হীরে চিনতে ভুল করেছিলেন MS ধোনি, দলীপ ট্রফিতে যোগ্য জবাব দিলেন তরুণ ক্রিকেটার !! 1

অধিনায়কত্বের ধার যে এখনও বিন্দুমাত্র কমে নি তা ২০২৩ সালের আইপিএলে প্রমাণ করে দিয়েছেন মহেন্দ্র সিং ধোনি (MS Dhoni)। চেন্নাই সুপার কিংসকে উপহার দিয়েছেন পঞ্চম খেতাব। পাঁচবার আইপিএল জিতে রোহিত শর্মার পাশে জায়গা করে নিয়েছেন সফলতম অধিনায়ক হিসেবে। একচল্লিশ বছর বয়সেও তাঁর মগজাস্ত্রের ধাক্কায় কুপোকাত হতে দেখা গিয়েছে প্রতিপক্ষ দলকে। প্রায় দুই দশক বিস্তৃত কেরিয়ারে বহু স্মরণীয় মুহূর্ত দেশের ক্রিকেটকে দিয়েছেন ধোনি। তাঁর হাত ধরেই ২০০৭ সালে এসেছিলো প্রথম টি-২০ বিশ্বকাপ। দীর্ঘ ২৮ বছরের অপেক্ষা শেষে ২০১১ সালে একদিনের বিশ্বকাপ জয়েরও অন্যতম প্রধান কারিগর তিনিই। কুলশেখরাকে মিড উইকেটের উপর দিকে ছক্কা হাঁকিয়ে ট্রফির গায়ে ভারতের নাম লিখে দিয়েছিলেন ধোনি।

এছাড়াও ২০১৩ সালে চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি জিতে একমাত্র অধিনায়ক হিসেবে আইসিসি আয়োজিত তিনটি সীমিত ওভারের প্রতিযোগিতা জয়ের কৃতিত্বও অর্জন করেন তিনিই। অধিনায়ক হিসেবে ধোনিকে বরাবরই সাফল্য এনে দিয়েছে তাঁর জহুরীর চোখ। রবীন্দ্র জাদেজা, সুরেশ রায়নাদের ভারতীয় দলে নিয়মিত সুযোগ দেওয়া থেকে রোহিত শর্মাকে মিডল অর্ডার থেকে ওপেনিং-এ তুলে আনা-তাঁর একের পর এক সিদ্ধান্তে উপকৃত হয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট। তবে মানুষমাত্রেই ভুল হয়। ধোনিও ব্যতিক্রম নন। সেইরকম এক ভুলের সন্ধান দিলো ২০২৩ সালের দলীপ ট্রফি। নিশান্ত সিন্ধু দুরন্ত ব্যাটিং করে প্রশ্নের মুখে ফেললেন মহেন্দ্র সিং ধোনির সিদ্ধান্তকে।

Read More: World Cup 2023: পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের এই বড় শর্ত মানতে হল আইসিসি’কে, এবার ভারতের হল বড় ক্ষতি !!

চেন্নাই দলে সুযোগ না এলেও,দলীপে সফল নিশান্ত-

Nishant Sindhu | MS Dhoni | Image: Getty Images
Nishant Sindhu | Image: Getty Images

হরিয়ানার নিশান্ত সিন্ধুর বয়স মাত্র ১৯ বছর। এই বছর খেতাবজয়ী চেন্নাই সুপার কিংস দলে ছিলেন তিনি। শ্রীলঙ্কার পথিরানা, ভারতের তুষার দেশপান্ডেদের মত তরুণ ক্রিকেটারদের প্রথম একাদশে জায়গা দিলেও নিশান্তকে এই মরসুমে একটি ম্যাচেও ব্যাট হাতে নামার সুযোগ দেন নি অধিনায়ক ধোনি বা কোচ স্টিফেন ফ্লেমিং। তাঁদের সেই সিদ্ধান্ত যে ত্রুটিপূর্ণ ছিলো তা চোখে আঙুল দিয়ে দলীপ ট্রফির ম্যাচে দেখিয়ে দিলেন নিশান্ত। বেঙ্গালুরুর চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে নর্থ-ইস্ট জোনের বিরুদ্ধে উত্তরাঞ্চল বা নর্থ-জোনের জার্সিতে জ্বলে উঠলেন তিনি। নর্থ-ইস্ট গতকাল শুরুটা বেশ ভালোই করেছিলো দিল্লীর ধ্রুব শোরের সৌজন্যে। ভালো ফর্মে রয়েছেন শোরে। গত মরসুমে রঞ্জি ট্রফিতে চতুর্থ সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক হয়েছেন। ৯৫.৪৪ গড়ে করেছিলেন ৮৫৯ রান। সেই ফর্ম দলীপ ট্রফির ম্যাচেও ধরে রাখতে দেখা গেলো শোরেকে। ওপেন করতে নেমে ২১১ বলে ১৩২ রানের ইনিংস খেলেন তিনি।

