২০২৪ সালের ওডিআই বিশ্বকাপে ঝড় তুলেছিলেন মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। ডান হাতি পেসার প্রথম চারটি ম্যাচে মাঠে নামারই সুযোগ পান নি। টিম কম্বিনেশনের কথা ভেবে তাঁকে রিজার্ভ বেঞ্চে রাখতে বাধ্য হয়েছিলেন কোচ রাহুল দ্রাবিড়। পুণেতে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে হার্দিক পান্ডিয়া চোট পাওয়ায় শিকে ছেঁড়ে শামি’র ভাগ্যে। এরপর আর পিছন ফিরে তাকাতে হয় নি তাঁকে। প্রথম সুযোগেই নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে পাঁচ উইকেট নিয়েছিলেন ধর্মশালার মাঠে। এরপর শ্রীলঙ্কা, ইংল্যান্ডের মত প্রতিপক্ষকে বোলিং-এর জাদুতে ছিন্নভিন্ন করেছেন তিনি। সেমিফাইনালে ৭ উইকেট নিয়েছেন নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধেই। ১০.৭০ গড়ে ৭ ম্যাচে ২৪ উইকেট তুলে নিয়ে টুর্নামেন্টের সফলতম বোলার হয়েছিলেন শামি (Mohammed Shami)। কিন্তু বল হাতে দুরন্ত পারফর্ম করলেও টানা ম্যাচ খেলার ধকল নিতে পারে নি তাঁর শরীর। গোড়ালির চোটে এরপর ছিটকে যেতে হয় তাঁকে।
Read More: চুপসে গিয়েছে প্রত্যাশার ফানুস, পিঠ বাঁচাতে কোচ গম্ভীরকে ছাঁটাই করবে বিসিসিআই !!
এক বছর মাঠের বাইরে রয়েছেন শামি-
গোড়ালিতে পুরনো চোট ছিলো মহম্মদ শামি’র (Mohammed Shami)। বিশ্বকাপে (ICC World Cup) খেলেছিলেন নিয়মিত ইঞ্জেকশন নিয়ে। কিন্তু টুর্নামেন্ট মেটার পর চিকিৎসকেরা ক্রিকেট থেকে বিরতি নেওয়ার পরামর্শ দেন তাঁকে। লন্ডনে অস্ত্রোপচারও করাতে হয় ভারতীয় দলের তারকা পেসারকে। তারপর থেকেই মাঠের বাইরে রয়েছেন তিনি। দক্ষিণ আফ্রিকা বা ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে টেস্ট খেলতে পারেন নি। সম্পূর্ণ আইপিএল মাঠের বাইরে বসে কেটেছে তাঁর। শামি’কে (Mohammed Shami) ২০২৪-এর টি-২০ বিশ্বকাপেও পায় নি টিম ইন্ডিয়া (Team India)। অস্ত্রোপচারের মাসকয়েক পর থেকে বেঙ্গালুরুর ন্যাশনাল ক্রিকেট অ্যাকাডেমির তত্ত্বাবধানে রিহ্যাব শুরু করেছিলেন তিনি। মুখ্য নির্বাচক অজিত আগরকার সেপ্টেম্বরের বাংলাদেশ সিরিজে শামি’র প্রত্যাবর্তনের ডেডলাইন বেঁধে দিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু সম্পূর্ণ ফিট না থাকায় মাঠে ফেরা হয় নি তাঁর।
সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর মিলেছিলো যে হাঁটু ফুলে উঠেছে তাঁর। ফলে আরও কয়েক দিনের জন্য পিছিয়ে দিতে হয়েছিলো শামি’র (Mohammed Shami) প্রত্যাবর্তন। নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে এই মুহূর্তে টেস্ট সিরিজ খেলছে ‘মেন ইন ব্লু’। সেখানেও ডান হাতি পেসারকে খেলানোর ঝুঁকি নেন নি নির্বাচকেরা। তাঁকে আরও কিছুদিন অপেক্ষা করানোর সিদ্ধান্তই নেওয়া হয়েছে। তবে আগের থেকে শামি যে এখন অনেকটাই সুস্থ তাঁর প্রমাণ মিলেছে বেঙ্গালুরুতে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ভারতীয় দলের টেস্ট ম্যাচ চলাকালীন। নেটে বোলিং করতে দেখা গিয়েছিলো তারকা পেসারকে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্যাট হাতে ছিলেন দলের নবনিযুক্ত সহকারী কোচ অভিষেক নায়ার (Abhishek Nayar)। আসন্ন অস্ট্রেলিয়া সিরিজে দেশের অন্যতম সেরা পেস অস্ত্রকে চায় টিম ম্যানেজমেন্ট। শুরু হয়েছে তাঁকে মাঠে ফেরানোর পরিকল্পনা।
ঘরোয়া ক্রিকেটে ফিরছেন মহম্মদ শামি-
বাংলাদেশ ও নিউজিল্যান্ড সিরিজে শামি’কে (Mohammed Shami) পায় নি ভারতীয় দল। তবে বর্ডার-গাওস্কর ট্রফিতে যাতে ডান হাতি পেসারকে দেখা যায় তা নিশ্চিত করতে আপাতত মরিয়া বিসিসিআই। ২২ নভেম্বর থেকে ব্যাগি গ্রিনের বিরুদ্ধে সিরিজ শুরু হচ্ছে টিম ইন্ডিয়া’র (Team India)। এক বছর কোনো প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ খেলেন নি শামি। অজি পরীক্ষায় নামার আগে তাঁকে খানিক সড়গড় হয়ে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছেন জয় শাহ (Jay Shah), রজার বিনি’রা। সংবাদমাধ্যম এক্সপ্রেস স্পোর্টসে প্রকাশিত রিপোর্টে দাবী করা হয়েছে যে ঘরোয়া ক্রিকেট দিয়ে বাইশ গজের দুনিয়ায় প্রত্যাবর্তনের পরিকল্পনা রয়েছে পেস তারকার। উত্তরপ্রদেশের শামি ঘরোয়া ক্রিকেটে প্রতিনিধিত্ব করেন বাংলার। সব কিছু ঠিকঠাক থাকলে অস্ট্রেলিয়া উড়ে যাওয়ার আগে বাংলার হয়ে দুটি রঞ্জি ট্রফির ম্যাচ খেলবেন শামি (Mohammed Shami)।
২০১৮ সালের ডিসেম্বর মাসে কলকাতার ইডেন গার্ডেন্সে শেষবার রঞ্জি ট্রফিতে (Ranji Trophy) মাঠে নেমেছিলেন মহম্মদ শামি (Mohammed Shami)। প্রতিপক্ষ ছিলো কেরল। প্রায় ছয় বছরের বিরতির পর ফের রঞ্জির মঞ্চে লাল বল হাতে দেখা যাবে তাঁকে। ইতিমধ্যে চলতি রঞ্জি মরসুমে উত্তরপ্রদেশের বিরুদ্ধে খেলেছে বাংলা। কল্যানীতে অভিমন্যু ঈশ্বরণদের (Abhimanyu Easwaran) দ্বিতীয় ম্যাচ ছিলো বিহারের বিরুদ্ধে। কিন্তু আউটফিল্ডের সমস্যায় সেটি পরিত্যক্ত হয়। তৃতীয় ম্যাচটিতে প্রতিপক্ষ কেরল। সেখানে শামির (Mohammed Shami) খেলার সম্ভাবনা নেই বলে জানিয়েছেন কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্ল। তিনি ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস’কে সাক্ষাৎকারে বলেছেন, “ও এই ম্যাচে (কেরলের বিরুদ্ধে) উপলব্ধ নয়। তবে আমরা আশা করছি শামি’কে আগামী মধ্যপ্রদেশ এবং কর্ণাটক ম্যাচে পাওয়া যাবে।” মাঠে নামতে শামি যে মুখিয়ে রয়েছেন তাও স্পষ্ট করেছেন তিনি।