ আউট হয়েছিলেন মাত্র ৭ রান করে। নীতিশ কুমার রেড্ডি (Nitish Kumar Reddy) ও সাই কিশোরের সংগ্রহ ০। একটা সময় ৯৪ রানের মধ্যে ৭ উইকেট হারিয়ে বসেছিলো ভারত-বি। ১২০ রান আদৌ স্কোরবোর্ডে উঠবে এই নিয়ে চিন্তায় ছিলো দল। চিন্নাস্বামীর পিচে ঘাস রয়েছে ভালোই। তখন সেখানে আগুন ঝরাচ্ছিলেন ভারত-এ’র পেসার’রা।
কিন্তু রুখে দাঁড়ান বছর উনিশের মুশির খান (Musheer Khan) । নভদীপ সাইনিকে (Navdeep Saini) সাথে নিয়ে একা কুম্ভ হয়ে লড়াই চালিয়ে গেলেন তরুণ অলরাউন্ডার। আবেশ খান, আকাশ দীপ, কুলদীপ যাদবের মত আন্তর্জাতিক অভিজ্ঞতাসম্পন্ন বোলাররা ছিলেন ভারত-এ দলে। কেউই টলাতে পারেন নি মুশির’কে (Musheer Khan)। পড়ন্ত বেলায় চিন্নাস্বামী দেখলো শতরানের মাইলস্টোন পেরিয়ে মুশিরের উচ্ছ্বাস। দিনের শেষে তিনি অপরাজিত ১০৫ রানে। অপরদিনে অদম্য নভদীপ সাইনি’ও। অপরাজিত রইলেন ২৯ রানে। তাঁদের ১০৮ রানের অবিচ্ছেদ্য জুটির সৌজন্যে দলীপ ট্রফির (Duleep Trophy) ম্যাচের প্রথম দিনের শেষে ভারত-বি’র স্কোরবর্ডে ৭ উইকেটের বিনিময়ে ২০২ রান।
দেখুন মুশিরের শতক উদ্যাপন-
Musheer Khan brings up his 💯 🙌
A special celebration and a special appreciation from brother Sarfaraz Khan 👏#DuleepTrophy | @IDFCFIRSTBank
Follow the match ▶️ https://t.co/eQyu38Erb1 pic.twitter.com/92lj578cAs
— BCCI Domestic (@BCCIdomestic) September 5, 2024
অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপে রেখেছেন প্রতিভার স্বাক্ষর-
মুম্বইয়ের মুশির খান (Musheer Khan) এই বছরই অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপে প্রতিনিধিত্ব করেছেন ভারতীয় দলের। ফাইনালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে হারতে হলেও গোটা টুর্নামেন্টে অনবদ্য পারফর্ম্যান্স করেছেন তরুণ অলরাউন্ডার। ৭ ম্যাচে তাঁর ব্যাট থেকে এসেছে ৩৬০ রান। দক্ষিণ আফ্রিকার মাটিতে বাম হাতি স্পিনের জাদুতে তুলে নিয়েছিলেন ৭টি উইকেট’ও। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ১৩টি চার ও ৩টি ছক্কার সাহায্যে ১২৬ বলে ১৩১ রানের অনবদ্য শতরান করেছিলেন তিনি। ঐ ম্যাচে ১০ রানের বিনিময়ে ২টি উইকেট’ও নিয়েছিলেন তিনি। তার আগে আয়ারল্যান্ডের বিরুদ্ধেও একটি ১১৮ রানের অসামান্য ইনিংস খেলেছিলেন তিনি। শিখর ধাওয়ানের পর একমাত্র ভারতীয় ক্রিকেটার হিসেবে অনুর্দ্ধ-১৯ বিশ্বকাপের এক সংস্করণে একাধিক শতরানের নজির গড়েন মুশির। রঞ্জি ফাইনালেও শতরান করে ম্যাচের সেরা হয়েছেন তিনি।
শীঘ্রই পেতে পারেন জাতীয় দলের ডাক-
ভারতীয় দলের ক্রিকেটার সরফরাজ খানের (Sarfaraz Khan) ভাই মুশির। দীর্ঘ অপেক্ষার পর গত ফেব্রুয়ারিতেই টিম ইন্ডিয়ার হয়ে অভিষেক হয়েছে সরফরাজের। ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে তিনটি টেস্ট খেলেছেন তিনি। ৩টি অর্ধশতক-সহ করেছেন ২০০ রান। আজ ভারত-এ বনাম ভারত-বি ম্যাচে মাঠে নেমেছিলেন সরফরাজ’ও। ব্যাট হাতে বিশেষ সফল হন নি তিনি। ৩৫ বল খেলে মাত্র ৯ রান করেই তিনি ফিরেছেন সাজঘরে। আবেশ খানের বলে এলবিডব্লু হয়েছেন তিনি।
এর আগে বুচিবাবু টুর্নামেন্টে মুম্বইয়ের অধিনায়কত্ব করলেও রান পান নি সরফরাজ খান (Sarfaraz Khan)। দলীপ ট্রফির (Duleep Trophy) প্রথম রাউন্ডের ম্যাচের পরেই ভারত বনাম বাংলাদেশ সিরিজের জন্য দল বেছে নেবে অজিত আগরকারের নেতৃত্বাধীন নির্বাচক কমিটি। অফ ফর্মের কবলে পড়া সরফরাজকে স্কোয়াড থেকে ছেঁটে ফেলা হলে অবাক হওয়ার কিছু থাকবে না। তাঁর বদলি হিসেবে স্কোয়াডে জায়গা করে নিতে পারেন তরুণ মুশির খান (Musheer Khan)। এর আগে ১৯৮৯-৯০ মরসুমের রঞ্জি ফাইনালে দাদা স্নেহাশীষ গঙ্গোপাধ্যায়ের বদলে জায়গা করে নিয়েছিলেন সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও দেখা যেতে পারে সেই চিত্রই।