ধ্রুব শোরের পাশাপাশি লাইমলাইট কেড়ে নিয়ে গেলেন বছর উনিশের নিশান্ত সিন্ধুই। গতকাল দিনের শেষে উত্তরাঞ্চলের স্কোর ছিলো ৬ উইকেটের বিনিময়ে ৩০৬। ৭৬ রান করে অপরাজিত ছিলেন নিশান্ত। দ্বিতীয় দিনেও তাঁর ব্যাটে দেখা গেলো রানের রংমশাল। ১৫০ রানের ইনিংস খেলে থামলেন চিন্নাস্বামীতে। ২৪৫ বলের ইনিংসটি নিশান্ত সাজিয়েছেন ১৮টি চার এবং ৩টি ছক্কার সাহায্যে। গতকাল টসে জিতে বোলিং বেছে নিয়েছিলো নর্থ-ইস্ট জোন। তাদের তিন পেসার ফেইরোইজাম যতীন, পালজোর তামাং এবং দীপু সাংমা নজর কেড়েছিলেন শুরুর ওভারগুলোইয়। তবে দ্বিতীয় দিনে বেশ নিষ্প্রভ দেখিয়েছে তাদের। প্রতিবেদন লেখার সময় অবধি উত্তরাঞ্চলের স্কোর ৮ উইকেটের বিনিময়ে ৫২৪। ১০৬ রান করে ক্রিজে রয়েছেন কলকাতা নাইট রাইডার্স তারকা হর্ষিত রানা। অপরপ্রান্তে রয়েছেন সিদ্ধার্থ কৌল। নর্থ ইস্টের হয়ে যতীন, ইমলিওয়াতি লেমটুর এবং এল কিষণ সিঙ্ঘা ২টি করে উইকেট নিয়েছেন। পালজোর তামাং এবং দীপু সাংমা পেয়েছেন একটি করে উইকেট।

খারাপ আলোয় ম্যাচ শেষ হয় জলদি-

East Zone vs Central Zone | MS Dhoni | Image: Twitter
East Zone vs Central Zone | Image: Twitter

গতকাল খারাপ আলোর জন্য ম্যাচ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ করতে হয়েছিলো। দ্বিতীয় দিন সকালে ফের নর্থ-ইস্টের উপর চাপ বাড়াচ্ছে উত্তরাঞ্চল। দলীপ ট্রফির দ্বিতীয় ম্যাচে আলুরের মাঠে মুখোমুখি হয়েছে সেন্ট্রাল জোন এবং ইস্ট জোন। এই খেলায় দুই দলেই রয়েছে তারকার ছড়াছড়ি। আইপিএল মাতিয়ে জাতীয় দলে প্রবেশের দরজায় কড়া নাড়ছেন রিঙ্কু সিং। তিনি খেলছেন মধ্যাঞ্চলের হয়ে। এছাড়াও অভিমণ্যু ঈশ্বরণ, শাহবাজ নাদিম, উপেন্দ্র যাদব, শাহবাজ আহমেদ, আবেশ খান, শিভম মাভিদের মত বড় নামের সমাহার দেখা যাচ্ছে আলুরের মাঠে।

এই ম্যাচে অবশ্য এখনও অবধি চালকের আসনে রয়েছে মধ্যাঞ্চলই। প্রথম ইনিংসে ১৮৯ রানে আটকে গিয়েছিলো তারা। সর্বোচ্চ ৩৮ রানের ইনিংস খেলেন রিঙ্কু সিং। বল হাতে পুর্বাঞ্চলের হয়ে মণিশংকর মুড়াসিং ৫ উইকেট নেন। ২ উইকেট পান বাংলার শাহবাজ আহমেদ। জবাবে ব্যাট করতে নেমে বিপর্যয়ের মুখে পড়ে ইস্ট জোন। অধিনায়ক অভিমণ্যু ঈশ্বরণ আউট হন শূন্য রান করে। ১২২ রানে শেষ হয়ে যায় পূর্বাঞ্চলের ইনিংস। রিয়ান পরাগের ৩৩ এবং মণিশংকর মুড়াসিং-এর ৩০ ছাড়া উল্লেখযোগ্য রান পান নি কেউই। ৬৭ রানের লিড নিয়ে খেলতে নেমে দ্বিতীয় ইনিংসে প্রতিবেদন লেখা অবধি মধ্যাঞ্চলের স্কোর বিনা উইকেটে ২৯।

Also Read: World Cup 2023: শিয়রে বিশ্বকাপ, নতুন সাজে সেজে উঠছে ভারতের এই ‘আইকনিক’ স্টেডিয়াম !!

Leave a comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *